সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে

অনলাইনে পোস্টিং জিরো ট্রেন্ডে মেতেছেন তরুণ-তরুণীরা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি এখন বিশ্বব্যাপী এক বড় সমস্যা। মানসিক স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। আর তাই অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছেন।

সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত একটি জরিপে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের পরিমাণ বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। শুনতে অবাক লাগলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ, বিজ্ঞাপনের আধিক্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি আধেয়ের (কনটেন্ট) কারণে এমনটা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনাকেই ‘পোস্টিং জিরো’ বলা হচ্ছে। এই ট্রেন্ডের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত পোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছেন।

৫০টি দেশের আড়াই লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন অনলাইনে ব্যক্তিগত জীবনের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের প্রবণতা ক্রমে কমে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার প্রায় ১০ শতাংশ কমে গেছে। এই পতনের নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম।

মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্কের সাংবাদিক কাইল চেয়কা তাঁর সাপ্তাহিক কলাম ইনফিনিট স্ক্রলে প্রথম পোস্টিং জিরো শব্দটি ব্যবহার করেন। চেয়কা পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফিডে বন্ধুদের দৈনন্দিন জীবনের তুচ্ছ ঘটনার তথ্য বা ছবি দেখা যেত বেশি। বর্তমানে এই প্রবণতা কমে গেছে বলা যায়।

কাইল চেয়কা তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘আমরা হয়তো পোস্টিং জিরোর দিকে এগোচ্ছি। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে সাধারণ মানুষ যাঁরা পেশাদার নন, তাঁরা অতিরিক্ত প্রকাশ থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা বন্ধ করে দেন। পোস্টিং জিরো মানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ধারণাগত সমাপ্তি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন পতনকে ‘ডেড ইন্টারনেট থিওরি’র মাধ্যমেও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই তত্ত্ব অনুসারে, অনলাইনে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে বেশির ভাগ কনটেন্ট আর প্রকৃত মানুষের তৈরি করছে না। বিভিন্ন বট, এআই মিলে কনটেন্ট তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। ফলে অনেকেই আগ্রহ হারাচ্ছেন।

সূত্র: দ্য প্রিন্ট