বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রোবট তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। নিজ থেকে চিন্তা ও নড়াচড়া করতে সক্ষম সম্পূর্ণ প্রোগ্রামযোগ্য রোবটটি আকারে প্রায় অণুজীবের সমান হলেও যেকোনো পরিবর্তন অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
রোবটটির বিষয়ে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মার্ক মিসকিন বলেন, ‘আমরা স্বায়ত্তশাসিত রোবটকে আগের তুলনায় ১০ হাজার গুণ ছোট করেছি। এটি প্রোগ্রামযোগ্য রোবটের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন এক জগৎ খুলে দিয়েছে। এই রোবট মাছের ঝাঁকের মতো সমন্বিতভাবে দল বেঁধে চলতে পারে। এদের প্রপালশন সিস্টেমে বা চলন ব্যবস্থায় কোনো নড়াচড়া করার মতো যান্ত্রিক অংশ নেই, তাই এসব অত্যন্ত টেকসই। এসব রোবট মাইক্রোপিপেট দিয়ে স্থানান্তর করা যায়। এরা মাসের পর মাস পানিতে সাঁতার কাটতে পারে।’
পানির ঘনত্ব বেশি বলে একটি মাইক্রো–রোবটের জন্য সেখানে চলাচল করা অনেকটা আলকাতরার ভেতর দিয়ে হাঁটার মতো কঠিন। আর তাই রোবটটি চারপাশে একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা তরলের আয়নকে ধাক্কা দেয়, আর সেই আয়ন পানির অণুকে ধাক্কা দিয়ে রোবটটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড ব্লাউয়ের দল এই রোবটের ‘মস্তিষ্ক’ বা কম্পিউটার তৈরি করেছেন। এটি চালাতে মাত্র ৭৫ ন্যানোওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন, যা একটি স্মার্ট ওয়াচের তুলনায় ১ লাখ গুণ কম। এই সামান্য শক্তি সংগ্রহের জন্য রোবটটির বেশির ভাগ অংশজুড়ে থাকে সোলার প্যানেল।
রোবটটি আকারে খুবই ছোট হওয়ায় বিজ্ঞানীরা প্রচলিত অনেক কমান্ডকে সংকুচিত করে একটি বিশেষ নির্দেশে রূপান্তর করেছেন। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, অদূর ভবিষ্যতে এ ধরনের রোবট কাজে লাগিয়ে মানুষের শরীরের ভেতরে থাকা কোষের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব হবে।
সূত্র: এনডিটিভি