সময়টা ভালো যাচ্ছে না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ সেরা হলেও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ চারের বাইরে আছে ক্লাবটি। টানা ব্যর্থতার দায় নিয়ে কোচের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে উলে গুনার সুলশারকে। নতুন কোচ রালফ রাংনিকের অধীনে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় ইংলিশ পরাশক্তি।
এ মৌসুমেই ক্লাবে ফিরেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। যোগ দিয়েছেন রোনালদোর মতোই রিয়াল মাদ্রিদে চার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাফায়েল ভারান। রাংনিকের অধীনে সাঞ্চোর মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের পরিস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন অনেকেই। আর এমন অবস্থায় কিনা রোনালদোদের খোঁচা খেতে হলো। আরলিং হরলান্ডকে পাওয়ার মতো যোগ্য ক্লাবই নাকি নয় ইউনাইটেড!
স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন বিদায় নেওয়ার পর থেকেই ধুঁকছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ডেভিড ময়েস, লুইস ফন গাল হয়ে জোসে মরিনিও দায়িত্ব পেয়েছিলেন ইউনাইটেডের। মরিনিওকে ছাঁটাই করার পর ক্লাব কিংবদন্তি সুলশারের কাছে ইউনাইটেডের দায়িত্ব ছিল গত তিন বছর। সুলশারের অধীনে শুরুতে আশা দেখা ইউনাইটেড এই তিন বছরে কোনো শিরোপার দেখা পায়নি। যেকোনো পর্যায়ের টুর্নামেন্টেই ইউনাইটেডের সর্বশেষ সাফল্য ২০১৭। মরিনিওর এনে দেওয়া তিন ট্রফির পর আর কোনো শিরোপার স্বাদ পায়নি দলটি।
নতুন করে ইউনাইটেডকে এই হতাশার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মিনো রাইওলা। ইউরোপিয়ান ফুটবলের এই সুপার এজেন্ট পল পগবাকে ইউনাইটেডে নিয়ে গেছেন। পগবার সঙ্গে তাঁর ক্লাবের দ্বন্দ্বের ছাপ তাঁর ইদানীংকালের সাক্ষাৎকারে ভালোই টের পাওয়া যায়। ইউনাইটেডে চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে গেছে পগবার। এই মিডফিল্ডারকে আবার অন্য কোনো বড় দলে নিতে চাইছেন রাইওলা।
তবে রাইওলা ইদানীং বেশি ব্যস্ত আরলিং হরলান্ডকে নিয়ে। স্ট্রাইকারের আকালে এই গোলমেশিনকে পেতে আগ্রহী অনেক ক্লাব। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে এরই মাঝে বড় দলগুলোতে এক পাক ঘুরে এসেছেন রাইওলা ও হরলান্ডের বাবা। এ মৌসুমের পর বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে হরলান্ডকে আর না দেখার সম্ভাবনা বেশি। জার্মান সংবাদমাধ্যম স্পোর্ট ওয়ানের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘হয়তো এই গ্রীষ্মে হবে, অথবা আগামী গ্রীষ্মে। তবে আরলিংয়ের এই গ্রীষ্মে দলবদল করার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
কোন ক্লাবে যাবেন হরলান্ড। ইউরোপের অনেক ক্লাবেরই যে তাঁর মতো একজন স্ট্রাইকার খুব দরকার। বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার কাছের মানুষজন তো হরলান্ড বার্সেলোনায় যাচ্ছেন, এমন হুংকার এই মৌসুমের শুরুতেই শুনিয়েছিলেন। রিয়াল মাদ্রিদও একজন গোলশিকারি খুঁজছে। ম্যানচেস্টার সিটি এই মৌসুমে হ্যারি কেইনকে জোর চেষ্টাতেও কিনতে পারেনি। সত্যিকারের একজন স্ট্রাইকারের অভাব মাঝেমাঝেই টের পাচ্ছে তারা।
বায়ার্ন মিউনিখে রবার্ট লেভানডফস্কি আছেন। কিন্তু ডর্টমুন্ডের সেরা খেলোয়াড়কে টেনে নেওয়ার অভ্যাস তো তাদের নতুন নয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আপাতত রোনালদোকে দলে টেনেছে। কিন্তু ৩৭ ছুঁতে যাওয়া রোনালদোকে নিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা যায় না। চেলসিও লুকাকু-হরলান্ড জুটি গড়ার স্বপ্নে বিভোর।
কিন্তু চেলসি ও ইউনাইটেডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন রাইওলা। আর সেটা করতে গিয়ে ইউনাইটেডকে খোঁচা মেরে বসেছেন, ‘হরলান্ড এখন পরের ধাপে পা রাখতে পারে এবং সেটা রাখবে। বায়ার্ন, রিয়াল, বার্সেলোনা, সিটি-এই বড় ক্লাবগুলোতে সে যেতে পারে। সিটি গত কয়েক বছরে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ইউনাইটেডের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। আমরা যখন ডর্টমুন্ডে যোগ দিয়েছি, তখনই জানতাম পরের ধাপে পা দেওয়ার দিন আসবে।’
হরলান্ড কোথায় যাবেন, সেটা না হয় জুলাই-আগস্টে জানা যাবে। কিন্তু নিজের খেলোয়াড় আছেন, এমন এক ক্লাবকে খোঁচা দিয়ে পগবার ভবিষ্যৎ নিয়েও কি ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন রাইওলা!