এক মিনিটের মধ্যে দুটি পেনাল্টি ঠেকানোর পর পিএসজি গোলকিপার লুকাস শেভালিয়ের গর্জন। কাল রাতে তুলুজের বিপক্ষে
এক মিনিটের মধ্যে দুটি পেনাল্টি ঠেকানোর পর পিএসজি গোলকিপার লুকাস শেভালিয়ের গর্জন। কাল রাতে তুলুজের বিপক্ষে

১১ পেনাল্টির ৬টিই মিস: লিগ আঁ যেন এবার ‘লিগ আঁহ’

অপ্টার তথ্য অনুযায়ী, এবারের ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতে এখন পর্যন্ত ১১ পেনাল্টির মধ্যে ৬টিই মিস হয়েছে, যা অন্য চার শীর্ষ প্রতিযোগিতা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ ও জার্মান বুন্দেসলিগার চেয়েও বেশি!

ম্যাচের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের ঘটনা। এক মিনিটের মধ্যে তুলুজের দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন পিএসজি গোলকিপার লুকাস শেভালিয়ে।

স্পট কিক থেকে প্রথম শটটি নেন তুলুজের ফরোয়ার্ড ফ্রাঙ্ক মাগরি। শেভালিয়ে নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন। কিন্তু মাগরি শট নেওয়ার আগেই পিএসজির একাধিক খেলোয়াড় বক্সে ঢুকে পড়ায় তুলুজকে আবার পেনাল্টি কিক নিতে বলেন রেফারি।

এবার শট নিতে আসেন তুলুজ মিডফিল্ডার ক্রিস্তিয়ান কাসেরেস জুনিয়র। তিনি জালের মাঝ বরাবর শট নেন। শেভালিয়ে এবার নিজের জায়গা ছেড়ে এক ইঞ্চিও নড়েননি। তাই কাসেরেসের উঁচু করে নেওয়া জোরালো শটটাও সহজে ঠেকাতে পারেন।

তুলুজ স্টেডিয়ামে তখন রাজ্যের নীরবতা। হতাশায় দলটির খেলোয়াড়দের মাথায় হাত। মুহূর্তেই নায়ক বনে যাওয়া শেভালিয়েকে কে আগে ছুটে এসে অভিনন্দন জানাতে পারেন, তা নিয়ে সতীর্থ জোয়াও নেভেস, দেজিরে দুয়ে ও আশরাফ হাকিমিদের মধ্যে চলেছে প্রতিযোগিতা। ৯ গোলের ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত পিএসজি জিতেছে ৬–৩ ব্যবধানে।

এবারের ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতে এ ধরনের দৃশ্য যেন নিয়মিতই মঞ্চস্থ হচ্ছে। কখনো গোলকিপারের বীরত্বে পেনাল্টি থেকে গোল আসছে না, আবার কখনো পেনাল্টি কিক নিতে যাওয়া খেলোয়াড় নিচ্ছেন লক্ষ্যভ্রষ্ট শট। তাই ২০২৫–২৬ মৌসুমের শুরুতে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে ফ্রান্সের শীর্ষ এই লিগেই পেনাল্টি মিসের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

খেলাধুলার পরিসংখ্যান ও তথ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অপ্টার তথ্য অনুযায়ী, এবারের ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতে এখন পর্যন্ত ১১ পেনাল্টির মধ্যে ৬টিই মিস হয়েছে, যা অন্য চার শীর্ষ প্রতিযোগিতা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, ইতালিয়ান সিরি ‘আ’ ও জার্মান বুন্দেসলিগার চেয়েও বেশি!

এই চার লিগে এখন পর্যন্ত ২৬টি পেনাল্টি হয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ৫টিতে গোল হয়নি। শতাংশের হিসাবে ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতে পেনাল্টিতে ব্যর্থতার হার ৫৪.৫৫ শতাংশ। আর বাকি চার লিগ মিলিয়ে ব্যর্থতার হার ১৯.২৩ শতাংশ।  

ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫–২৬ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ লিগ আঁতে গত রাত পর্যন্ত ম্যাচ হয়েছে ২২টি। লিগের ১৮ দলের মধ্যে ৭টি এখন পর্যন্ত ১১টি পেনাল্টি পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি তিনটি পেনাল্টি পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। এর মধ্যে দুটিতে বল প্রতিপক্ষের জালে জড়াতে পেরেছে।

অলিম্পিক মার্শেই দুটি পেনাল্টি পেয়ে একটিতে সফল, আরেকটিতে ব্যর্থ হয়েছে। লিল, অজের, লরিয়াঁ ও তুলুজ পেনাল্টি পেলেও গোল পায়নি। শতভাগ সাফল্য পেয়েছে শুধু লাঁস। দলটি দুটি স্পট কিকই গোলে পরিণত করেছে।

ব্যালন ডি’অরের অন্যতম দাবিদার উসমান দেম্বেলেও লিগ আঁ–এর চলতি মৌসুমে পেনাল্টি মিস করেছেন

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে লিগ আঁতে। সবচেয়ে কম দুটি পেনাল্টি হয়েছে সিরি ‘আ’তে। তবে ইতালির এই লিগে পেনাল্টি থেকে সাফল্যের হার শতভাগ।

লা লিগায় আট পেনাল্টির মধ্যে শুধু একটি মিস হয়েছে। ব্যর্থ হওয়া একমাত্র দল রিয়াল ওভিয়েদো, যারা ২৪ বছর পর এবার লা লিগায় উঠে এসেছে। বুন্দেসলিগাতেও এখন পর্যন্ত শুধু একটি পেনাল্টি মিস হয়েছে। স্পট কিক থেকে গোল করতে না পারা দলটার নাম বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রতিযোগিতা প্রিমিয়ার লিগে ১০ পেনাল্টির মধ্যে ৭টিতে গোল হয়েছে। একটি করে পেনাল্টি মিস করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ব্রাইটন ও ব্রেন্টফোর্ড।

ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের ক্লাবগুলোর মধ্যে গত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ

২০২৪–২৫ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ২৫টি পেনাল্টি মিস হয়েছিল বুন্দেসলিগায়, সবচেয়ে কম প্রিমিয়ার লিগে ১৪টি। গত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে লা লিগায়, ১৩০টি। সবচেয়ে কম যৌথভাবে বুন্দেসলিগা ও প্রিমিয়ার লিগে, ৮৩টি।

শীর্ষ পাঁচ লিগের ৯৬ দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ; ১৪টি।