আমরা প্রতিদিন অনলাইন বা অফলাইনে নানা ধরনের কিবোর্ড ব্যবহার করি। অধিকাংশ কিবোর্ডে শিফট বাটন ও স্পেসবার দেখা যায়।
হরফের সমস্যা সমাধানে এসেছে শিফট বাটন
ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে যখন প্রথম টাইপরাইটার বাজারে আসে, তখন কিবোর্ডে প্রতিটি অক্ষরের জন্য আলাদা কি ছিল না। বড় হাতের অক্ষর লেখার জন্য পুরো এক সেট আলাদা বোতাম ব্যবহার করতে হতো। এতে কিবোর্ড বড় ও ভারী হয়ে যেত। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৮৭৮ সালে রেমিংটন অ্যান্ড সন্স একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করে। একই অক্ষরের ছোট ও বড় হাতের পার্থক্য করতে শিফট ফাংশন চালু করে। এক বোতাম চেপে অন্য বোতাম চাপলে বড় হাতের অক্ষর বা বিশেষ চিহ্ন লেখা যায় তখন থেকে।
টাইপরাইটারের যুগে শিফট কি সাধারণত কিবোর্ডের বাঁ দিকে ছিল ও আঙুল দিয়ে চাপা হতো। তখনকার যন্ত্রে শিফট করতে অনেক শক্তি প্রয়োজন হতো। কারণ, পুরো টাইপরাইটারের অক্ষরের সেটটিই যান্ত্রিকভাবে ওপরে–নিচে সরে যেত। এ জন্য শিফট কি লম্বা রাখা হতো, যেন আঙুল দিয়ে সহজে চাপা যায়।
কম্পিউটার কিবোর্ড যখন টাইপরাইটারের নকশা অনুসরণ করে তৈরি হয়, তখনো একই নিয়ম বজায় থাকে। কোয়ার্টি লেআউট টাইপরাইটার লেআউট থেকে এসেছে। শিফট বারের দৈর্ঘ্যও একইভাবে অনুসরণ করা হয়। বড় শিফট কি থাকায় ব্যবহারকারীরা সহজে আঙুলের নাগালে পান। বিশেষ করে টাচ টাইপিং শেখার ক্ষেত্রে এটি বেশ সহায়ক। ডান ও বাঁ দুপাশেই শিফট কি রাখা হয়, যেন ডান এবং বাঁ হাতে আলাদা আঙুল দিয়ে ব্যবহার করা যায়।
কিবোর্ডে সবচেয়ে বেশি যে বাটন চাপা হয়
অন্যদিকে কিবোর্ডে স্পেসবারের আকার বড় হওয়ার ইতিহাসে শুরু হয় টাইপরাইটার থেকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর টাইপরাইটারে শব্দের ফাঁক দিতে একটি বিশেষ বার ব্যবহার করা হতো। এটি ছিল লম্বা কাঠ বা ধাতব দণ্ড, যাকে বলা হতো স্পেসিং বার। প্রতিটি শব্দের পর ওই দণ্ড চাপতে হতো, যেন কাগজে একটি ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। ঘন ঘন ব্যবহৃত হয় বলে স্পেসবার লম্বা করে রাখা হয়। দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে সহজে চাপার জন্য বড় রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে কম্পিউটার কিবোর্ড যখন টাইপরাইটারের আদলে তৈরি হয় তখনো স্পেসবার বড় রাখা হয়। লেখার সময় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বাটন হচ্ছে স্পেসবার। প্রতিটি বাক্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় ব্যবহারকারীকে শব্দের মাঝে ফাঁকা রাখতে স্পেসবার চাপতে হয়। যদি এই বোতাম ছোট হতো তবে বারবার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূত্র: কম্পিউটার হোপ