শনি গ্রহের বরফে আবৃত এনসেলাডাস চাঁদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ)। উচ্চাভিলাষী এ পরিকল্পনার আওতায় শনি গ্রহে অরবিটার ও ল্যান্ডার নামের দুটি মহাকাশযান পাঠানো হবে। ল্যান্ডার মহাকাশযানটি কয়েক কিলোমিটার বরফ ভেদ করে ড্রিল করার পরিবর্তে সরাসরি প্রাকৃতিক প্লাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে। একই সময়ে অরবিটার ওপর থেকে এনসেলাডাসের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে। এ পদ্ধতিতে এনসেলাডাসে ভিনগ্রহের জীবন আছে কি না, তা জানা যাবে।
এনসেলাডাস একটি ছোট বরফে আবৃত চাঁদ। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ক্যাসিনি মিশনের মাধ্যমে চাঁদটির ভূপৃষ্ঠের নিচে মহাসাগর থাকতে পারে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আর তাই ইএসএর বিজ্ঞানীরা এনসেলাডাস থেকে নির্গত শক্তিশালী প্লাম বা জলীয় বাষ্প, বরফকণা ও জৈব যৌগের তথ্য সংগ্রহ করতে চান। ইএসএ আশা করছে, এনসেলাডাসে মহাকাশযান পাঠালে পৃথিবীতে বাইরে মাইক্রোবিয়াল বা আদিম জীবনের অস্তিত্ব আছে কি না, তা জানা যাবে। মিশনটি বহির্জাগতিক জীবনের চলমান অনুসন্ধানে একটি বড় সাফল্য হতে পারে।
এই মিশনে দুটি মহাকাশযানের মধ্যে শক্তিশালী সমন্বয় থাকবে বলে জানা গেছে। অরবিটার ওপর থেকে এনসেলাডাসের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে। পৃষ্ঠের মানচিত্র তৈরি করবে, পানির আধারের রাসায়নিক তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি শনি গ্রহের চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে চাঁদটির মিথস্ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবে। আর ল্যান্ডার টাইগার স্ট্রাইপস অঞ্চলের কাছাকাছি অবতরণ করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে। এ বিষয়ে ইএসএর বিজ্ঞানী জর্ন হেলবার্ট বলেন, ‘এনসেলাডাস এমন একটি স্থান, যেখানে আমরা সত্যিই মহাসাগরের সন্ধান পেতে পারি।’
ইএসএ সৌরশক্তি ব্যবহার করে মিশনটি পরিচালনা করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০৪০–এর দশকে উৎক্ষেপণের পরে মহাকাশযানটি শনি গ্রহের দিকে একটি দীর্ঘ আন্তগ্রহীয় যাত্রা শুরু করবে। এরপর ২০৫২ সালে এনসেলাডাসের পৃষ্ঠে পৌঁছানোর পর বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম শুরু করবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া