
রেকর্ড, পরিসংখ্যান কিংবা অর্জনে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও আয়ের হিসাব বরাবরই একপক্ষীয়। আয়ের হিসাবে রোনালদো বরাবরই মেসির ওপর দাপট দেখিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের ওয়েবসাইট বেস্টবেটিংঅফার্সের তালিকাতেও উঠে এল একই চিত্র।
৭ কোটি ৪৩ লাখ পাউন্ড
বাল্টিমোর র্যাভেনসের কোয়ার্টারব্যাক লামার জ্যাকসন এনএফএল খেলোয়াড়দের মধ্যে গত বছর সামগ্রিকভাবে আয়ে দশম স্থানে রয়েছেন। ২৮ বছর বয়সী জ্যাকসন ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে পাঁচ বছরের চুক্তিতে সই করেছিলেন, যেখানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বার্ষিক বেতনও বৃদ্ধি পায়। দুবার ‘এমভিপি’ পুরস্কার পাওয়া জ্যাকসন বিশ্বের অন্যতম সেরা কোয়ার্টারব্যাকদের একজন।
৭ কোটি ৫৩ লাখ পাউন্ড
আয়ে নবম বাস্কেটবল কিংবদন্তি স্টিফেন কারিও যুক্তরাষ্ট্রের। দশে থাকা জ্যাকসনের চেয়ে তিনি সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে। গোল্ডেন স্টেট ওয়ারিয়র্সের পয়েন্ট গার্ড কারির কারণে বাস্কেটবল খেলার ধরন কিছু জায়গায় পাল্টেছে। এতে ভূমিকা তাঁর দূর থেকে নির্ভরযোগ্যভাবে থ্রি-পয়েন্ট শট মারার ক্ষমতার, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দূর থেকে শুটিংয়ের গুরুত্ব অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ৩৭ বছর বয়সী কারি অবশ্য তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে। তবে এখনো দক্ষতা ও পারফরম্যান্সের কারণে তাঁর আয়ের খাতগুলো সচল।
৭ কোটি ৮৪ লাখ পাউন্ড
রিয়াল মাদ্রিদে নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষ করে বেনজেমা ২০২৩ সালে পাড়ি জমান সৌদি আরবের ক্লাব আল ইত্তেহাদে। সেখানে গিয়েও মাঠে নিজের অবস্থান ধরে রাখার পাশাপাশি আয়ের অঙ্কও তরতর করে বেড়েছে তাঁর। গত বছর আয়ে তাঁর শীর্ষ দশে থাকাকে মূলত সৌদি প্রো লিগে সাম্প্রতিক বড় বিনিয়োগের ফল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
৭ কোটি ৯৯ লাখ পাউন্ড
চোটের কারণে লম্বা সময় জাতীয় দলের বাইরে নেইমার। বর্তমান ক্লাব সান্তোসের হয়েও এখন চেষ্টা করছেন নিজেকে খুঁজে পাওয়ার। কিন্তু এমন বিরুদ্ধ সময়েও কমেনি নেইমারের আয়। গত বছর আয়ের তালিকায় নেইমার সপ্তম। তবে গত বছর তাঁর আয়ের বড় অংশ এসেছে এমন ক্লাব থেকে, যেখানে তিনি বলতে গেলে খেলেনইনি।
নেইমার ২০২৩ সালে পিএসজি থেকে সৌদি ক্লাব আল-হিলালে গিয়েছিলেন। চোটের কারণে সেখানে দুই বছরে মাত্র সাতটি ম্যাচ খেলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি নিজের দেশ ব্রাজিল ফিরে যান। যেখানে খেলছেন শৈশবের ক্লাব সান্তোসের হয়ে। সান্তোসে অবশ্য তাঁর বেতন তুলনামূলকভাবে কমই।
৮ কোটি ১৪ লাখ পাউন্ড
ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারদের একজন। এই তালিকার তাঁর থাকাটা অনুমেয়ই ছিল। ২৬ বছর বয়সী এমবাপ্পে এই তালিকায় সর্বকনিষ্ঠও। রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে বড় অঙ্কের সাইনিং বোনাস ও স্পনসরশিপ চুক্তিই মূলত এমবাপ্পেকে ছয়ে তুলে এনেছে। এ ছাড়া রিয়ালে মোটা অঙ্কের বেতনও পান তিনি। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে সামনে হয়তো আরও ওপরে উঠে আসতে পারবেন এমবাপ্পে।
