তাপনিরোধক নতুন উপাদান প্রদর্শন করছেন বিজ্ঞানীরা
তাপনিরোধক নতুন উপাদান প্রদর্শন করছেন বিজ্ঞানীরা

শীতে ভবন গরম রাখতে তাপনিরোধক নতুন উপাদান তৈরি

শীতের সময় ভবনকে উষ্ণ রাখতে হিটার ব্যবহারসহ নানা কৌশল ব্যবহার করা হয়। হিটারের মাধ্যমে ঘর উষ্ণ করা হলেও জানালা দিয়ে তাপ বেরিয়ে যাওয়ায় জ্বালানির অপচয় হয়। এ সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ভবনের তাপনিরোধক নতুন উপাদান তৈরি করেছেন। মেসোপোরাস অপটিক্যালি ক্লিয়ার হিট ইনসুলেটর বা মোচি নামের এই ইনসুলেটর মূলত সিলিকনভিত্তিক একটি জেল, যা আণুবীক্ষণিক ছিদ্রের ভেতর বাতাসকে আটকে রাখে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, অ্যারোজেল নামের একটি উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন রোভারে থাকা সংবেদনশীল যন্ত্রকে প্রচণ্ড ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। অ্যারোজেল দেখতে কিছুটা ঘোলাটে বা জমাটবদ্ধ ধোঁয়ার মতো। অন্যদিকে মোচি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা শতভাগ স্বচ্ছ। এতে জানালার দৃশ্য বা আলো বাধাগ্রস্ত হয় না। পদার্থবিদ ইভান স্মালইউখ জানান, এই উপাদানের ভেতরে বাতাসের পকেট মানুষের চুলের চেয়ে কয়েক গুণ পাতলা। সাধারণ গ্যাসে অণু একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষের মাধ্যমে তাপ পরিবহন করে। আর মোচির ভেতরের ছিদ্র এতই ছোট যে সেখানে বাতাস চলাচলের জায়গা পায় না। বিভিন্ন অণু একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পরিবর্তে ছিদ্রের দেয়ালে বাধা পায়। ফলে তাপ এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতে পারে না।

মাত্র পাঁচ মিলিমিটার পুরু মোচির একটি পাত আগুনের শিখার তাপ থেকে মানুষের হাতের তালুকে রক্ষা করতে পারে। এই উপাদান কাচের ওপর লাগানো থাকলে বোঝা যায় না। মোচি মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ আলো প্রতিফলিত করে। ভবিষ্যতে বিভিন্ন জানালার ভেতরের দিকে পাতলা শিট হিসেবে এটি ব্যবহার করা যাবে। ফলে কম খরচে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। উপাদানটি কাজে লাগিয়ে চাইলে মেঘলা দিনে সূর্যের তাপ ধরে রেখে পানি গরম করার পাশাপাশি ঘরও গরম রাখা যাবে।

তাপনিরোধক নতুন উপাদানটির ৯০ শতাংশই বাতাস থাকায় এটির তাপনিরোধক ক্ষমতা বেশি বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে বাণিজ্যিক উৎপাদন প্রক্রিয়া বেশ শ্রমসাধ্য হওয়ায় খুব শিগগির উপাদানটি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনা সম্ভব হবে না বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস