বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দল

মোহামেডান-শেখ জামালে চাপা ক্ষোভ

লিগে মোহামেডান ভালো খেললেও জাতীয় দলে বিবেচনায় আসেননি ক্লাবটির কোনো খেলোয়াড়। প্রথম আলো ফাইল ছবি
লিগে মোহামেডান ভালো খেললেও জাতীয় দলে বিবেচনায় আসেননি ক্লাবটির কোনো খেলোয়াড়। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>

২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর মোহামেডানের আর কোনো খেলোয়াড় জাতীয় দলে ডাক পায়নি। 

'মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ চারে আছে। দলটির কোনো খেলোয়াড় জাতীয় দলে ডাক পায়নি। আমি জানি না কেন।'

মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডে খেলেন মালির স্ট্রাইকার সুলেমান ডায়াবাতে। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে নিজের ক্লাবের কোনো খেলোয়াড়ের নাম না দেখে ফেসবুকে এভাবেই নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন সুলেমান। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের জন্য রবিবার ঘোষিত ৩৬ সদস্যের দলে মোহামেডানের কোনো ফুটবলার নেই কেন? ডায়াবাতের মতো এ প্রশ্নটি তুলেছেন মোহামেডানের অস্ট্রেলিয়ান কোচ সিন লেন।

বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে মোহামেডান। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পরেছে জাতীয় দলের খেলোয়াড় তালিকাতেও। ২০১৮ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পাননি মোহামেডানের কোনো খেলোয়াড়। কেন ডাক পেল না, মাঠে সাদা-কালোদের হতশ্রী পারফরমেন্সের পর এ প্রশ্ন কেউ তোলেনি।

কিন্তু শেষ বাতিল হওয়া লিগে ঐতিহ্যবাহী দলটি বেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। লিগ বাতিল হওয়ার আগে ৬ ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে ছিল মোহামেডান। তাদের সমান ম্যাচ খেলে শীর্ষস্থানীয় আবাহনী লিমিটেডের পয়েন্ট ১৩। অনেকে আশা করেছিলেন এবার জাতীয় দলে থাকবে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির খেলোয়াড়ের নাম। কিন্তু ৩৬ সদস্যের প্রাথমিক বড় দলেও জায়গা হয়নি মোহামেডানের কোনো খেলোয়াড়ের। তাতেই বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।

বিষয়টি নিয়ে খুবই হতাশ মোহামেডানের কোচ শিন লেন। তবে পেশাদার কোচের মতোই জবাব দিলেন তিনি, 'অবশ্যই আমি হতাশ। ভেবেছিলাম অন্তত একজন বা দুজন খেলোয়াড় জাতীয় দলে ডাক পাবে। তবে সুযোগ না পাওয়ায় কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না। আমার খেলোয়াড়দের হয়তো ধারাবাহিকতার অভাব ছিল।'

মোহামেডানের মতো শেখ জামালের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিকও হতাশ। বাতিল হওয়া লিগে সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স ছিল শেখ জামালের। পাঁচ ম্যাচেই তাদের পয়েন্ট ১২। যেখানে ৬ ম্যাচ খেলে শীর্ষে থাকা আবাহনীর ১৩, সমানসংখ্যক ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় চট্টগ্রাম আবাহনীরও সংগ্রহও ১৩ পয়েন্ট। শেখ জামাল সেখানে এক ম্যাচ কম খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে।

যদিও লিগে এক চতুর্থাংশ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলের হিসেব খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু ৫ থেকে ৬ ম্যাচের পর পারফরম্যান্সের সঠিক মূল্যায়ন না হওয়াও ভালো কিছু নয় বলে মনে করেন অনেকে। তাই নিজের দল থেকে একজন খেলোয়াড়ের নামও জাতীয় দলে না দেখে হতাশা লুকাতে পারেননি অভিজ্ঞ কোচ মানিক, ' আমি জানি না কে বা কারা কীভাবে জাতীয় দল গঠন করেছে। আমি মনে করি পারফরম্যান্সের সঠিক মূল্যায়ন হলে শেখ জামাল থেকে কয়েকজন খেলোয়াড়ের দলে থাকা উচিত ছিল। আমার দলের স্থানীয় খেলোয়াড়েরা যদি ভালোই না খেলে ৫ ম্যাচ খেলে কীভাবে ৪টি জিতলাম।'

জাতীয় দলে মোহামেডান ও শেখ জামালের খেলোয়াড় না থাকার ব্যাখ্যা দিয়েছেন জেমি ডে। জাতীয় দলের এ কোচের ভাষ্য, 'এবার বিভিন্ন ভেন্যুতে গিয়ে আমি খেলা দেখে দল গঠন করেছি। জাতীয় দলে আসার মতো এমন কোনো খেলোয়াড়কে আমি বাইরে রাখিনি। মোহামেডানের সোহাগ ও সিফাতের খেলা পছন্দ হয়েছে। ওদের ব্যাপারে মোহামেডান কোচের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে আলোচনাও করেছি। কিন্তু যাদের দলে নেওয়া হয়েছে তারা আরও ভালো খেলোয়াড়।'