রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্বে অতিথি ও বিজয়ীরা
রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্বে অতিথি ও বিজয়ীরা

হয়ে গেল ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্ব

রাজধানীর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী আয়োজনের মাধ্যমে সম্পন্ন হলো বিশ্ব রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ (ডব্লিওআরওবিডি) ২০২৫-এর জাতীয় পর্ব। এ আয়োজনে তিনটি আঞ্চলিক পর্বের মাধ্যমে বাছাই করা প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় পর্বে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরাই চলতি বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের আন্তর্জাতিক আসরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ফিউচার ইনোভেটরস সিনিয়র শ্রেণিতে স্বর্ণপদক পেয়েছে তিন সদস্যের টিম ইনক্রেভো, ফিউচার ইনোভেটরস জুনিয়র শ্রেণিতে স্বর্ণপদক অর্জন করেছে। দুই সদস্যের টিম সাইবার স্কোয়াড এবং ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স শ্রেণিতে স্বর্ণপদক পেয়েছে ৩ সদস্যের টিম লেজি গো। এ ছাড়া প্রতি শ্রেণিতেই রৌপ্যপদক, ব্রোঞ্জপদকসহ মোট ১৪টি দলকে পদক দেওয়া হয় এবং ৫টি দলকে সম্মানজনক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত টিম সাইবার স্কোয়াড দলের আফিয়া হুমাইরা বলেন, ‘এই স্বর্ণপদক আমাদের জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণার। আমরা রোবোটিকসে আরও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চাই এবং দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্য অর্জন করতে চাই।’

এবারই প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতাটি আঞ্চলিক পর্যায়ে আয়োজন করা হয়েছে, যার ফলে দেশের বিভিন্ন শহরের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অঞ্চলে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন এবং সেখান থেকে জাতীয় পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রংপুরে। আঞ্চলিক পর্বে বাছাই করা ৭০টি দল জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করেছে।

রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ জাতীয় পর্বে কয়েকজন প্রতিযোগী

এবারের বিশ্ব রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২৫-এ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ফিউচার ইনোভেটর্স, ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স, রোবোমিশন ও রোবোস্পোর্টস শ্রেণি। প্রতিযোগিতাগুলো বয়সভিত্তিক তিনটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে: এলিমেন্টারি (৮–১২ বছর), জুনিয়র (১১–১৫ বছর) এবং সিনিয়র (১৪–১৯ বছর)।

জাতীয় পর্বের আয়োজন শুরু হয়েছে সকাল আটটায়। নিবন্ধনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে এবং পরক্ষণেই শুরু হয়েছে তাদের প্রতিযোগিতা। দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় ধাপে ধাপে চলতে থাকে বিচারকাজ। বিকেলে পাঁচটায় শুরু হয় সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী।

এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আবুল কাশেম মিয়া। তিনি বলেন, ‘এই আয়োজন দেশের তরুণ প্রতিভাদের রোবোটিকস ও প্রযুক্তিতে উৎসাহিত করবে এবং তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বিকাশে সহায়ক হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক হাসান সারওয়ার, আইআরআইআইসির পরিচালক খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (সিএসই) সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক খালেদ মাসুদ, ব্রেইন স্টেশন ২৩-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাইসুল কবির, ক্রিয়েটিভ আইটির সভাপতি মনির হোসেন, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সভাপতি মুনির হাসান প্রমুখ।

ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ (ডব্লিউআরওবিডি) ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) যৌথভাবে এই অলিম্পিয়াড আয়োজন করে। জাতীয় আয়োজনের আয়োজন হিসেবে ছিল ঢাকার ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। পুরো আয়োজনের সহযোগী হিসেবে ছিল ক্রিয়েটিভ আইটি ও ব্রেইন স্টেশন ২৩।