টিকটক ক্রিয়েটর ডে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে
টিকটক ক্রিয়েটর ডে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে

বিশ্বের প্রতি ৮ জনে ১ জন এখন টিকটক ব্যবহারকারী

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর একটি টিকটক। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের প্রতি আটজনের মধ্যে একজন এখন এই মাধ্যম ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সৃজনশীলতা ও কারিগরি দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘টিকটক ক্রিয়েটর ডে’। নির্বাচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের নিয়ে আয়োজিত এই বিশেষ কর্মশালায় স্থানীয় পর্যায়ে আরও গুণগত ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরির আধুনিক কৌশলগুলো হাতে-কলমে শেখানো হয়।

অনুষ্ঠানে টিকটক দক্ষিণ এশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে মাধ্যমটির বর্তমান বৈশ্বিক প্রভাব তুলে ধরেন। তাঁরা জানান, বর্তমানে প্রতি মিনিটে টিকটকে ৬৬ হাজারের বেশি ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে। প্রতি মাসে অন্তত ১০০ কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী বিনোদন, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানার জন্য এই মাধ্যম ব্যবহার করছেন। শুধু বিনোদন নয়, বরং জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যম হিসেবেও টিকটক এখন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। এই বিশাল বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের কনটেন্ট নির্মাতারা যাতে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে পারেন, সেটিই ছিল এই কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য।

কর্মশালায় অংশ নেওয়া দেশের জনপ্রিয় নির্মাতারা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও আগামীর ভাবনার কথা ভাগাভাগি করেন। ক্রীড়াবিষয়ক কনটেন্ট নির্মাতা রাইয়ান রাজিন বলেন, ‘আমি মূলত খেলাধুলা নিয়ে কাজ করি। আমাদের দেশে খেলাধুলার বিশাল দর্শক রয়েছে। কীভাবে এই কনটেন্টগুলোকে আরও বৈশ্বিক মানদণ্ডে নিয়ে যাওয়া যায় এবং দর্শকদের সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত হওয়া যায়, তা নিয়ে এই কর্মশালা থেকে দারুণ কিছু কৌশল শিখেছি।’

প্রযুক্তি ও সাইবার সচেতনতা নিয়ে কাজ করা নির্মাতা টেক বাই আকরাম বলেন, ‘আমি প্রযুক্তিবিষয়ক বিভিন্ন দিক তুলে ধরি। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা ও সচেতনতা নিয়ে আমার ভিডিওগুলো অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। টিকটক এখন আর কেবল নাচের অ্যাপ নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে।’

তরুণ কনটেন্ট নির্মাতা এবং তরল প্রযুক্তির কর্ণধার আশিক আল বরাত বলেন, ‘টিকটক এখন সব বয়সীর জন্যই একটি কার্যকর মাধ্যম। এখানে খুব অল্প সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। এই কর্মশালার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি কীভাবে সঠিক টুলস ব্যবহার করে ভিডিওর সম্পাদনা এবং উপস্থাপনশৈলী আরও উন্নত করা সম্ভব।’

আলোচকেরা জানান, গত কয়েক বছরে টিকটকের ব্যবহারের ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন রান্নার রেসিপি থেকে শুরু করে গণিতের সমাধান, বিজ্ঞান কিংবা দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ছোট ছোট কৌশল শিখতে টিকটককে বেছে নিচ্ছেন। সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল লিটারেসি নিয়ে সচেতনতামূলক কনটেন্ট তৈরির হারও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কর্মশালায় টিকটকের দক্ষিণ এশীয় কর্মকর্তারা ভিডিওর রেজল্যুশন, সঠিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের নিয়ম এবং কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে সুস্থ কনটেন্ট তৈরির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা জানান, বাংলাদেশে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য একটি নিরাপদ ও সৃজনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে তাঁরা প্রতিনিয়ত কাজ করছেন।