কেওক্রাডংয়ের চূড়ায় মোটরবাইক
কেওক্রাডংয়ের চূড়ায় মোটরবাইক

মোটরবাইকে কেওক্রাডং, এক রোমাঞ্চকর যাত্রা

পাহাড়কন্যা বান্দরবানে ১ অক্টোবর থেকে পর্যটকদের জন্য কেওক্রাডং ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে যাঁরা ঘুরতে পছন্দ করেন, তাঁরা এই সুযোগে পাহাড়ি অঞ্চলে বাইক নিয়ে ভ্রমণের শখ পূরণ করতে আগ্রহী হন। একটা সময় পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ ধরে বগা লেক থেকে কেওক্রাডং হেঁটে যাওয়া একমাত্র উপায় ছিল। কিন্তু এখন মোটরসাইকেল চালিয়ে বগা লেক থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটে মেঘ–পাহাড়ের মিতালি কেওক্রাডংয়ে পৌঁছানো যায়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রাস্তা কৌশল ও দক্ষতার অভাবে বাইকচালকদের জন্য হতে পারে ভয়ংকর। আবার আত্মবিশ্বাস, সঠিক চালনাপদ্ধতি ও নিয়ন্ত্রণ এ যাত্রা দিতে পারে রোমাঞ্চকর অনুভূতি।

কেওক্রাডংকে কাছ থেকে দেখতে সাতটি মোটরসাইকেলে আমরা ২২ অক্টোবর বান্দরবান থেকে কেওক্রাডংয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি। সাধারণ রাস্তার চেয়ে পাহাড়ি অঞ্চলের এ সড়কে বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা পুরোপুরি ভিন্ন। উঁচু–নিচু, আঁকাবাঁকা, কখনো খাড়া, আবার কখনো ধারালো বাঁক। এ যাত্রার অভিজ্ঞতা থেকেই জেনে নেওয়া যাক পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালানোর কৌশল।

সব যন্ত্রাংশ ঠিকঠাক আছে তো?

পাহাড়ি রাস্তায় যাত্রা শুরু করার আগে মোটরসাইকেলের সব যন্ত্রাংশ ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, পরীক্ষা করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়; বিশেষ করে ব্রেক, হর্ন ও থ্রটল (গতিনিয়ন্ত্রণের জন্য)। পাশাপাশি নিজের এবং আরোহীর নিরাপত্তার জন্য রাইডিং গিয়ার (হেলমেট, জ্যাকেট, গ্লাভস, বুট, লেগ ও নি-গার্ড) পরা ভালো।

রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে শুরু হয় আমাদের যাত্রা। বান্দরবান সদর থেকে ওয়াই জংশন পর্যন্ত রাস্তা কিছু অংশে ভাঙা। এ ছাড়া দুই পাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য অবলোকন করতে করতে আমরা রুমা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ট্যুরিস্ট অ্যাসিস্ট্যান্স সেন্টারে পৌঁছাই। এখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পর্যটকদের তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয়। এই ফরমের জন্য মাথাপিছু ৫০ টাকা করে জমা দিতে হয়। এই ফরম রুমা পুলিশ ফাঁড়ি, বগা লেক চেকপোস্ট ও কেওক্রাডং চেকপোস্টে দেখাতে হবে। কাজটি সাধারণত গাইডরা করে থাকেন।

বগা লেকের পথে

রুমা থেকে বগা লেক বা কেওক্রাডংয়ে যাওয়ার জন্য গাইড নেওয়া বাধ্যতামূলক। রুমা বাজারেই গাইড পাওয়া যায়। প্রতিদিনের জন্য একজন গাইডের পারিশ্রমিক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাইড সাধারণত বাইকচালকদের চালানোর কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। আমাদের গাইডের নাম ছিল প্রদীপ। তিনি আমাদের কোন কোন রাস্তায় ফার্স্ট বা সেকেন্ড গিয়ারের গতি ব্যবহার করতে হবে, কখন হর্ন দিতে হবে এবং নিচে নামার সময় ব্রেকের ব্যবহার সম্পর্কে মোটামুটি দিকনির্দেশনা দেন। বাইকচালকদের কাছে কথাগুলো অতটা আকর্ষণীয় না হলেও মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনলে যাত্রাপথ নিরাপদ হবে।

রুমা থেকে কেওক্রাডংয়ের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। রুমা বাজারে গিয়ে আমরা মধ্যাহ্নভোজ শেষ করে কেওক্রাডংয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করি। রুমার পুলিশের চেকপোস্ট অতিক্রম করার পর উঁচু–নিচু ও খাড়া রাস্তার শুরু হয়। এ সময় থেকে মোটরসাইকেল চালানোয় বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে।

