আপনি কি এখন ফেসবুকে সহজে লাইক-কমেন্ট করেন? অনেকেই এ প্রশ্নের নেতিবাচক উত্তর দেবেন। গত বছর থেকেই ফেসবুক ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে একধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এর প্রভাব ফেসবুকের ওপর পড়তে শুরু করেছে। ভুয়া খবর প্রচার রোধে ব্যর্থতা, ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত, প্রাইভেসি লঙ্ঘনের আশঙ্কায় ফেসবুকের ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের তথ্য অনুযায়ী, ফেসবুকের ব্যবহার কমছে। অবশ্য ফেসবুকের পক্ষ থেকে কিছু ক্ষেত্রে তাদের ব্যবহারকারী বেড়ে যাওয়ার দাবি করা হয়েছে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকের ব্যবহারকারী বাড়ার দাবি করলেও তাদের লাইক–শেয়ার ২০ শতাংশ কমে গেছে।
ব্যবসা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান মিক্সপ্যানেলের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর ফেসবুকের লাইক, শেয়ার ও পোস্টের পরিমাণ ২০ শতাংশ কমে যায়। ওই সময় যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফেসবুক থেকে তথ্য হাতিয়ে নেয়, যা মাসব্যাপী বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনায় ছিল।
গত বছরের এপ্রিল মাসের পর থেকে কয়েক মাসের মধ্যে ফেসবুকের ব্যবহার ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে দেখা যায়। পরে গ্রীষ্মের সময় ফেসবুকের ব্যবহার কিছুটা বাড়লেও পরে আবার কমতে শুরু করে।
ফেসবুক ঘিরে তথ্য ফাঁস কেলেঙ্কারি, প্রাইভেসি ও ঘৃণিত বক্তব্য ছড়ানোর বিষয়টি ঠেকাতে ব্যর্থতার কারণে ফেসবুক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৫ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এর বাইরে পিআর প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ফেসবুক সমালোচকদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ছাড়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত সহিংসতা উসকে দিতে ফেসবুকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করে, তাদের সাইটে দৈনিক ও মাসিক ব্যবহারকারী বাড়ছে। গত এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাইটটিতে দৈনিক ব্যবহারকারী ১৫৬ কোটি, যা ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে ৮ শতাংশ বেশি। মাসিক ব্যবহারকারীও বেড়েছে ৮ শতাংশ।
সম্প্রতি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ই–মার্কেটার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের ব্যবহার কমেছে। ফেসবুকে এখন ব্যবহারকারীরা গড়ে ৩৮ মিনিট সময় কাটাচ্ছে, যা ২০১৭ সালে ছিল ৪১ মিনিট। এ ছাড়া ফেসবুকের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে, এ সাইট তরুণ ব্যবহারকারীদের কাছে আকর্ষণ হারাচ্ছে। তরুণেরা ফেসবুক ব্যবহারের পরিবর্তে এখন অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল কার্যক্রমে সময় কাটাচ্ছে।
ফেসবুকের পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।