ঈদের ছুটিতে ঢাকার রাস্তাগুলো অনেকটা সুনসান। তবে জাতীয় স্টেডিয়ামে জমে উঠেছে জাতীয় ফুটবল দলের ঘামঝরা প্রস্তুতি। ১০ জুন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষা। এ ম্যাচ দিয়েই লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেক হতে যাচ্ছে কানাডার হয়ে দুই ম্যাচ খেলা মিডফিল্ডার শমিত সোমের।
জাতীয় দলে শমিতের আগমন যেমন আশাবাদের বার্তা, তেমনি তৈরি করেছে একধরনের ‘মধুর সমস্যা’ও। ভুটানের বিপক্ষে হামজা চৌধুরী, সোহেল রানা, জামাল ভূঁইয়ারা মাঝমাঠে শক্তির মহড়া দিয়েছেন। জামাল সাধারণত ডিফেন্সিভ মিডে খেললেও সেদিন খেলেছেন ওপরের দিকে। হামজাও তা–ই। এখন হামজা, জামালদের মতো অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন কানাডা জাতীয় দলে দুটি ম্যাচ খেলা শমিতও।
নবাগত শমিতকে কোচ কাবরেরা একাদশে রাখবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে কাকে বাদ দেবেন, কীভাবে একাদশ গড়বেন এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন কোচ। তবে তিনি বিষয়টিকে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা হিসেবেই দেখছেন। আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরুর আগে সাংবাদিকদের কোচ বলেন, ‘এটা আসলে দারুণ এক সমস্যা (হাসি)। এখন দলে দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। এটা দলের জন্য ভালো।’
শমিত নিজেও আপাতত জায়গা দখল নয়, বরং দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াতেই মনোযোগী। অনুশীলনের আগে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলেন, ‘আমি খেলতে মুখিয়ে আছি। বোঝার চেষ্টা করছি কীভাবে সবচেয়ে ভালোভাবে দলকে সাহায্য করতে পারি। কোচ অনেক তথ্য দিচ্ছেন, আমি তা বোঝার চেষ্টা করছি।’
এরই মধ্যে শমিত সম্পর্কে শুরুতেই ভালো একটা ধারণা পেয়ে গেছেন কাবরেরা, ‘ওর সম্পর্কে আমার প্রথম ইমপ্রেশন ভালো। এখন দেখতে হবে ম্যাচে সে কেমন খেলে।’
৪ জুন ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি জাতীয় স্টেডিয়ামে বসে ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটি দেখেছেন শমিত। জামালের কর্নার, হামজার হেডে গোল, ফাহামিদুলের সাহসী দৌড়—সবই মনোযোগ দিয়ে দেখেছেন। সেসব দেখে রোমাঞ্চিত এই প্রবাসী ফুটবলার বললেন তাঁর ভালো লাগার কথা, ‘ভুটান ম্যাচে দল দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ। এবার আরও ভালো কিছু করতে চাই।’
শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, দলের শক্তি নিয়েও পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছে শমিতের। দলের কোন অংশটা শক্তিশালী তা নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, ‘মিডফিল্ড আমার খুব ভালো লেগেছে। হামজা, সোহেল ভাই, জামাল ভাই সবাই দুর্দান্ত খেলেছেন। আমরা সুযোগ তৈরি করেছি, ডিফেন্সও ভুটানকে কোনো সুযোগ দেয়নি।’ প্রশংসা করেছেন ভুটান ম্যাচে অভিষিক্ত ফাহামিদুল ইসলামেরও।
তবে সিঙ্গাপুরের ম্যাচে চ্যালেঞ্জটা সহজ হবে না। গতকাল মালদ্বীপকে ৩–১ গোলে হারিয়ে ছয় ম্যাচ পর জয় পেয়েছে সিঙ্গাপুর। জয়ের নায়ক ইখসান ফান্দি। দীর্ঘ চোট কাটিয়ে ফিরেই জোড়া গোল করেছেন। তাঁর ব্যাপারে সতর্ক শমিত বলেন, ‘ফান্দি বড় হুমকি হতে পারে। আমরা (মিডফিল্ডাররা) রক্ষণে কীভাবে সহায়তা করতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করছি।’
অনুশীলন শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনও।শমিত, ফাহামিদুলরা আসায় নিজের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত কি না, জায়গা ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে কি না জিজ্ঞেস করা হলে রাকিব বলেন, ‘আসলে এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না। প্লেয়ার আসলে দল শক্তিশালী হবে, দল ভালো খেলবে। আর দল ভালো খেললে দেশবাসী খুশি হবে।’