৮ কোটি ২১ লাখ পাউন্ড
মিলওয়াকি বাক্সের হয়ে জিয়ানিস অ্যানটেটোকুম্পোর বছরে আয় ৮ কোটি পাউন্ডের বেশি। যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি আয় এসেছে মাঠের বাইরের স্পনসরশিপ থেকে, যেখানে নাইকির সঙ্গে তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য চুক্তিও আছে। ৬ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার ৩০ বছর বয়সী অ্যানটেটোকুম্পোকে বর্তমানে কোর্টের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে ধরা হয়। তাঁর প্রায় পুরো ক্যারিয়ারই কাটছে মিলওয়াকি বাক্সে।
৯ কোটি ৪৮ লাখ পাউন্ড
এই তালিকায় বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে শেষ জন হচ্ছেন লেব্রন জেমস। তিনি গত দুই দশকের অন্যতম সেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের একজন। ‘কিং জেমস’খ্যাত লেব্রন জেমস ২২ বছর ধরে এনবিএতে আলো ছড়াচ্ছেন। কারির মতো ৪০ বছর বয়সী জেমসও নিজে সর্ম্পৃক্ত থাকা কিছু প্রতিষ্ঠানে অংশীদারত্ব নিয়েছেন।
৯ কোটি ৯৯ লাখ পাউন্ড
তর্কযোগ্যভাবে সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি আয়েও সেরাদের একজন। শীর্ষে থাকতে না পারলেও গত বছরের আয়ে সেরা তিনে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে খেলা মেসির মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের আয় বেশি। মেসির আয়ের বড় একটি অংশ আসে স্পনসরশিপ থেকে। এ ছাড়া বেশ কিছু জায়গায় তাঁর আকষর্ণীয় কিছু বিনিয়োগও আছে। সেখানে থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
১৬ কোটি ৩২ লাখ পাউন্ড
তালিকায় একমাত্র গলফার জন রাহম। দ্বিতীয় এই ক্রীড়াবিদের সঙ্গে তৃতীয় মেসির আয়ের পার্থক্য প্রায়£৬ কোটি ১৪ লাখ পাউন্ডের। এই ব্যবধান মূলত সৌদি আরবের আকস্মিক বিনিয়োগের কারণে বেড়েছে। রাহম সৌদি–সমর্থিত লিভ গলফের প্রধান প্রতিযোগী। স্প্যানিশ এই গলফার গত বছরের আয়ের বড় একটা অংশ উপার্জন করেছেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে।
১৯ কোটি ২৪ লাখ পাউন্ড
যথারীতি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোই এই তালিকায় শীর্ষে। সৌদি ক্লাব আল নাসর থেকে বিশাল অঙ্কের বেতনই মূলত তাঁকে সবার ওপরে তুলেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত স্পনসরশিপ ও বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের বিষয়গুলো তো আছেই।
হিসাব অনুযায়ী গত বছর রোনালদোর প্রতি সেকেন্ডেই আয় ছিল ৬.১০ পাউন্ড করে। এর আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ও ইতালির জুভেন্টাসে খেলার সময়ও বিভিন্ন সময় নানা পরিসংখ্যানে খেলোয়াড়দের আয়ে রাজত্ব করেছেন রোনালদো।
এখনো শীর্ষ স্থানটা তাঁরই দখলে আছে। অবসরের আগপর্যন্ত ৪১ বছর বয়সী রোনালদোকে কেউ সরাতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।