বসুন্ধরা কিংসকে রুখে দিয়েছে আজমপুর
বসুন্ধরা কিংসকে রুখে দিয়েছে আজমপুর

অবশেষে কিংসকে মাটিতে নামালেন সাকিব

একেই বলে, পচা শামুকে পা কাটা! প্রিমিয়ার লিগে যেখানে বসুন্ধরা কিংসের জয়রথ থামাতেই পারছিল না কোনো দল, তাদেরই কিনা শেষ পর্যন্ত মাটিতে নামাল পুরো লিগে ৩ পয়েন্ট পাওয়া আজমপুর এফসি উত্তরা। দলটি আজকের ম্যাচের আগ পর্যন্ত মাত্র ২ পয়েন্ট পেয়েছিল প্রিমিয়ার লিগে। ৩–৩ ড্র করেছিল শেখ জামাল ধানমন্ডির সঙ্গে, চট্টগ্রাম আবাহনীকে রুখে দিয়েছিল ১–১ গোলে। প্রথম লেগে বসুন্ধরা কিংসের কাছেও হেরেছিল ৩-০ গোলের ব্যবধানে।

৪০ দিনের বিরতি শেষে আজ থেকে মাঠে গড়িয়েছে প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল। যথারীতি জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে চেয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৫ মিনিটের মাথায়  ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা বসুন্ধরা কিংসকে হতভম্ব করে দিয়ে গোল শোধ করে দেয় আজমপুর।

কিংস–আজমপুর ম্যাচের একটি মুহূর্ত

লিগে এ ম্যাচেই প্রথম পয়েন্ট হারাল বসুন্ধরা। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে বসুন্ধরার হৃদয় ভাঙেন আজমপুর এফসি উত্তরার ফরোয়ার্ড সাকিব ব্যাপারী। পেনাল্টি থেকে বসুন্ধরার একমাত্র গোলটি করেছেন রবসন রবিনিও।

রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে আজ দিনের অন্য ম্যাচে ঢাকা আবাহনী ২-০ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসিকে। আবাহনীর হয়ে গোল দুটি করেছেন দানিয়েল কলিনদ্রেস ও পিটার নোরাহ।

বসুন্ধরা কিংসকে পয়েন্ট না দেওয়ার ব্রত নিয়েই যেন আজ মাঠে নামে আজমপুর এফসি উত্তরা ক্লাব। রবসন, রাকিব হোসেন, মিগুয়েল ফেরেইরা, দরিয়েলতন গোমেজদের কোনো আক্রমণই আজ কাজে আসেনি। মধ্যবর্তী দলবদলে পাঁচ জন নতুন ফুটবলারকে দলে নিয়েছে আজমপুর এফসি উত্তরা ক্লাব। লিগের দ্বিতীয় পর্বে যে নতুন চেহারায় দেখা যাবে ক্লাবটিকে, সেই আভাস যেন খানিকটা দিয়েই রাখল এই ম্যাচে।

পুরো ম্যাচে আজ সব মিলিয়ে ১০টি কর্নার পেয়েছে বসুন্ধরা কিংস। এর মধ্যে আটটি কর্নার পেয়েছে বিরতির আগে। কিন্তু একটি কর্ণার থেকেও গোল বের করতে পারেননি বসুন্ধরা কিংসের ফরোয়ার্ডরা। বসুন্ধরা কিংসের গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু সেটিও বলা চলে আজমপুর এফসি উত্তরার ডিফেন্ডার রায়হান আহমেদের উপহার! বক্সের মধ্যে আগুয়ান মিগুয়েলকে অহেতুক কাঁধ টেনে ফেলে দেন রায়হান। এরপর রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। তা থেকে সহজেই গোল করেন রবসন।

লিগে প্রথমবার পয়েন্ট হারিয়েছে কিংস

অবশ্য আজমপুর এফসি উত্তরার গোলরক্ষক মোহাম্মদ রাজীবও দারুণ দক্ষতায় বেশ কয়েকটি গোল বাঁচিয়েছেন। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে রবসনের ক্রস থেকে মিগুয়েলের করা হেড ফিস্ট করে কর্ণারের বিনিময়ে বাচিয়ে দেন রাজীব।

ম্যাচের ৮২ মিনিটে রিচার্ড মাতুরানাকে তুলে নিয়ে কোচ আলী আজগর নাসির মাঠে নামান সাকিবকে। এরপর ৯৪ মিনিটে সাকিব করেন দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি। অবশ্য এই গোলের বড় দায় বদলি হিসেবে নাম ডিফেন্ডার তপু বর্মণেরও আছে। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বলটি জাতীয় দলের এই ডিফেন্ডার ভালোভাবে ক্লিয়ার করতে পারেননি। মুহূর্তেই বলটি কেড়ে নিয়ে জালে জড়িয়েছেন সাকিব। গোল করতেই জার্সি খুলে শুরু করে দেন উল্লাস। ডাগ আউট থেকে কোচ ও কর্মকর্তারাও এসে জড়িয়ে ধরেন সাকিবকে।