অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়
অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়

সাড়ে ১০ কোটি টাকায় ঢাকায় হবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ

১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বিশাল বাজেট নিয়ে প্রথমবারের মতো ঢাকায় আয়োজিত হতে যাচ্ছে আইকেএফ নারী কাবাডি বিশ্বকাপ। ১৪টি দেশ নিয়ে মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়ামে আগামী ১৫-২৫ নভেম্বর হবে বিশাল এই আয়োজন। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন আজ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। অনুষ্ঠানে টুর্নামেন্টের লোগোও উন্মোচন করা হয়েছে।

বিপুল অর্থ খরচ করে বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘তারুণ্যর উৎসবের অংশ হিসেবে আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করছি। বিশ্বকাপ আয়োজন যেকোনো দেশের জন্যই মর্যাদার। “বিউটিফুল বাংলাদেশ” ভাবনা নিয়ে আমরা এর সঙ্গে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। জাতীয় খেলা হিসেবে আমরা কাবাডিকে সামনে নিতে চাই। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক তৈরি হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের লোগো উন্মোচন করা হয়

সাড়ে ১০ কোটি টাকা কীভাবে খরচ হবে, তা নিয়েও বিস্তারিত জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। দলগুলোর বিমান খরচ, থাকা-খাওয়াসহ সব খরচ বহন করতে হবে আয়োজকদেরই। কেন এত টাকা খরচ করে বাংলাদেশ এই আয়োজন করবে, সেটাও বলেছেন সাধারণ সম্পাদক, ‘টিকিটের সাড়ে তিন কোটি টাকা দেবে আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশন (আইকেএফ)। আমরা কোনো টাকা নেব না আইকেএফের কাছ থেকে। সরকারের কাছ থেকে পাব ৫ কোটি টাকা। বাকি টাকা স্পনসরের কাছে থেকে নেব। আমরা মনে করি, দেশের কাবাডিতে বিশ্বকাপের একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ কারণেই এই আয়োজন।’

এত বড় আয়োজনে নিরাপত্তা নেয়ে  প্রশ্ন থাকেই। তবে সেখানেও কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলামের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তমন্ত্রণালয় সভা করব সব বিভাগকে নিয়ে। সশস্ত্র বাহিনীর সাহায্য নেব। ইতিমধ্যে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা আমরা নিয়েছি। এ ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে হবে; কারণ, খেলোয়াড়েরা সবাই নারী।’

সংবাদ সম্মেলনে টুর্নামেন্টের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়

ভারতের বিহার রাজ্যের পাটনায় প্রথম নারী বিশ্বকাপ কাবাডি হয়েছিল ২০১২ সালে। দীর্ঘ বিরতির পর গত ১–১০ জুন দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপও বিহারেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিহার থেকে সরিয়ে সেটি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হায়দরাবাদে, হওয়ার কথা ছিল ৩ থেকে ১০ আগস্ট। টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে গত ২৬ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে দলও ঘোষণা করে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন। কিন্তু দল ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরই বিশ্বকাপ স্থগিতের ঘোষণা আসে। পরদিনই  টুর্নামেন্টটি আয়োজনে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দেয় আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশন। বাংলাদেশ দ্রুতই তাতে সাড়া দেয়।

কাবাডি ফেডারেশন কেন সব খরচ দিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে, এমন প্রশ্নে ফেডারেশন সম্পাদক বলেছেন, ‘কাবাডির টুর্নামেন্টে স্বাগতিক দেশই সব খরচ বহন করে। অতীতেও তাই হয়েছে, এটাই নিয়ম। দলগুলোকে থ্রি-ফোর স্টার হোটেলে রাখা হবে। তবে আইকেএফ দলগুলোর বিমান ভাড়া না দিলে আমরা এই টুর্নামেন্ট হয়তো করতাম না।’

টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নেওয়ার কথা আর্জেন্টিনা, চায়নিজ তাইপে, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইরান, ভারত, জাপান, কেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড, উগান্ডা এবং জাঞ্জিবার দলের। স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে পাকিস্তান ও পোল্যান্ডকে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় টুর্নামেন্টের সব খরচ দেবে কাবাডি ফেডারেশন

বিশ্বকাপ সামনে রেখে নারী দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প চলছে বিকেএসপিতে। ভারতের বাইরে এই প্রথম কাবাডির কোনো বিশ্বকাপ হচ্ছে। স্বাগতিক হিসেবে তাতে সেরা তিনে থাকার আশা বাংলাদেশের। ১৩ বছর আগে প্রথম নারী বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হয়েছিল ৫ম। পুরুষ বিশ্বকাপ হয়েছে তিনবার (২০০৪, ২০০৭, ২০১৬)। প্রথম দুটিতে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ।