Thank you for trying Sticky AMP!!

জাতীয় শিশু দিবসে বঙ্গবন্ধু শিশু রোবটিক্স উৎসব

খুদে শিক্ষার্থীদের রোবটের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে হাজির হয় বঙ্গবন্ধু শিশু রোবটিক্স উৎসবে। ছবি: সংগৃহীত

কয়েক দিন আগে এক দুর্ঘটনায় হাত ভেঙেছে ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড স্কুলের শিক্ষার্থী সাবাবের। তবে সেটি মোটেই বাধা হয়নি সারা দিন রোবট নিয়ে মেতে থাকতে এবং দিন শেষে পদক জিতে নিতে। প্রথম আলোকে সে বলল, ‘আমার শুধু কটা আঙুল হলেই হয়, আমি সব করে ফেলতে পারি’!!!

জাতীয় শিশু দিবস এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন উপলক্ষে বেসরকারি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় সোবহানবাগ ক্যাম্পাসে হয়ে যাওয়া ‘বঙ্গবন্ধু শিশু রোবটিক্স উৎসব ২০১৯’-এ সাবাবের মতো শতাধিক শিশু দিনভর মেতে উঠেছিল এক অন্য রকম আয়োজনে। স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং দিয়ে গেম বানানো, নিজের রোবট নিজে বানানো, মোবাইল ফোন দিয়ে সাপ-রোবটকে আঁকাবাঁকা পথে চালনা করা, রোবটিক্স ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন সমাধানের আইডিয়া প্রদান—এমন সব প্রতিযোগিতার পাশাপাশি দিনভর তারা রোবটিক্সের জগৎ নিয়ে নানা আয়োজনে যুক্ত হয়ে যায়।

রোবট নিয়ে নিজেদের নানান প্রকল্প অন্যদের দেখাতে ব্যস্ত খুদে শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি খুদে রোবট বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আগামী দিনগুলোতে ডিজিটাল বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য দরকার রোবটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিংসহ প্রযুক্তির নানা বিষয়ে অগ্রগামী নতুন প্রজন্ম। ভবিষ্যতে এমন আয়োজনে সরকারের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির পরিচালক শহিদ-উল-মুনির, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ মাহবুবুল ইসমলাম প্রমুখ। বাংলাদেশে তৈরি মানবাকৃতির রোবট নিনোর সঙ্গে নৃত্যের মাধ্যমে সমাপনী পর্বটি শুরু হয়।

এর আগে অতিথিরা খুদে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখেন। কৃষিজমির আর্দ্রতা পরিমাপ করে সেটাকে কৃষিকাজের উপযুক্ত করবে চিটাগাং গ্রামার স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া কাজী মোস্তাহিদ লাবিবের ‘বেঙ্গল এগোবোট’। তার এই রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফসলকে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করবে, যা অধিক ফলনের নিশ্চয়তা দেবে। এ ছাড়াও একই স্কুলের তাফসিরের ‘রোবো-হোম’ ঘরের বৈদ্যুতিক পাখা, লাইট চালানোর পাশাপাশি সাহায্য করবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে। মাহাদি আলম মাসফি দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে তৈরি করেছে ‘সেভিয়র ড্রোন’ যা কিনা, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

জাতীয় শিশু দিবস এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু শিশু রোবটিক্স উৎসব ২০১৯’-এ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ছবি: সংগৃহীত

চিটাগাং গ্রামার স্কুলের (ঢাকা) শিক্ষার্থী তাফসীর তাহরীম শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘খুব ভালো লেগেছে আজকের এই রোবট প্রতিযোগিতা।’ তাফসীর গত বছর ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ২০তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে সোনাজয়ী দলের সদস্য। দেশের রোবট প্রতিযোগিতাকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে তুলনা করে বলে, এটা কোনোদিক থেকেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে কম কিছু হয়নি।

বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগের এ আয়োজনে সহ-আয়োজক ছিল ইন্টারনেট সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, বাংলাদেশ রোবটিক্স সোসাইটি, মাকসুদুল আলম বিজ্ঞানাগার ও সিরেনা টেকনোলজিস। পৃষ্ঠপোষকতা করেছে উইডেভস, ফাইবার এট হোম ও গিগাটেক রিমিটেড। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে টেকশহর, সি নিউজ, নাগরিক টিভি, ঢাকা এফএম ও কিশোর আলো।