Thank you for trying Sticky AMP!!

৭৪ বছরে ফুটবল খেলে রেকর্ড মিসরীয়র

ফুটবল মাঠে এজেলদিন বাহাদের।

সন্তান আছেন চারজন। ছয়জন নাতিও আছে। এইটুকু শুনে নিশ্চয় মনে হওয়ার কথা থুড়থুড়ে এক বুড়োর কথা। বয়সের সংখ্যায় তিনি বুড়োই। তবে মনের জোর পাহাড় ডিঙানোর মতো। না হলে কি আর ৭৪ বছর বয়সে এসে পেশাদার ফুটবলে খেলা যায়। এই বয়সে মাঠে নেমে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী ফুটবলার হিসেবে পেশাদার ফুটবলে খেলার রেকর্ডও গড়েছেন মিসরের এজেলদিন বাহাদের। গিনিজ বুকে নাম লেখানো বাহাদের আগামী মাসের ৬ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে পা রাখবেন।

৬ অক্টোবর এল আয়াত ক্লাবের জার্সিতে মিসরের তৃতীয় বিভাগে মাঠে নেমে রেকর্ডটি করেছেন ৭৪ বছর বয়সী বাহাদের। এত দিন সবচেয়ে বয়সী ফুটবলার হিসেবে পেশাদার লিগে খেলার রেকর্ডটি ছিল ইসরায়েলের আইজ্যাক হাইকের। গত বছর এপ্রিলেই ৭৩ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবল খেলে এ রেকর্ডটা করেছিলেন ইরানি বংশোদ্ভূত এই ইসরায়েলি। ইসরায়েলের ইরানি অর ইয়েহুদা ক্লাবের হয়ে পেশাদার ম্যাচে খেলেছিলেন ৯০ মিনিট।

আইজ্যাক পেছনে ফেলতে অসাধ্যসাধন করতে হয়েছে বাহাদেরকে। তাঁকে এক অসাধারণ জীবন শক্তির মানুষ বলা যায়। ৭৪ বছর বয়সে এসেও পেশাদার ফুটবলে খেলে রেকর্ডটা গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। মার্চেই হতে পারত তাঁর এই বিরল রেকর্ডটি। কিন্তু করোনার কারণে খেলা স্থগিত হওয়ায় বাহাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় সাত মাস। রেকর্ডের শর্ত খেলতে হবে টানা দুইটি ম্যাচ। মার্চে খেলা প্রথম ১-১ গোলে ড্র ম্যাচে গোলও করেছিলেন। কিন্তু সেই ম্যাচ খেলার পর করোনা শুরু হলে বাহাদেরকে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার জন্য অপেক্ষা করতে হলো প্রায় সাত মাস। অবশেষে ৬ অক্টোবর পূরণ হলো তাঁর সেই স্বপ্ন। তাঁর দল ৩-২ গোলে হারের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছেন। তবে মাঠে সন্তান ও নাতিদের নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে খেলেছেন বাহাদের।

অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন বাহাদের। রেকর্ড গড়ার পর যা বলেছিলেন, তাতেই বোঝা যায় তাঁর দৃঢ়তা, ‘স্বীকৃতি ম্যাচে গোল করে সবচেয়ে বয়স্ক পেশাদার ফুটবলার হয়েছিলাম। সে ম্যাচের শেষ মিনিটে মাঠে নেমে মনে হয়েছিল অর্জনটা ঠিকঠাক হলো না। আমার চোট ছিল। আশাবাদী ছিলাম পরবর্তী ম্যাচে ৯০ মিনিট খেলব।’

এজেলদিন বাহাদের।

রেকর্ডটি করেও থামতে চান না বাহাদের। তাঁর এই রেকর্ডটি যেন পরে অন্য কারও ভাঙতে কষ্ট হয়, সে জন্য খেলতে চান আরও ম্যাচ, ‘আমি আরও একবার নিজের রেকর্ডটি ভাঙার স্বপ্ন দেখি। যেন এটি (নতুন কারও রেকর্ড গড়া) কঠিন হয়।’
সেই ছোটবেলাতেই ফুটবলে হাতেখড়ি বাহাদেরের। একটা সময় প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল পেশাদার ফুটবলার হওয়ার। কিন্তু পড়াশোনা আর জীবিকার তাগিদই তাঁর মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়। প্রকৌশলবিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করে পাড়ি দেন কুয়েতে। সেখানে কাটিয়েছেন ১৫ বছর। তবে ফুটবলটা কখনোই ছাড়েননি। শখের খেলাটা খেলে গেছেন, এখনো খেলছেন।