এমবিসিবির সংবাদ সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কারওয়ান বাজারে
এমবিসিবির সংবাদ সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার কারওয়ান বাজারে

এমবিসিবির সংবাদ সম্মেলন

এনইআইআরের বিরোধী নন মোবাইল ব্যবসায়ীরা, চান সমান সুযোগ

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়নের বিষয়ে সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ পিয়াস।

সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই এনইআইআরের বিরুদ্ধে নই। তবে এটি এমনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে দেশের মোবাইলশিল্প, ভোক্তা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং সার্বিক অর্থনীতি উপকৃত হয়। কোনোভাবেই বাজারে একচ্ছত্র ক্ষমতা বা অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিজস্ব কার্যালয়ে এমবিসিবি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আবু সাঈদ পিয়াস এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. আসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি শামীম মোল্লা এবং ভোরের কাগজ অনলাইন বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।

পিয়াস মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর তাঁকে ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান সোহেলকে বাসা থেকে অন্যায়ভাবে ডিবি অফিসে নিয়ে গিয়ে আটকানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে এভাবে তুলে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে চিঠি পাঠালে আমরা যেকোনো সময় স্বেচ্ছায় হাজির হতাম।’

পিয়াস জানান, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পূর্ব পরামর্শ ছাড়াই এনইআইআর হঠাৎ বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ২০ লাখের বেশি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে অবিক্রীত মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রি করা সম্ভব নয়; এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। আমদানির ক্ষেত্রে নতুন শর্ত, বিশেষ করে প্রস্তুতকারকের সঙ্গে বাধ্যতামূলক চুক্তির নিয়ম উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা পরিচালনাকে জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ করে তুলছে।

২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কিছু নির্দিষ্ট প্রস্তুতকারক গোষ্ঠী প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-সুবিধা পেয়েছে বলে পিয়াস বলেন, তবু তারা প্রতিবেশী দেশের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ বেশি দামে স্মার্টফোন বিক্রি করছে, যা বাজারে অস্বাভাবিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। তাঁর দাবি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একতরফা আমদানি নীতিমালার কারণে মোবাইল হ্যান্ডসেট খাত অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মোবাইল ব্যবসায় খাতের স্থিতিশীলতা বিবেচনায় বিটিআরসিকে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো প্রস্তুতকারকের সঙ্গে বাধ্যতামূলক চুক্তিপত্র বাতিল করা, বিল অব এন্ট্রি জমা দিলেই হ্যান্ডসেটের স্বয়ংক্রিয় রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করা, অবিক্রীত হ্যান্ডসেট বিক্রির জন্য কমপক্ষে এক বছরের অতিরিক্ত সময় প্রদান, বিদেশি হ্যান্ডসেটে ৫৭ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনা, স্থানীয় প্রস্তুতকারকদের খুচরা ব্যবসায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা, একাধিক মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে এনইআইআর নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু করা এবং গবেষণাভিত্তিক, বাস্তবসম্মত ও অংশীজন অন্তর্ভুক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা।