ধূমপানের ক্ষতিকর দিক বলে শেষ করা যাবে না। বিশ্বে প্রতিবছর কমপক্ষে ৬৮ লাখ ধূমপায়ী বা তামাকজাত পণ্য ব্যবহারকারী মৃত্যুবরণ করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। কিন্তু মার্সেল ব্রজোভিচ কাতার বিশ্বকাপে যা করেছেন, তাতে ধূমপায়ীরা ধূমপানে আরও উৎসাহিত হতেই পারেন!
ধূমপায়ী হয়েও কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছেন ব্রজোভিচ। ক্রোয়েশিয়ান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এখন পর্যন্ত একাই অতিক্রম করেছেন ৫৬,২৬২ মিটার। আজ রাতে ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামার আগে এ তথ্য নেইমার–কাসিমিরোদের ভাবাতে বাধ্য করবে।
ধূমপায়ী হয়েও এমন ‘স্ট্যামিনা’র কারণে ব্রাজিলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমও গ্লোবো ব্রজোভিচকে ‘ক্লান্তিহীন ম্যারাথান দৌড়বিদ’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। ইন্টার মিলানের ৩০ বছর বয়সী তারকা জাপানের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচেও রেকর্ড ১৬,৬৩৯ মিটার দূরত্ব কাভার করেছেন। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
নির্ধারিত সময়ে ১–১ সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোল না হওয়ায় টাইব্রেকারে ম্যাচের মীমাংসা হয়। পেনাল্টি শুট আউটে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে দ্বিতীয় নিতে এসে সফল হন ব্রজোভিচ। ওই ম্যাচে প্রায় দেড় ঘণ্টা মাঠে ছিলেন। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেও খেলেছেন পুরো ৯০ মিনিট করে।
নকআউট পর্বে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম
খেলোয়াড় দেশ দূরত্ব অতিক্রম (মিটার)
মার্সেলো ব্রজোভিচ ক্রোয়েশিয়া ১৬,৬৩৯
আজেদিন উনাহি মরক্কো ১৪,৭১৫
সোফিয়ান আমরাবাত মরক্কো ১৪,৬৬৪
সের্হিও বুসকেতস স্পেন ১৪,৪৫১
পেদ্রি স্পেন ১৪,৩৭১
ব্রজোভিচকে যন্ত্রের মতো খেলতে দেখে প্রশ্ন উঠতেই পারে, এত শক্তি কোথায় পান তিনি? উত্তরটা সরাসরি না দিলেও ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করে বোঝাতে চেয়েছেন ব্রজোভিচ। ছবিতে তাঁকে দেখা গেছে, ম্যাচ শেষে বাথরুমে বসে আপন মনে সিগারেটে টান দিতে। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘মাঝেমধ্যে ধূমপান করি।’ এর আগে ইতালিয়ান সুপার কাপ জয়ের পর ইন্টার সতীর্থ অ্যালেক্স কোরদাজের সঙ্গেও বাথরুমে ধূমপান করতে দেখা গেছে ব্রজোভিচকে।
কাতার বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেশিবার দৌড়ানোর রেকর্ডও ব্রজোভিচের। জাপানের বিপক্ষে ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে ২৩৫ বার পা ফেলেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। মূলত গতি আর মনোবলের কারণেই লুকা মদরিচের মতো তারকাকে তুলে নিলেও ব্রজোভিচকে পূর্ণ সময় খেলিয়েছেন ক্রোয়াট কোচ জ্লাতকো দালিচ।
শেষ ষোলোর ম্যাচে দূরত্ব অতিক্রমের তালিকায় ব্রজোভিচের পর আছেন দুই মরোক্কান আজেদিন উনাহি ও সোফিয়ান আমরাবাত। শীর্ষ পাঁচের শেষ দুইজন স্পেনের অধিনায়ক সের্হিও বুসকেতস ও দলটির তরুণ তুর্কি পেদ্রি। তাঁরা প্রত্যেকে নকআউট পর্বে টাইব্রেকার পর্যন্ত মাঠে ছিলেন।
শেষ ষোলোয় দ্রুতগতিতে বল নিয়ে ছোটার রেকর্ডে দুইয়ে আছেন শীর্ষ গোলদাতা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফরাসি ফরোয়ার্ড পোল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের গতি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫.৩ কিলোমিটার তুলেছিলেন। তাঁর ওপরে আছেন শুধু নিকো উইলিয়ামস। মরক্কোর কাছে হেরে ছিটকে পড়ার ম্যাচে এই স্প্যানিয়ার্ড সর্বোচ্চ ৩৫.৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে দৌড়েছেন।
নকআউট পর্বে দ্রুততম দৌড়
খেলোয়াড় দেশ গতি (কিমি/ঘণ্টা)
নিকো উইলিয়ামস স্পেন ৩৫.৫
কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রান্স ৩৫.৩
ইসমাইলা সার সেনেগাল ৩৫.২
উসমান দেম্বেলে ফ্রান্স ৩৫
ক্রেপিন দিয়াত্তা সেনেগাল ৩৪.৯
আর ঘণ্টা দুয়েক পরই ব্রজোভিচের ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে ব্রাজিল। আর কাল এমবাপ্পের ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। ব্রাজিল–ইংল্যান্ডকে কোয়ার্টার ফাইনালের বাধা টপকাতে হলে নিশ্চিতভাবেই ব্রজোভিচ–এমবাপ্পেকে আটকানোর উপায় বের করতে হবে।