নেপথ্যের কথা :বাগ

গ্রেস হপার (১৯০৬–১৯৯২)
গ্রেস হপার (১৯০৬–১৯৯২)

সাধারণভাবে ‘বাগ’ বলতে ছোট পোকামাকড় বা কীটপতঙ্গ বোঝালেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে কম্পিউটারের প্রোগ্রাম, সিস্টেম বা যন্ত্রে যেকোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতিকে বোঝানো হয়। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ‘বাগ’ শব্দটি বহুল প্রচলিত। আবার গোপনে কথা শোনার বা ধারণ করার জন্য লুকায়িত মাইক্রোফোনকেও ‘বাগ’ বলা হয়। কিন্তু কম্পিউটারের ত্রুটিকে কেন কীটপতঙ্গের সঙ্গে তুলনা করা হয়? নেপথ্যে আছে মজার এক গল্প।
বলা হয়ে থাকে যে কম্পিউটারবিজ্ঞানী ও মার্কিন নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল গ্রেস হপার ‘বাগ’ এবং ‘ডি-বাগ’ শব্দ দুটির প্রবর্তক। ১৯৪৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল প্রকৌশলী সেখানকার মার্ক-টু ক্যালকুলেটরের প্যানেল এফের ৭০ নম্বর রিলের (প্রচারযন্ত্র) ভেতর একটা ঘুণপোকা দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গেই সেটিকে সরিয়ে নিয়ে লগ বইয়ে আটকে রাখা হয়। সেটি এখনো সেভাবেই আছে। গ্রেস হপার তাতে শিরোনাম যোগ করেন, ‘প্রথম প্রকৃত “বাগ”-এর ঘটনা পাওয়া গেল’। কম্পিউটারের ত্রুটি নির্দেশে ‘বাগ’ শব্দটির এটাই প্রথম ব্যবহার বলে প্রচলিত আছে। কিন্তু আসলেই কি তাই? এভাবেই কি নতুন প্রয়োগে ‘বাগ’ শব্দটির ঠাঁই হলো অভিধানে?

আড়ি পাতার খুদে মাইক্রোফোন বাগ নামে পরিচিত


না, উদ্ভাবক এবং প্রকৌশলীরা এই ঘটনারও শতাব্দীকাল আগে থেকেই শব্দটি ব্যবহার করে আসছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি বিখ্যাত বিজ্ঞানী থমাস আলভা এডিসনও ১৮৭৮ সালে থিয়োডর পুস্কাস বরাবর লিখিত তাঁর একটি চিঠিতে ‘বাগ’ শব্দটি ব্যবহার করেন বলে ২০০৬ সালে প্রকাশিত গ্রন্থ দ্য ইয়েল বুক অব কোটেশনস-এ বলা হয়েছে। সে যাই হোক, ‘মথ ইন দ্য রিলে’ (প্রচারযন্ত্রে ঘুণপোকা) নামক মজাদার গল্পটি কিন্তু শুনতে ও বলতে ভালোই লাগে!
দেব দুলাল গুহ
সূত্র: কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড ডটকম