
পাকিস্তানের দাপুটে হকির সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের হকির দুর্বলতা। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ৮–২ গোলে। আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও একই চিত্র: লাল–সবুজ বিধ্বস্ত, এবার স্কোরলাইন ৮–০। প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ হকি বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে স্বাগতিকেরা। অন্যদিকে পাকিস্তান জায়গা করে নিয়েছে বাছাইপর্বে। ১৬ নভেম্বরের তৃতীয় ম্যাচটি এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা।
বাংলাদেশ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে যাবে—এমন স্বপ্ন দেখেননি কেউই। দেখার কথাও নয়। বিশ্ব র্যাঙ্কিংই বলে দেয় পার্থক্য। পাকিস্তান ১৪তম, বাংলাদেশ ২৯তম। সেই ব্যবধান মাঠেও স্পষ্ট। বাংলাদেশ চেয়েছিল সিরিজে যতটা সম্ভব ভালো খেলে অভিজ্ঞতা বাড়াতে। সেই অভিজ্ঞতাই শেষমেশ বড় অর্জন।
প্রথম ম্যাচের ভুল শুধরে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করেছিলেন অধিনায়ক রেজাউল করিম। কিন্তু পাকিস্তানের শক্তি, সামর্থ্য, স্কিল আর টেকনিক সবই অনেক উঁচু স্তরের। তাই বেশির ভাগ সময় বল ছিল বাংলাদেশের অর্ধে, ম্যাচ ছিল একেবারেই একতরফা। সাবেক অলিম্পিক ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আটকানোর কোনো উপায় জানা ছিল না বাংলাদেশের। পাকিস্তান খেলায় বৈচিত্র্য এনেছে, আর বাংলাদেশ একই ধাঁচে খেলেছে। পার্থক্যটা তাই আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রোমান সরকার না থাকায় বাংলাদেশের রক্ষণে সমস্যা বেড়েছে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান ৮টি পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকে এক গোল করেছিল। আজ ১১টি থেকে করেছে ৪ গোল। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ৫ পিসি থেকে একটি গোল পেলেও আজ কাজে লাগাতে পারেনি একটিও। প্রথম দুই কোয়ার্টারেই পাকিস্তান পেয়ে যায় ৪–০ গোলের লিড।
পাকিস্তানের ওয়াহিদ আশরাফ করেছেন দুটি ফিল্ড গোল। ওয়াহিদের স্টিক থেকে এসেছে আরেকটি গোল। শহিদ হান্নান ও আম্মাদ ভাট পিসি থেকে, আফরাজ ফিল্ড গোল করেছেন। ম্যাচসেরা সুফিয়ান খান বলেন, ‘লক্ষ্য ছিল সিরিজ জেতা ও বাছাইপর্বে যাওয়া, তা অর্জন করেছি।’ বাংলাদেশের ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারিনি। পাকিস্তান বড় দল, তাদের কাছে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।’
এই দলে আছেন জুনিয়র বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া সাতজন খেলোয়াড়। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে লাগবে বলে আশা ওবায়দুলের।