ম্যাচের আগের দিন স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় হামজা চৌধুরী। বাংলাদেশের সমর্থকেরা যেমন তাঁর দিকে তাকিয়ে, প্রতিপক্ষ হংকংও হামজাকে আটকানোর কৌশল আঁটতেই ব্যস্ত। হংকং কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউডের কথায়ও তেমনটা বোঝা গেল।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আগামীকাল হংকংয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। তার আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে হামজাকে নিয়ে হংকং কোচ ওয়েস্টউড বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। আমি ভাগ্যবান যে হামজা চৌধুরীকে স্বাগত জানাতে পারব। আমরা তার শক্তিমত্তা সম্পর্কে অবগত। এখানে তাকে মিডফিল্ডে খেলানো হয়। তবে সে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেও খেলতে পারে।’
হামজার পাশাপাশি শমিত সোম, জায়ান আহমেদ এবং ফাহামিদুল ইসলামকে নিয়েও সতর্ক হংকং কোচ, ‘বাংলাদেশ এখন আগের অবস্থানে নেই। তাদের খেলায় স্থিতিশীলতা এসেছে, কোচ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। নতুন কিছু খেলোয়াড়ও এসেছে। তাদের দলে কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলা একজন আছে। দলটা উদ্যমী।’
যদি হামজা আপনার দলে থাকতেন, কোথায় খেলাতেন—এমন এক প্রশ্নে অবশ্য মজাও করলেন। বললেন, ‘প্রবাবলি বেঞ্চ’ (সম্ভবত বেঞ্চে)।
ওয়েস্টউডের মতে, ব্যক্তির চেয়ে দল বেশি গুরুত্বপূর্ণ, ‘এটা দলগত খেলা, একার নয়। আমাদেরও তেমন কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে। তবে আমরা তাদের দিকে এককভাবে মনোযোগ না দিয়ে পুরো দলকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।’
বর্তমান হংকং দলের ২৫ খেলোয়াড়ের ১১ জনই অন্য দেশে জন্ম নেওয়া। দলে আছেন পাঁচ ব্রাজিলিয়ান—ডিফেন্ডার লুইস এদুয়ার্দো, মিডফিল্ডার ফার্নান্দো পেদ্রেইরা, ফরোয়ার্ড এভারটন কামারগো, জুনিনহো ও স্টেফান পেরেইরা।
আছেন ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক ওলেক্সি শ্লিয়াকোটিন, রক্ষণভাগে স্কটিশ লিওন জোন্স, জাপানের ডিফেন্ডার শিনইচি চ্যান, আক্রমণভাগে ক্যামেরুনের মহামা আওয়াল, ফ্রান্সের মিডফিল্ডার রাফায়েল মারকিস ও ফরোয়ার্ড স্প্যানিশ মানোলো ব্লেদা।
কামারগো–আওয়ালদের অবশ্য ভিনদেশি মানতে নারাজ হংকং কোচ। কারণ, নিয়ম মেনেই তাঁরা হংকংয়ের নাগরিক হয়েছেন। তাই এখন তাঁরা স্রেফ হংকংয়ের, ‘আমাদের ২৩ জন হংকং চীনের খেলোয়াড়। অন্য কোনো দেশের কি না, আমি নিশ্চিত নই। তবে আমাদের দলের সবাই হংকংয়ের পাসপোর্টধারী।’
পঞ্চাশের দশক থেকে হংকং বিদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের দলে নিচ্ছে। বিভিন্ন সময় ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ক্যামেরুন, জাপানসহ নানা দেশের খেলোয়াড়েরা হংকংয়ে ক্লাব ফুটবল খেলে পরে জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছেন।
ফিফার নিয়মে বলা আছে, কোনো খেলোয়াড় যদি একটানা ৫ বছর কোনো দেশে বসবাস করেন (১৮ বছর বয়সের পর থেকে), তবে নাগরিকত্ব নিয়ে সেই দেশের জাতীয় দলে খেলার যোগ্য হন। হংকং এই নিয়ম ব্যবহার করে ক্লাব পর্যায়ে খেলা বিদেশিদের নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে।
হংকং দলের চালিকা শক্তিও এখন এই বিদেশি বংশোদ্ভূতেরাই। দলটির আক্রমণভাগ পুরোই প্রবাসীনির্ভর, কাউন্টার অ্যাটাকে যাঁরা খুবই ভয়ংকর। বিশেষ করে উইং থেকে নিয়মিত ক্রস তৈরি করতে পারেন ব্রাজিলিয়ান এভারটন কামারগো এবং ক্যামরুনে বেড়ে ওঠা মহামা আওয়াল। ২০২৩ সালে হংকং জাতীয় দলে অভিষেক কামারগোর। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির হয়ে ১৯ ম্যাচে ১০ গোল ও ১৩ গোলে সহায়তা করেছেন। ড্রিবলিংয়ে বেশ দক্ষ কামারগো।