বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের ফাইল ছবি
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের ফাইল ছবি

বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের নিচে রহস্যময় শিলাস্তর শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা

আটলান্টিক মহাসাগরে মায়ামি, বারমুডা ও পুয়ের্তো রিকোবেষ্টিত সমুদ্রের বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে থাকা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে ঘিরে কয়েক দশক ধরেই মুখোরোচক নানা কাহিনি শোনা যায়। কোনো কোনো গল্পে রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে বিমান বা জাহাজ প্রবেশ করলে হারিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কখনো আবার অতিপ্রাকৃত শক্তি বা ভিনগ্রহবাসীদের উপস্থিতি নিয়ে চলে নানা তর্কবিতর্ক। তবে বিজ্ঞানীদের মতে, এর পেছনে অদ্ভুত কিছু নেই; বরং সামুদ্রিক ঝড় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগই এসব দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ। সেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের গভীরে একটি অস্বাভাবিক পুরু শিলাস্তর শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ২০ কিলোমিটার পুরু শিলাস্তরটি বারমুডার নিচের টেকটোনিক প্লেটের ভেতরে অবস্থিত।

বিজ্ঞানীরা সিসমিক তরঙ্গ বারমুডার নিচ দিয়ে ভ্রমণের সময়  কীভাবে পরিবর্তিত হয়, তা পর্যবেক্ষণ করে রহস্যময় শিলাস্তর শনাক্ত করেছেন। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের সামুদ্রিক ভূত্বক পুরো ম্যান্টলে রূপান্তর হয়নি, মাঝখানে একটি অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক পুরু শিলাস্তর রয়েছে। এই ধরনের কাঠামো অন্য কোনো সামুদ্রিক অঞ্চলে শনাক্ত করা যায়নি।

কার্নেগি সায়েন্সের সিসমোলজিস্ট উইলিয়াম ফ্রেজার জানিয়েছেন, সাধারণত সামুদ্রিক ভূত্বকের নিচেই ম্যান্টল থাকার কথা। বারমুডার ক্ষেত্রে ভূত্বকের নিচে ও টেকটোনিক প্লেটের ভেতরে অন্য একটি স্তর দেখা যাচ্ছে। বারমুডা একটি ওশেনিক সোয়েল বা উঁচু সমুদ্রতলের ওপর অবস্থিত, যা আশপাশের এলাকার তুলনায় অনেক বেশি উঁচু। সাধারণত এই ধরনের বৈশিষ্ট্যগুলো সক্রিয় আগ্নেয়গিরির হটস্পটের সঙ্গে যুক্ত থাকে। বারমুডাতে সর্বশেষ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ বছর আগে।

শিলাস্তরটি আশপাশের পাথরের তুলনায় কম ঘন। এই বিশেষ ধর্মের কারণেই এটি সমুদ্রতলকে স্থায়ীভাবে উঁচু করে রাখতে সাহায্য করছে। আগের গবেষণাগুলোতে দেখা যায়, বারমুডার লাভা কার্বন-সমৃদ্ধ ও ম্যান্টলের অনেক গভীর থেকে উৎপন্ন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রাচীন প্যানজিয়া মহাদেশ ভেঙে যাওয়ার সময়কার ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার ফলে এই স্তরটি তৈরি হয়েছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া