Thank you for trying Sticky AMP!!

ডাইনোসর

মিরপুর থেকে মতিঝিল যেতে ডাইনোসরের কত সময় লাগত

গুগল ম্যাপের হিসাবে, ঢাকার মিরপুর ১২ থেকে মতিঝিলের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। এই দূরত্ব হেঁটে যেতে আপনার সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ৫ মিনিটের মতো। যানজট না থাকলে গাড়িতে চড়ে যেতে সময় লাগবে ৫২ মিনিট। যানজট থাকলে মতিঝিল পৌঁছাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্তও সময় লাগতে পারে। তবে মেট্রোরেলে চড়ে মিরপুর থেকে আধা ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছানো যায় মতিঝিলে। একই দূরত্ব হেঁটে যেতে ডাইনোসরদেরও সময় লাগত আধা ঘণ্টার মতো। কারণ, বিশাল আকারের ডাইনোসরদের হাঁটার গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার।

ডাইনোসর ১৬ কোটি বছরেরও বেশি সময় ধরে পৃথিবী শাসন করেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ডাইনোসরের হাঁটার ধরন ছিল আলাদা। আর তাই ট্রায়াসিক যুগের শুষ্ক জলবায়ুতে বড় সুবিধা পেত তারা। ডাইনোসর প্রজাতির মধ্যে ব্র্যাকিওসরাস, ভেলোসিরাপ্টর, ট্রাইসেরাটপসসহ নানা প্রজাতি সেই সময় পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াত। পৃথিবীতে ডাইনোসরদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের রহস্য হিসেবে তাদের হেঁটে চলার কৌশলকে অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।  

Also Read: পৃথিবীর বুকে দৌড়ে বেড়ানো শেষ প্রজাতির ডাইনোসর এটি

নতুন গবেষণা বলছে, ২৫ কোটি বছর আগে ট্রায়াসিক যুগের শেষ থেকে ৬ কোটি বছর আগের ক্রিটেসিয়াস যুগে পৃথিবীতে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছিল ডাইনোসররা। রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে ডাইনোসরদের বেঁচে থাকার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পরিবেশগত অনেক সংকট থাকলেও দীর্ঘদিন ডাইনোসর পৃথিবীতে আধিপত্য ধরে রেখেছিল। ডাইনোসররা প্রথমে দুই পায়ে হাঁটত। পরবর্তী সময়ে চার পায়ে হাঁটা ডাইনোসরের দেখা মেলে। দুই ও চার পায়ে হাঁটার ফলেই ডাইনোসর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।

Also Read: অতিকায় ডাইনোসর লোপ পেলেও যে মাছি এখনো টিকে রয়েছে

ডাইনোসর অ্যাভেমেটাটারসালিয়া নামে পরিচিত একটি গোষ্ঠীর অংশ ছিল। আধুনিক সরীসৃপেরা সিউডোসুচিয়া গোষ্ঠীর উত্তরাধিকার। আধুনিক কুমিরের পূর্বপুরুষ ছিল এরা। গবেষকেরা ২০৮ প্রজাতির অ্যাভেমেটাটারসালিয়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর পায়ের হাড়ের জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করেছেন। আবির্ভূত হওয়ার প্রথম দিকে সিউডোসুচিয়া প্রাণীরা বৈচিত্র্যময়ী ছিল। কিছু সিউডোসুচিয়ান পায়ে হেঁটে চলাচল করত। প্রথম দিকে সব প্রাণীই হামাগুড়ি দিয়ে চলাচল করলেও ডাইনোসর শুরু থেকেই দুই পায়ে হাঁটত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ ভালো দৌড়াতে পারত ডাইনোসর। এর ফলে দ্রুত নিজেদের রক্ষা করার পাশাপাশি শিকার করতে পারত তারা। সেই সময় ট্রায়াসিক যুগে পৃথিবীর পুরো আবহাওয়া বদলে যায়। শুকনো জলবায়ু দেখা যায়। ট্রায়াসিক সময়ের ডাইনোসররা বিশাল আকারে বিকশিত হয়।

যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যামি শিপলে জানিয়েছেন, ট্রায়াসিক সময়ে খাদ্যের বেশ সংকট ছিল। ট্রায়াসিক যুগের শেষে বিলুপ্তির কারণে বেশির ভাগ সিউডোসুচিয়া প্রাণীরা হারিয়ে যায়। তবে সে সময় প্রায় ১০ মিটার লম্বা ডাইনোসর সারা পৃথিবী দাপিয়ে বেড়াত। এ সময় কিছু ডাইনোসর পালকের সাহায্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ও দক্ষ শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারত। প্রথম দিকে ধারণা করা হয়, ডাইনোসররা জিরাফের মতো হাঁটত। চার পায়ের জিরাফের হাঁটা কিছুটা আলাদা। হাঁটার সময় জিরাফের ডান দিকের দুই পা একসঙ্গে সামনে গেলেও বাঁ দুই পা পেছনে থাকে। নতুন গবেষণা বলছে, ডাইনোসররা হাতির মতো একটি পা সামনের মাটিতে রেখে পেছনের পা সামনে নিত।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স