রুমা বাজার থেকে বগা লেক যাওয়ার পথে একটি উঁচু পাহাড় রয়েছে। পাহাড়ের মাঝখানে রাস্তাটি উঁচু পথ ধরে বগা লেকের সঙ্গে মিশে যায়। এ রাস্তাও বেশ ভয়ংকর। বন্ধুর এই পথ পাড়ি দিতে প্রথম যে বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হলো আত্মবিশ্বাস। ৮০ সিসির বাইক নিয়েও কেওক্রাডংয়ে নিরাপদে পৌঁছানো যায়। দরকার নিয়ন্ত্রণের কৌশল ও মোটরসাইকেলে কখন কী ধরনের গতি রাখা দরকার, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা। উঁচুতে ওঠার সময় আগে থেকেই গাড়িকে নিচের গিয়ারে (ফার্স্ট ও সেকেন্ড) নিয়ে আসতে হবে। সেকেন্ড গিয়ারে বাইক যখন দুর্বল হতে শুরু করবে, তখনই ফার্স্ট গিয়ারে শক্তি পরিবর্তন করতে হবে। এ পরিবর্তন কিছুতেই শেষ মুহূর্তে করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে বাইক তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান না করলেই বিপদ।

আরেকটি ভুল হলো, শেষ মুহূর্তে এসে দ্রুত থ্রটল মোড়ানো। হঠাৎ থ্রটল বাড়িয়ে দিলে বাইকে গিয়ার ও গতির সমন্বয় না হলেও উঁচু রাস্তা নির্বিঘ্নে ওঠা যায় না। উঁচু রাস্তায় ওঠার আগেই ফার্স্ট গিয়ারে ৪ থেকে ৫ হাজার আরপিএমে থ্রটল রাখতে হবে, যা ধীরে ধীরে ৭ থেকে ৮ হাজার আরপিএম পর্যন্ত বাড়বে। কম গিয়ারে টর্ক বাড়িয়ে ধীরে ধীরে পাহাড়ি রাস্তায় ওঠাই বুদ্ধিমানের কাজ। পাশাপাশি সামনের মোটরসাইকেলের সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এতে অন্যের ভুলের খেসারত দেওয়া থেকে মুক্তি মিলবে।

ধারালো বাঁকের চ্যালেঞ্জ

ছবির মতো সুন্দর দৃশ্য পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়বে। তবে উঁচু পাহাড়ের রাস্তাগুলোয় অসংখ্য ধারালো বাঁক রয়েছে। তাই গতি ঠিক রেখে প্রতি মোড়ে মোড়ে হর্ন বাজিয়ে রাস্তা অতিক্রম করতে হবে। মোড় অতিক্রম করার সময় যথাসম্ভব আমরা নিজের পাশে থাকার চেষ্টা করছিলাম। মোড়ে ওভারটেকিংয়ের মনোভাব সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে অন্য গাড়ি বা মোটরবাইক অতিক্রম করে দ্রুত নিজের পাশে ফিরে আসা জরুরি। আগে যেতে হবে—এমন চিন্তা না করাই ভালো। প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের চেয়ে নিরাপদে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে ধীরে গন্তব্য পৌঁছালে বাইক চালানোয় নতুন মাত্রা যোগ হবে। পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালানো যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা, তবে এই রোমাঞ্চের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চ্যালেঞ্জও। একটু ভুল কৌশলেই ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

বগা লেকে পৌঁছালাম

দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে যাই বগা লেক। রাজধানী থেকে মোটরসাইকেলে করে একজন আরোহীসহ বগা লেক এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাকলায়েন মোস্তাক। গন্তব্য কেওক্রাডং। বগা লেক থেকে যে রাস্তা কেওক্রাডংয়ের দিকে গেছে, প্রথম থেকেই সেটি যথেষ্ট খাড়া এবং ঘন ঘন বাঁকে বন্ধুর পথ। কয়েকটি মোড় অতিক্রম করে সামনের খাঁড়া রাস্তায় তিনি আর বাইকটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না। বন্ধুসহ তিনি রাস্তায় পড়তেই তাঁর পেছনে থাকা আরও একজন বাইকচালকও পড়ে গেলেন। এ ক্ষেত্রে মূল সমস্যা ছিল অভিজ্ঞতা ও সঠিক সময়ে গিয়ার পরিবর্তন না করা।

নিচে নামার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা

পাহাড়ি রাস্তায় ওপরে উঠতে যতটা না সতর্ক থাকতে হয়, তার চেয়ে নামার ক্ষেত্রে দরকার হয় অতিরিক্ত মনোযোগ ও দক্ষতা। মোটরসাইকেলে যদি শুধু চালক থাকেন, সে ক্ষেত্রে কিছুটা আরাম মিললেও আরোহী সঙ্গে থাকলে কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে হয়। আরোহীকে চালকের শরীরের ভাষাকে অনুকরণ করতে হবে। বাইক যখন নিচে নামছে, তখন দুই পাশের পাদানিতে পায়ের পাতাগুলো শক্ত করে চেপে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে চালকের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়া থেকে মুক্তি মেলে।

ডানে বা বাঁয়ে মোড় নেওয়ার সময় চালকের সঙ্গে সঙ্গে আরোহীর শরীরকেও যেদিকে মোড় ঘুরছে, সেদিকে ঝুঁকে থাকতে হবে। যখন নিচে নামার পথ দীর্ঘ হবে, তখন ব্রেকের পাশাপাশি ইঞ্জিন ব্রেককেও ব্যবহার করলে যাত্রা হবে সহজ। সাধারণত ক্লাচ না চেপে ফার্স্ট বা সেকেন্ড গিয়ারে গতি না বাড়িয়ে মোটরসাইকেল চালালে ইঞ্জিন ব্রেক সক্রিয় হয়। ব্রেক একবারে না চেপে ধীরে ধীরে ব্রেকের লিভারে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। সামনে ও পেছনের ব্রেক একসঙ্গে ব্যবহার করলে চাকা ঘুরে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। টায়ারের অবস্থাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বেশি পুরোনো টায়ার অথবা যেসব টায়ারের গ্রিপ কমে গিয়েছে, সেসব টায়ার মাটি আঁকড়ে ধরে থাকতে পারে না। এতে অল্পতেই বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। উঁচু বা নিচু রাস্তা অতিক্রম করার পর কয়েক জায়গাতেই সমতল রাস্তা হয়েছে। ভ্রমণে ক্লান্তি আসলে এসব রাস্তায় বাইক থামিয়ে হালকা শরীরচর্চা বা ওঠবস করা যেতে পারে। এতে শরীরে ক্লান্তি দূর হবে। দল বেঁধে ভ্রমণের ক্ষেত্রে একজন দক্ষ দলনায়কের নেতৃত্বে নির্দেশনা অনুসরণ করলে নিরাপদ যাত্রার স্বাদ মিলবে।

যত গতি তত ক্ষতি—এ স্লোগান মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় গতিতে উঁচু-নিচু রাস্তাগুলো ঠান্ডা মাথায় অতিক্রম করতে হবে। দূরের রাস্তাগুলো দেখতে অনেক ভয়ংকর মনে হলেও কাছাকাছি গেলে সেগুলো স্বাভাবিক রাস্তার মতোই অতিক্রম করা যাবে। কিছুতেই মনে ভয় আনা যাবে না। সাধারণ বাইক যদি গন্তব্যে নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে পারে, আপনিও নিশ্চিন্তে পৌঁছে যাবেন কেওক্রাডংয়ে। দরকার ধৈর্য ও মনোবল। ‍যিনি পাহাড়ে বাইক চালানোর কৌশল সঠিকভাবে রপ্ত করতে পেরেছেন, তিনি যান্ত্রিক বাহনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে যাবেন নিরাপদে। তবে আরামে ভ্রমণ করার জন্য ১৫০ সিসি বা তার বেশি সিসির মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়াই উত্তম। স্বয়ংক্রিয় গিয়ারের স্কুটি বা স্কুটারের ক্ষেত্রে ব্রেকের ওপর নিয়ন্ত্রণ রেখে গতির সমন্বয় করতে হবে। হঠাৎ জোরে ব্রেক না ধরে মৃদু চাপ থেকে আস্তে আস্তে চাপ বাড়াতে হবে।

কেওক্রাডংয়ের চূড়ায় লেখক

কেওক্রাডংয়ের চূড়ায়

সূর্য যখন আলো বিলিয়ে পশ্চিমের আকাশে মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে আর মেঘেরা দখল নিচ্ছিল পুরো কেওক্রাডংয়ের, তখন আমরা পৌঁছে যাই পাহাড়ের চূড়ায়। এখানে একটাই কটেজ। এই পাহাড়েও রয়েছে লালাবমের তিনতলা থাকার হোটেল। মাথাপিছু ৩০০ টাকা করে এখানে রাত যাপন করা যায়। রয়েছে একটি ইট–পাথরের ছাতাসংবলিত বসার স্থান। যেদিকে তাকাই, সেদিকে মেঘের ওড়াউড়ি। এখন অন্ধকার, আবার মেঘ সরলেই আলোকিত।

আমরা ছিলাম মূল কেওক্রাডং থেকে একটু দূরে মেঘবাড়ি নামের কটেজে। কোনো কটেজেই সংযুক্ত ওয়াশরুমের সুবিধা মিলবে না। সকাল, দুপুর বা রাতের খাবার খেতে হবে আর্মি চেকপোস্টের পাশে লালা বমের হোটেলে। ডিম, ডাল, ভর্তা আর ভাতের প্যাকেজ জনপ্রতি ২০০ টাকা। ফার্মের মুরগি থাকলে ডিম ছাড়া এই প্যাকেজের মূল্য ২৫০ টাকা। শুকনা খাবার, বিস্কুট বা পানীয়—সবই পাওয়া যায় এই হোটেলে। তবে দূরত্ব ও বহন খরচ বেশি হওয়ায় প্রতিটি জিনিসের দাম একটু বেশি। বগা লেক বা কেওক্রাডংয়ে মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে রাখলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ।

রাত যাপন করে ফেরার পথে ভুল করে পরেছিলাম পিচ্ছিল কাপড়ের থ্রি–কোয়ার্টার প্যান্ট। এতে নিচে নামার সময় বাইকের আসন থেকে সামনের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছিলাম। যেহেতু আমার সঙ্গে আরোহী ছিল, সেহেতু হাতের ওপরও ভালো চাপ পরছিল। বগা লেক এসে এই প্যান্ট পরিবর্তন করে জিনসের প্যান্ট পরি। পাহাড়ে জিনস বা গাবার্ডিনের প্যান্ট পরা ভালো। এতে রাইডিংয়েও আলাদা সুবিধা মেলে।
নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করে মোটরসাইকেল চালালে নিরাপদে পাহাড়ের যেকোনো রাস্তায় চলাচল করা যাবে।

খাড়া পাহাড়ে ওঠার সময়

* সেকেন্ড ও ফার্স্ট গিয়ারে থ্রটল সমন্বয় করে বাইক চালাতে হবে।
* হঠাৎ গতি বাড়ানো পরিহার করতে হবে।
* ওভারটেকিংয়ের মনোভাব বাদ দিতে হবে।
* সামনের বাইকের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
* বাইকের সক্ষমতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।

তীব্র বাঁক পাড়ি দেওয়ার সময়

* বাঁকের আগে গতি কমাতে হবে।
* বুঝেশুনে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
* নিজের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হবে।
* বিপরীত দিক থেকে বাইক বা গাড়ি দেখলে সাহস হারানো যাবে না।
* বাঁকের বাইরে অন্য যানবাহনের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

নিচু রাস্তা থেকে নামা সময়

* দুই ব্রেকের সমন্বয় করে মোটরসাইকেল চালাতে হবে।
* খাড়া ঢালের রাস্তায় ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করতে হবে।
* সামনের ব্রেকে প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ করা।
* পেছনের ব্রেক ও ক্লাচের ভারসাম্য: দুই হাতে মৃদু নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
* প্রতিফলনকারী (রিফ্লেকটিভ) জ্যাকেট পরা ও হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখা।
* রাস্তার অবস্থা দেখে ব্রেক করতে হবে।

পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালানো মানে বাইকের সঙ্গে নিজের মানসিক সমন্বয় খুঁজে পাওয়া। এই পথে গতি নয়, নিয়ন্ত্রণই বাইকারের আসল শক্তি বলে মন্তব্য করেন আমাদের ভ্রমণসঙ্গী বাইকপ্রেমী মেহেদী হাসান। পাহাড়ি রাস্তায় বাইক চালানো একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর, অন্যদিকে তা দায়িত্বশীলতার পরীক্ষা। যাত্রা শুরুর আগে প্রস্তুতি, রাস্তায় শৃঙ্খলা ও পুরো যাত্রায় সতর্কতা—তিনটি বিষয় মাথায় রাখলে রোমাঞ্চের পাশাপাশি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে বলে উল্লেখ করেন আরেক সহযাত্রী আহসান উল আলম। কেওক্রাডংয়ের পাশাপাশি সাজেকসহ যেকোনো রাস্তায় এ কৌশলগুলো সমানভাবে কার্যকর।