
নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে ফুটবলের পথে যাত্রা শুরু করেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার খেলোয়াড় তৈরির ‘আঁতুড়ঘর’ লা মাসিয়ায় যোগ দেওয়ার আগে ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত নিওয়েল’সে–ই ছিলেন মেসি। এরপর দুই দশকের রোমাঞ্চকর অভিযানের মধ্য দিয়ে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। মেসির হাত ধরেই ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা।
সাফল্যের বৃত্তপূরণ করা মেসিকে নিয়ে দারুণ গর্বিত তাঁর শৈশবের ক্লাব নিওয়েল’স। সম্প্রতি মেসির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজেদের স্টেডিয়ামের নতুন একটি স্ট্যান্ডের নাম তাঁর নামে করার ঘোষণা দেয় ক্লাবটি। কিন্তু নিওয়েল’স কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি ক্লাবটিরই এক কিংবদন্তি ফুটবলার।
হুয়ান মানুয়াল লিয়োপ নামের সাবেক এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার ১৯৮১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত নিওয়েল’সে ছিলেন। লিয়োপ নিওয়েল’সে থাকাকালীন (১৯৮৭–১৯৯২) নিজেদের সোনালি সময় পার করেছে মেসির জন্মভূমি রোজারিওর এই ক্লাব। সে সময়ে আর্জেন্টাইন শীর্ষ লিগে ৩টি শিরোপাও জিতেছিল তারা। ক্লাবকে এমন সাফল্য এনে দেওয়া লিয়োপ মেসির নামে স্ট্যান্ড করার বিষয়টি যেন মানতেই পারছেন না।
আর্জেন্টিনার রেডিও ২-এর ‘জ্যাপিং স্পোর্ট’ অনুষ্ঠানে লিয়োপ বলেছেন, ‘সারা পৃথিবী এখন বিপণনের সঙ্গে চলে। মেসিকে নিয়ে আমরা বিতর্ক করব কেন? ও তো বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। আমার প্রশ্ন হলো, মেসি নিউওয়েলসের জন্য কী করেছে?’
স্ট্যান্ডের নাম রাখার ভিত্তি কী হবে, সেটা ব্যাখ্যা করে লিয়োপ আরও যোগ করেন, ‘আমার মতে, যাঁরা কোনো জায়গায় ইতিহাস গড়েন, তাঁদের সেই সম্মান পাওয়ার একটা কারণ থাকে। আমি চাই না ওখানে একটা গাছ পর্যন্ত বসানো হোক। নিউওয়েলসের ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ আছেন, যাঁরা অনেক কিছু করেছেন, বহুবার দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন (তাঁদের নামা রাখা হোক)। আমি এই সিদ্ধান্তের (মেসির নামে রাখার) সঙ্গে একমত নই।’
লিয়োপের দাবি নিওয়েল’সে এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের অবদান মেসির চেয়ে বেশি, ‘এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা নিওয়েল’সের জন্য জীবন দিয়েছেন। যেমন মাঠকর্মী, যিনি অনেক বছর ধরে এখানে আছেন, আর এখন তাঁর ছেলেও একই কাজ করছে। আমি বলছি না তিনিও একটা গ্যালারি পাওয়ার যোগ্য, কিন্তু অন্তত যেই দরজা দিয়ে তাঁরা স্টেডিয়ামে ঢোকেন, সেটার নাম তো হতে পারত। এ ধরনের মানুষদেরই ক্লাবের প্রতি সত্যিকারের মমত্ববোধ থাকে এবং তাঁরাই প্রতিষ্ঠানটির জন্য কিছু করে গেছেন।’
একইভাবে নিওয়েলসের হয়ে পাঁচ ম্যাচ খেলা ডিয়েগো ম্যারাডোনার নামে স্ট্যান্ডের নাম রাখার সমালোচনাও করেছেন তিনি, ‘একই কথা ম্যারাডোনা স্ট্যান্ড নিয়েও বলব। এগুলো শুধুই বিপণন।’