চলতি মৌসুমে বার্সার কাছে সবগুলো ক্লাসিকোতেই হেরেছে রিয়াল। রিয়ালের খেলোয়াড়দের হতাশার এ ছবিটি কাল রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে তোলা
চলতি মৌসুমে বার্সার কাছে সবগুলো ক্লাসিকোতেই হেরেছে রিয়াল। রিয়ালের খেলোয়াড়দের হতাশার এ ছবিটি কাল রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে তোলা

বার্সেলোনায় রিয়াল মাদ্রিদ যেভাবে ‘হালি মাদ্রিদ’

রিয়াল মাদ্রিদকে ভালোবেসে স্প্যানিশ উচ্চারণে অনেকে বলেন ‘আলা মাদ্রিদ।’ বাংলাদেশে বার্সেলোনার একটু দুষ্টু সমর্থকেরা ঘুরিয়ে বলতে পারেন—‘হালি মাদ্রিদ।’

হ্যাঁ, খোঁচা তো বটেই। তবে সেটা একদম অযৌক্তিক নয়। এ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ বার্সার কাছে যত গোল হজম করেছে, ম্যাচপ্রতি গড় হিসাবে তো ডিমের হালির এক হালি করে!

অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কাল বাংলাদেশ সময় রাতে মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকো হয়ে গেল। যেখানে ৪–৩ গোলে জিতে লা লিগা একরকম জিতে নিয়েছে বার্সা। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে চারটি ক্লাসিকোয় বার্সার মুখোমুখি হয়ে ১৬ গোল হজম করল কার্লো আনচেলত্তির দল। অর্থাৎ ম্যাচপ্রতি গড়ে চারটি করে গোল হজম করেছে রিয়াল। রিয়াল সমর্থকেরা একটু আপত্তি তুলতে পারেন। হিসাবটা খাতাকলমে হলেও বাস্তবে তো তা হয়নি। সব কটি ম্যাচেই চারটি করে গোল হজম করেনি রিয়াল। বেঁচে গেছে শুধু একটি ম্যাচে।

জয়ের পর এভাবেই আনন্দে মেতে ওঠেন বার্সা কোচ হান্সি ফ্লিক। কাল রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে

চলতি মৌসুমে গত বছর ২৬ অক্টোবর লা লিগায় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৪–০ গোলে বার্সার কাছে বিধ্বস্ত হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা। এ বছর জানুয়ারিতে সুপার কাপে হারের ব্যবধান কমালেও বার্সার কাছে ৫–২ গোলে বিধ্বস্ত হয় আনচেলত্তির দল। গত এপ্রিলে কোপা দেল রে ফাইনালে আরেকটু উন্নতি করে রিয়াল। এবার বার্সার কাছে হারের ব্যবধান ৩–২। অর্থাৎ শুধু এই ম্যাচেই চার গোল হজম করেনি মাদ্রিদের ক্লাবটি। কাল রাতে মৌসুমের শেষ ম্যাচে এসে আবারও হজম করেছে চার গোল।

খেলাধুলার তথ্য–উপাত্ত নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান ‘অপ্টা’ জানিয়েছে, এক মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের জালে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড এটাই। মানে বার্সার করা ১৬ গোল। সর্বশেষ এই রেকর্ডও ছিল বার্সার, তবে সেটা যৌথভাবে। পেপ গার্দিওলা বার্সার কোচ থাকতে ২০১১–১২ মৌসুমে রিয়ালের জালে ১৩ গোল করে বার্সা। সেবার ৮২ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিল বার্সা। ১৯২৯–৩০ মৌসুমেও রিয়ালের জালে ১৩ গোল করেছিল এস্পানিওল।

১৯২৯–৩০ মৌসুমে রিয়ালের বিপক্ষে চার ম্যাচ খেলে ১৩ গোল করেছিল এস্পানিওল। গার্দিওলার বার্সা ২০১১–১২ মৌসুমে খেলেছিল ছয়টি ক্লাসিকো। কিন্তু এবারের মতো চারটি ক্লাসিকো জিততে পারেনি। ৩ জয়ের পাশাপাশি ২ ড্র ও এক ম্যাচ হেরেছিল বার্সা।

ফ্লিকের হাত ধরে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটাচ্ছে বার্সা

ক্লাসিকোর ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এক মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চারটি ম্যাচ জিতল বার্সা। প্রথমবার তারা এ নজির গড়েছিল যখন ডিয়েগো ম্যারাডোনা যখন বার্সায়। কাতালান ক্লাবটিতে তাঁর প্রথম মৌসুমে (১৯৮২–৮৩)। জার্মানির কিংবদন্তি কোচ উদো লাতেকের হাত ধরে পাঁচটি ক্লাসিকো খেলে চারটিতে জিতেছিল বার্সা। একটি ম্যাচ ড্র হয়।

বার্সার ইতিহাসে দ্বিতীয় কোচ হিসেবে নিজের প্রথম চারটি ক্লাসিকো জিতলেন হান্সি ফ্লিক। প্রথম এই কীর্তি গড়েছিলেন গার্দিওলা। প্রথম পাঁচটি ক্লাসিকো জয়ের পর ষষ্ঠ ক্লাসিকোয় ড্র এবং সপ্তম ক্লাসিকোয় এসে হেরেছিলেন এ স্প্যানিশ কোচ।