Thank you for trying Sticky AMP!!

এক মৌসুমে গোল খাওয়ার সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে শেফিল্ড ইউনাইটেড

প্রিমিয়ার লিগে গোল খাওয়ার যে রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে এবার

১৯৯৩–৯৪ মৌসুমে প্রথম এবং শেষবারের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছিল সুইনডন টাউন। এখন পর্যন্ত খেলা একমাত্র সেই প্রিমিয়ার লিগ আসরকে একটি রেকর্ড দিয়ে ইতিহাসের পাতায় লিখে রেখেছে তারা। অবশ্য ইতিহাসের পাতা থেকে রেকর্ডটি মুছে গেলেই খুশি হবে তারা। সেই রেকর্ড হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড। সেবার ৪২ ম্যাচের প্রিমিয়ার লিগে সুইনডন গোল হজম করেছিল ১০০টি।

বিব্রতকর এই রেকর্ড এখন পর্যন্ত অক্ষত আছে। প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত আর কোনো দল এক মৌসুমে এত গোল হজম করেনি। তবে এবার সম্ভাবনা আছে সে রেকর্ডটি ভেঙে যাওয়ার। প্রিমিয়ার লিগের চলতি আসরে শেফিল্ড ইউনাইটেড ২৩ ম্যাচেই ৫৯ গোল হজম করেছে। অর্থাৎ ম্যাচপ্রতি গোল ২.৫৬ করে। গোল হজম করার এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে ৩৮ ম্যাচের মৌসুম শেষে ১০০ গোল হজমের শঙ্কায় আছে শেফিল্ড। শেফিল্ডের এমন দুর্দিনে প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার তালিকায় আরও কারা আছে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।

Also Read: ফোডেনের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক, প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি কার

সুইনডন টাউন (১৯৯৩–৯৪)
১০০ গোল, ম্যাচপ্রতি ২.৩৮ গোল

সেটি ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় মৌসুম। যেখানে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পায় সুইনডন। ২২ দলের প্রিমিয়ার লিগে তখন দলগুলোকে ম্যাচ খেলতে হতো ৪২টি করে। যেখানে সুইনডন মাত্র ৫টি ম্যাচে জয়ের দেখা পায়। সাউদাম্পটন, টটেনহাম, কভেন্ট্রি এবং কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের (কিউসিএলকে দুই লেগে হারায় তারা) বিপক্ষে জয় পায় তারা। আর সব মিলিয়ে তারা ক্লিনশিট (কোনো গোল না খাওয়া) রাখতে পারে মাত্র ৪ ম্যাচে। আর ধারাবারিকভাবে গোল হজম করার ধারায় তারা মৌসুম শেষ করে ১০০ গোল খেয়ে। এখন পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে আর কোনো দল গোল খাওয়ার সেঞ্চুরি পূরণ করেনি। ভুলে যাওয়ার মতো এই রেকর্ডটি প্রায় ৩০ বছর পরও সুইনডনের দখলেই আছে।

প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে ১০০ গোল খাওয়া একমাত্র দল সুইনডন টাউন

ইপস উইচ টাউন (১৯৯৪–৯৫)
৯৩ গোল (ম্যাচপ্রতি ২.২১ গোল)

সুইনডনের রেকর্ডটি অবশ্য পরের মৌসুমেই ভেঙে যেতে পারত। ১৯৯৪–৯৫ মৌসুমে ইপস উইচ প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত সুইনডনের রেকর্ডটি ভাঙতে পারেনি তারা। ৪২ ম্যাচের মৌসুমে ২.২১ গড়ে তারা হজম করে ৯৩ গোল। সেবার মাত্র ৩ ম্যাচে ক্লিনশিট রাখতে সক্ষম হয় ইপস উইচ। যদিও শুধু একটি ম্যাচে চারের বেশি গোল হজম করেছিল তারা। সেই ম্যাচে অবশ্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ৯ গোল হজম করেছিল দলটি। এই এক ম্যাচ ছাড়া বাকি ৩৮ ম্যাচে গোল সংখ্যা চারের মধ্যেই রাখতে পেরেছিল তারা। যা কিনা শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটাকে এক শর নিচে রাখতে সহায়তা করেছিল। এরপরও অবশ্য মৌসুমটা তারা পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকেই শেষ করেছিল।

Also Read: ইউনাইটেডের জয়ে গারনাচোর জোড়া গোল, জন্মদিনে গোল হইলুন্দেরও

ডার্বি কাউন্টি (২০০৭–০৮)
৮৯ গোল (ম্যাচপ্রতি ২.৩৪ গোল)
ডার্বি কাউন্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে মৌসুম ছিল সেটি। ভাগ্যিস, তখন প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ সংখ্যা ৩৮–এ নেমে এসেছিল। নয়তো সুইনডনের রেকর্ড ভেঙেও যেতে পারত। এমনকি ম্যাচপ্রতি গোল খাওয়ার হারও প্রায় কাছাকাছি ছিল। ৩৮ ম্যাচে ২.৩৪ গড়ে সেবার ডার্বি কাউন্টি গোল হজম করেছিল ৮৯টি। পুরো মৌসুমে তারা জিতেছিল কেবল একটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে তাদের পয়েন্ট ১১। নিজেদের প্রথম সাত ম্যাচের মধ্যে টটেনহামের বিপক্ষে ৪–০ গোলে, লিভারপুলের বিপক্ষে ৬–০ এবং আর্সেনালের বিপক্ষে ৫–০ গোলে হেরেছিল তারা। শেষ ২৮ ম্যাচে তারা মাত্র ১টি ক্লিনশিট রাখতে পেরেছিল তারা। এমনকি শেষ ১০ ম্যাচের ৩টিতেই তারা খেয়েছিল ৬ গোল করে।

