মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমিতে নতুন প্রজাতির তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও নর্থ ক্যারোলাইনা মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা। ‘জাভাসেফাল রিনপোচে’ প্রজাতির এই ডাইনোসরের দুটি পা ছিল। তৃণভোজী ডাইনোসরটির মাথার খুলি বেশ আলাদা, গম্বুজাকৃতির। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ডাইনোসরের জীবাশ্মটি প্রায় ১০ কোটি ৮০০ বছর পুরোনো। এই প্রজাতির ডাইনোসর আর্লি ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ডে পৃথিবীতে বসবাস করত।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন সন্ধান পাওয়া জীবাশ্মটি ডাইনোসরের অন্য জীবাশ্মগুলোর চেয়ে প্রায় দেড় কোটি বছর আগের। তাই জীবাশ্মটিকে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্যাকেসেফালোসর প্রজাতির জীবাশ্মের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো ও পূর্ণাঙ্গ বলা হচ্ছে। বয়সে ছোট ডাইনোসরটির মাথার খুলিতে থাকা গম্বুজটি একটি মাত্র হাড় দিয়ে তৈরি, যা পরের প্রজন্মের প্যাকেসেফালোস প্রজাতি থেকে ভিন্ন। জীবাশ্মটির মাথার পেছনের অংশে ছোট ছোট কাঁটা ও নোড ছিল।
নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও নর্থ ক্যারোলাইনা মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী লিন্ডসে জ্যানো জানান, অনেকেই মনে করেন যে এ ধরনের ডাইনোসর তাদের গম্বুজাকৃতির মাথা সামাজিক ও যৌন আচরণের জন্য ব্যবহার করত। ডোম শিকারির হাত থেকে বাঁচতে বা দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ছিল না। সম্ভবত নিজেদের আকর্ষণীয় করে তোলা ও জীবনসঙ্গী পাওয়ার প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করা হতো। কিশোর ডাইনোসরটির মাথার ডোম সম্পূর্ণ গঠিত হয়েছে। বলা যায়, পূর্ণবয়স্ক হওয়ার আগেই প্যাকেসেফালোসররা সামাজিক ও প্রজননমূলক আচরণে অংশ নিত।
বিজ্ঞানী জ্যানো আরও বলেন, জাভাসেফাল যে পরিবেশে বাস করত, তা ছিল হ্রদ ও পাহাড়ে ঘেরা একটি উপত্যকা। এর আশপাশে আরও অনেক গাছপালাভোজী ডাইনোসর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কচ্ছপ ও কুমিরের নিকটাত্মীয় প্রাণীর দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। জাভাসেফাল রিনপোচের আগে প্যাকেসেফালোসরদের সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান ছিল কম। এই জীবাশ্মে গ্যাস্ট্রোলিথস বা পেটে পাথর থাকারও প্রমাণ মিলেছে। এমন পাথর খেয়ে ডাইনোসররা খাদ্য হজমে গতি আনত।
সূত্র: এনডিটিভি