সালাহকে কি লিভারপুল দল থেকে বাদ দেওয়ার সময় এসেছে

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুম। প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গোল করা ও করানোয় শীর্ষে থেকে মৌসুম শেষ করেন মোহাম্মদ সালাহ। প্রিমিয়ার লিগের মৌসুমসেরাও হন লিভারপুল তারকা। লিভারপুল কোচ হিসেবে সেটা আবার আর্নে স্লটের প্রথম মৌসুম। স্লটের হাতে লিগ শিরোপা তুলে দেওয়ায় বড় অবদান ছিল সালাহর।

কিন্তু স্লটকে এখন সেই হাত দিয়ে কাঁচি চালাতে হবে। লিভারপুল কোচ নিজে কিছুই বলেননি। তবে লিভারপুল দলে তাঁকে কাঁচি চালানোর পরামর্শটা দিয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি ওয়েইন রুনি—সালাহকে দল থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্লটকে।

কেন? সে প্রশ্নের উত্তর কারও কারও জানা থাকলেও চলতি লিগে লিভারপুলের তথৈবচ অবস্থা নিশ্চয়ই সবার জানা। গত শনিবার রাতে ঘরের মাঠে নটিংহাম ফরেস্টের কাছে ৩-০ গোলে হারে লিভারপুল। ১২ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা আর্সেনালের সঙ্গে ১১ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে ১১তম স্থানে নেমে গেছে লিভারপুল। ১২ ম্যাচে তাদের জয় ৬টি, হারও ৬টি। লিগে সর্বশেষ ৭ ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই হেরেছে স্লটের দল। এর মধ্যে শেষ দুই ম্যাচেই ৬ গোল হজম করেছে তারা। রুনির পর্যবেক্ষণ হলো, লিভারপুলের এই ১২ ম্যাচে মাত্র ৫ গোল করা সালাহ দলকে রক্ষণভাগে সহায়তা করছেন না।

নটিংহামের বিপক্ষে লিভারপুলের হারের ম্যাচে ভালো খেলতে পারেননি সালাহ

নটিংহামের বিপক্ষে হারের ম্যাচে সালাহ গোল করা বা গোলে সহায়তা করতে পারেননি। ‘দ্য ওয়েইন রুনি শো’ পডকাস্টে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা বলেন, ‘সালাহ রক্ষণভাগেও দলকে সাহায্য করছে না।’ ৩৩ বছর বয়সী সালাহকে নিয়ে রুনি বলেন, ‘নতুন খেলোয়াড়েরা বেঞ্চে বসে দেখছে, সে দৌড়াচ্ছে না। আবারও বলি, সে ক্লাব লেজেন্ড, যা করেছে, তা অসাধারণ। কিন্তু যদি সে না দৌড়ে প্রতিটি ম্যাচে খেলতে থাকে, তাহলে অন্যদের কাছে কী বার্তা যায়? আমি যদি স্লট হতাম, একটা বড় সিদ্ধান্ত নিতাম। যাতে পুরো দলে প্রভাব পড়ে।’

গত মৌসুমে লিগ জয়ের পর দলের শক্তি বাড়ায় লিভারপুল। মোট ২৪ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড খরচ করে ফ্লোরিয়ান ভির্টৎস ও আলেক্সান্দার ইসহাককে কেনে তারা। কিন্তু মাঠে ফল মিলছে না।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে পাঁচবার লিগজয়ী রুনি অবশ্য শুধু সালাহর সমালোচনা করেননি। পারফর্ম করতে না পারা লিভারপুলের কিছু সিনিয়র খেলোয়াড়েরও সমালোচনা করেন রুনি, ‘তারা ভালো অবস্থায় নেই এবং সেটা শুধু ফন ডাইক ও সালাহ নয়। আমি বলতে চাই, দলের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো খেলোয়াড় আছে। ম্যাক অ্যালিস্টার কয়েক বছর ধরেই আছে। রায়ান গ্র্যাভেনবার্চ গত মৌসুমে দারুণ খেলেছে। তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি দল বানানোর চেষ্টা করতে হবে যেন জিততে পারে।’

চলতি মৌসুমে গোল করায়ও মন্দা যাচ্ছে সালাহর

রুনি একা নন। সাবেক লিভারপুল তারকা জেমি ক্যারাঘার আর ডন হাচিসনও মনে করেন, সালাহকে বেঞ্চে বসানোর সময় এসেছে। তবে আরেক লিভারপুল কিংবদন্তি জন বার্নস একেবারেই ভিন্ন সুরে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, সালাহ সমস্যা নয়।

মিরর ফুটবলকে তিনি বলেন, ‘আগে লিভারপুল খেলত ট্রেন্ট বা অন্যদের দিয়ে সুযোগ তৈরি করে সালাহকে দেওয়ার জন্য। এখন ফ্লোরিয়ান ভির্টৎস, একিতিকে, ইসাক—এমন খেলোয়াড় এসেছে। খেলার ধরন বদলেছে। এটা ঠিক হয়ে গেলে সমস্যা থাকবে না। সালাহর বয়স ৩৩, এটা কাকতালীয়। কিন্তু অনেকে তার বয়সকে দায় দিচ্ছে।’

প্রিমিয়ার লিগে ৩০ নভেম্বর নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের মুখোমুখি হবে লিভারপুল।