ফুলহাম (২০১৩–১৪)
৮৫ গোল (ম্যাচপ্রতি ২.২৪ গোল)
২০১৩–১৪ মৌসুমে ফুলহাম সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়া দল হলেও তারা কিন্তু সবার নিচে থেকে মৌসুম শেষ করেনি। অবশ্য ১৯ নম্বরে থেকে ঠিকই অবনমনের শিকার হয়েছিল তারা। সে মৌসুমে দলকে উদ্ধার করতে তিনজন কোচকে ফুলহামের ডাগআউটে দাঁড়াতে দেখা যায়। মার্টিন জোল, রেন মিউলেনস্টেন কিংবা ফেলিক্স মাগাথের কেউই ফুলহামের অবনমন দূরে থাক, গোল খাওয়াটাই ঠেকাতে পারেননি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সে মৌসুমে কার্ডিফ (৬৯২) এবং ওয়েস্ট হাম (৬৭৭) ফুলহামের (৬৭১) চেয়ে বেশি শটের মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু দল দুটি গোল হজম করেছে ৭৪ এবং ৫১টি করে।

তালিকায় আছে নরউইচও

নরউইচ সিটি (২০২০–২১)
৮৪ গোল, ম্যাচপ্রতি ২.২১ গোল
চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েই ২০২০–২১ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে উঠে এসেছিল নরউইচ। তাদের কাছ থেকে সেবার প্রত্যাশাও ছিল বেশি। কিন্তু শুরুতেই সবাইকে হতাশ করে নরউইচ। লিভারপুলের কাছে ৩–০ গোলে হারের পর ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তারা হজম করে ৫ গোল। ব্যর্থতা দূর করতে তারা কেচা ডিন স্মিথকে সরিয়ে নিয়ে আসে ড্যানিয়েল ফার্কেকে। যদিও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। সব মিলিয়ে ৩৮ ম্যাচের মাত্র ৫টিতে জিতেছে তারা। বিপরীতে হেরেছে ২৬ ম্যাচে। আর সব মিলিয়ে দলটি হজম করেছে ৮৪ গোল।

বার্নসলে (১৯৯৭–৯৮)
৮২ গোল, ম্যাচপ্রতি ২.১৬ গোল
সুইনডনের মতো বার্নসলেও এখন পর্যন্ত একবার প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছে। তবে সে মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল হজমের তালিকায় নিজেদের জায়গাটা ঠিকই খুঁজে নিয়েছিল তারা। বার্নসলের শুরুটা যদিও খারাপ ছিল না। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই অবশ্য ক্রিস্টাল প্যালেসকে ১–০ গোলে হারিয়ে দেয় তারা। কিন্তু সেই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেনি তারা। ৩৮ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে মৌসুম শেষ করলেও এর মধ্য তারা হজম করেছিল ৮২ গোল।

Also Read: ফুটবলে আসছে সেরা গোলের ‘মার্তা পুরস্কার’

বার্নলি (২০০৯–১০)
৮২ গোল, ম্যাচপ্রতি ২.১৬ গোল

২০০৯–১০ মৌসুমে প্রথমবারের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পায় বার্নলি। প্রথমবার এসেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলকে হারিয়ে সবাইকে চমকে দেয় তারা। কিন্তু সেই জয়কে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে ধারাবাহিক হতে পারেনি তারা। বরং উল্টো নিজেরা গোল খেয়ে পয়েন্ট তালিকার ১৮ নম্বরে থেকে শিকার হয়েছিল অবনমনের। ৩৮টি ম্যাচে সেবার মাত্র ৮টিতে জয় পেয়েছিল বার্নলি। যেখানে গোল হজম করেছিল ৮২টি।

উলভারহ্যাম্পটন (২০১১–১২)
৮২ গোল, ম্যাচপ্রতি ২.১৬ গোল

আগের মৌসুমে মাত্র ১ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে অবনমন এড়ায় উলভস। কিন্তু পরের মৌসুমে আর টিকতে পারেনি তারা। শুরুটা অবশ্য বেশ ভালোই ছিল তাদের। প্রথম তিন ম্যাচে মাত্র ১ গোল হজম করে তারা। কিন্তু এরপর আগস্টের শেষ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত আর কোনো ক্লিনশিট রাখতে পারেনি তারা। আর ধারাবাহিক ম্যাচ হারা ও গোল খাওয়ার ধারাবাহিকতায় শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে শেষ করে তারা। সে মৌসুমে মাত্র ৫ ম্যাচ জেতা উলভসের পয়েন্ট ছিল ২৫।