কক্সবাজারের রশিদনগরে টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ শুরু করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অনুমতি মিললেও কাজ শুরু করতে হলে বাফুফেকে গুনতে হবে আট কোটি টাকা। টেকনিক্যাল সেন্টারের ১৫ একর জমির মূল্য হিসেবেই বাফুফের কাছে এ অর্থ চেয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে অত্যাধুনিক টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ শুরু নিয়ে নতুন করে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর খাসজমি হস্তান্তরের নিয়মে পরিবর্তন এনেছে। আগে সেবামূলক সংস্থা প্রতীকী মূল্যে সরকারি জমি নিতে পারলেও এখন প্রচলিত মূল্য পরিশোধ করতে হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (অধিগ্রহণ ও খাসজমি অনুবিভাগ) এম এম আরিফ পাশা কাল প্রথম আলোকে এ তথ্যই জানিয়েছেন, ‘এখন আর প্রতীকী মূল্যে খাসজমি হস্তান্তরের পথ নেই। প্রচলিত দামেই জমি নিতে হবে। জায়গা অনুযায়ী আট কোটি টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এ টাকা পরিশোধ করেই জমি নিতে পারবে বাফুফে।’
বাফুফের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান কামরুল হাসান বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, প্রতীকী মূল্যে জমিটা নিতে পারব। যেহেতু এটা খাসজমি। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এর মূল্য বাবদ আট কোটি টাকা দিতে হবে। এত টাকা দিয়ে কীভাবে জমি নেব!’
টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের জন্য ফিফার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা পাবে বাফুফে। শর্ত অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু না করলে এই বরাদ্দ ফেরত যাবে। সে হিসাবে বাফুফের হাতে আর সময় ১২ দিন। কামরুল হাসান এখনই আশা ছাড়ছেন না। জানিয়েছেন, বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, ‘আমাদের সভাপতি ব্যক্তিগত কাজে একটু দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলেই একটা সিদ্ধান্ত হবে।’
২০২২ সালের জুলাইয়ে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে ২০ একর জায়গা বাফুফের অনুকূলে হস্তান্তর করেছিল কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ। বাফুফে সেখানে সেন্টার ফর এক্সিলেন্স নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করার পর ফিফার কাছে ইএসআইএ (এনভায়রনমেন্ট সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যানালাইসিস) রিপোর্ট পাঠায়। পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানায়, জায়গাটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ায় খুনিয়াপালংয়ে টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা আছে।
সে কারণেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে বিকল্প জায়গায় টেকনিক্যাল সেন্টার নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। বিকল্প জায়গাটি একই উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়ায়। জায়গার পরিমাণ ১৯ দশমিক ১ একর, যদিও বাফুফে পাবে ১৫ একর।