Thank you for trying Sticky AMP!!

চ্যাটজিপিটি কী, কেন এটি বিস্ময়কর উদ্ভাবন

চ্যাপজিপিটি মানুষ ও যন্ত্রের যোগাযোগ আরও বেশি স্বাভাবিক করে তুলবে

চ্যাটজিপিটি একটি শক্তিশালী মেশিন লার্নিং মডেল (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে যন্ত্রের শেখা)। ওপেন এআই নামের একটি প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করেছে। সহজাত ভাষা দিলে (ইনপুট) সেটি বুঝতে পারে চ্যাটজিপিটি এবং সেই কথার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে। এই ট্রান্সফরমার আর্কিটেকচারের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর এই মডেল। ২০১৭ সালে গুগলের গবেষকেরা ‘অ্যাটেনশন ইজ অল ইউ নিড’ নামে গবেষণাপত্রে এর কথা বলেছিলেন।

কী বৈশিস্ট্য চ্যাটজিপিটির?

চ্যাটজিপিটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো মানুষের মতো লেখা বা টেক্সট তৈরি করার ক্ষমতা। এর মানে হলো, কোনে একটি বিষয়ে একজন মানুষ যেমন প্রত্যুত্তর দিতে পারে, চ্যাটজিপিটি সে রকমই জবাব লিখে জানাতে পারে। এটি চ্যাটবটের (লিখে লিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কথোপকথন চালানোর প্রোগ্রাম) মতো অ্যাপগুলোর জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। চ্যাটজিপিটির লক্ষ্য হলো, এমন একটি কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া, যা প্রায় সহজাত মনে হয়।

চ্যাটজিপিটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো, স্বাভাবিক ভাষাকে যন্ত্র যাতে আরও বেশি করে বুঝতে পারে এবং বিস্তৃত পরিসরে এর প্রয়োগ করতে পারে, সেই ক্ষমতা চ্যাটজিপিটির রয়েছে। বর্তমানে ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং বা এনএলপি নিয়ে যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে, তারই প্রায়োগিক রূপ এই চ্যাটজিপিটি। ইন্টারনেট থেকে লিখিত কথোপকথনের একটি বড় তথ্যভান্ডার দিয়ে চ্যাটজিপিটিকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের অর্থ হলো, এটি মানুষের বিভিন্ন রকম ভাষাশৈলী, বিন্যাস এবং বিষয়গুলোর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। যত বেশি ধরনের কথোপকথন পাওয়া যাবে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রোগ্রামটি তত সঠিকভাবে কথার প্রত্যুত্তর স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিতে পারবে।

কেন এটি সম্ভাবনাময়?

এনএলপির আকর্ষণীয় অ্যাপগুলোর একটি হলো এই চ্যাটজিপিটি। এনএলপির গবেষণা ও কাজ হচ্ছে কম্পিউটার ও মানুষের মধ্যকার কথোপকথনকে কেন্দ্র করে। সহজাত বা প্রাকৃতিক ভাষা বোঝা এবং সাড়া দেওয়ার ক্ষমতাসহ, চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে মানুষ ও যন্ত্রের যোগাযোগে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে এখন মনে করা হচ্ছে।

যেমন চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে এমন চ্যাটবট তৈরি করা যেতে পারে, যা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা চালিয়ে যাবে। অনেক সময় এ প্রান্তের ব্যবহারকারী হয়তো বুঝতেও পারবেন না, যে অপর প্রান্তে আদতে কোনো মানুষ নেই। এই চ্যাটবটগুলো গ্রাহক পরিষেবা, ই-কমার্স এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো জনপ্রিয় ও বিস্তৃত অ্যাপগুলোতে ব্যবহার করা যাবে। অনলাইনভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো আরও বিশেষায়িত অ্যাপ্লিকেশনেও ব্যবহার করা যেতে পারে চ্যাটজিপিটি।

চ্যাটজিপিটির আরেকটি সম্ভাব্য প্রয়োগ হতে পারে অনুবাদের ক্ষেত্রে। একে এক ভাষার লেখা অন্য ভাষায় অনুবাদ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশ্বব্যাপী কাজ করে, এমন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কার্যকর প্রযুক্তি হতে পারে এটি। ই–মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট লেখা, এমনকি নিবন্ধ রচনাতেও চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রসঙ্গ বা বিষয় মানুষের মতো পাঠ করার ও বোঝার ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে চ্যাটজিপিটির, ফলে এটি মানুষের মতো করেই তথ্য জানাতে ও কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারবে। ফলে নানা কাজে মানুষের সময় ও শ্রম বাঁচানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

লেখক: ডিজিটাল পণ্য বিপণন পেশাজীবী