ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলোর লড়াই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল মানেই তো এক বিরাট উৎসব। আর সেই উৎসবের মঞ্চ হতে পারাটাও বিশাল ব্যাপার। উয়েফার এক বিবৃতিতে জানা গেছে, ২০২৮ সালে আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল হবে বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে। তার ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৯ সালের ফাইনালের আয়োজক হওয়ার দৌড়ে মুখোমুখি লন্ডন স্টেডিয়ামের ওয়েম্বলি ও বার্সেলোনার নবসাজে সজ্জিত ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়াম।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যেসব সংস্থা ফাইনাল আয়োজনের আগ্রহ দেখিয়েছে, সেই তালিকা তৈরি হয়েছে। যে তালিকা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে যে গুঞ্জন ছিল—নিউইয়র্কে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল হবে, তা অন্তত ২০৩০ সালের আগে হচ্ছে না।
২০২৮ সালের ফাইনালের আয়োজক হওয়ার জন্য একমাত্র প্রার্থী মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা। এ বছর চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বশেষ ফাইনালও এ মাঠেই হয়েছে, যেখানে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে পিএসজি। পরের বছর, মানে ২০২৫-২৬ মৌসুমের ফাইনাল হবে হাঙ্গেরির পুসকাস অ্যারেনায়। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৬-২৭ মৌসুমের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে আতলেতিকো মাদ্রিদের মাঠ ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোতে।
লন্ডনের ওয়েম্বলিতে সর্বশেষ ফাইনাল হয়েছে ২০২৪ সালে। বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যু-তে সর্বশেষ ফাইনাল হয়েছিল ১৯৯৯ সালে—সেই ম্যাচে যোগ হওয়া সময়ে দুই গোল করে বায়ার্নকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা ফাইনাল মনে করা হয় সেটিকে।
বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ অবশ্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে চলছে। তবে সংস্কারের পরে এর ধারণক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৫ হাজার, তখন এটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম হবে। তাতে করে ২০২৯ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল আয়োজনে বার্সেলোনার দাবিও আরও শক্ত হবে।
ইতালীয় ফুটবল ফেডারেশন তুরিনে ৪১,০০০ আসনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে ২০২৮ বা ২০২৯ সালের ইউরোপা লিগ অথবা কনফারেন্স লিগের ফাইনাল আয়োজন করতে চায়। ইউরোপা লিগের ফাইনালের আয়োজক হওয়ার দৌড়ে আছে রোমানিয়ার বুখারেস্ট ন্যাশনাল স্টেডিয়াম এবং ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশনও। ফরাসিরা অবশ্য এখনো প্যারিসের পার্ক দে প্রিন্সেস আর লিওঁর হোম স্টেডিয়াম, এই দুটির মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে পারেনি।
আগ্রহীদের তালিকায় আছে নির্মাণাধীন দুটি স্টেডিয়ামও। নতুন সার্বিয়ান জাতীয় অ্যারেনা (বেলগ্রেড) ২০২৮ সালের প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে, আর ২০২৯ সালের ফাইনাল আয়োজনের দৌড়ে আছে তুরস্কের ‘আঙ্কারা ১৯ মে’ স্টেডিয়াম।
৬৭,০০০ আসন বিশিষ্ট পুসকাস অ্যারেনাও কনফারেন্স লিগের ফাইনাল আয়োজনের জন্য প্রার্থী হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৮ ও ২০২৯ সালের ফাইনাল আয়োজনের দৌড়ে আছে লিলের হোম স্টেডিয়াম, পোল্যান্ডের আরেনা গদানস্ক এবং কাজাখস্তান। কাজাখস্তান এখনো রাজধানী আস্তানা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নবাগত কাইরাত আলমাটির মাঠের মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে পারেনি। ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি অলিম্পিক স্টেডিয়ামও আছে ২০২৯ সালের ফাইনালের আয়োজকদের তালিকায়।
এসব ফাইনালের আয়োজক কারা হচ্ছেন, সে বিষয়ে উয়েফার নির্বাহী কমিটি আগামী সেপ্টেম্বরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।