২০১১ সালের ৫ অক্টোবর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের পালো অ্যালটোতে মৃত্যুবরণ করেন অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস। অ্যাপলের আইফোন ৪এস ও সিরি উন্মোচনের এক দিন পরই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। গতকাল রোববার ছিল স্টিভ জবসের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। স্টিভ জবসের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া আবেগঘন এক বার্তায় কুক লেখেন, ‘স্টিভ ভবিষ্যৎকে দেখেছিলেন উজ্জ্বল ও সীমাহীন এক দিগন্ত হিসেবে। তিনি পথ দেখিয়ে গেছেন আর আমরা এখনো সেই আলোয় পথ চলছি। আমরা তোমাকে গভীরভাবে মিস করি, আমার বন্ধু।’
প্রতিবছরই টিম কুক তাঁর পূর্বসূরির স্মৃতিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। শুধু তা–ই নয়, কুপারটিনোর ওয়ান ইনফিনিট লুপে অবস্থিত অ্যাপলের পুরোনো সদর দপ্তরে স্টিভ জবসের কাজের জায়গাটি এখনো আগের মতোই সংরক্ষণ করে রেখেছেন তিনি। সেখানে কেউ প্রবেশ করেন না, কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি। সেটি আজ অ্যাপলের মূল দর্শন ও মূল্যবোধের প্রতীক হয়ে আছে। এ বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে কুক বলেন, ‘ওই অফিসে কেউ কখনো প্রবেশ করেনি। আমি স্টিভের সঙ্গে আমার সেই সংযোগকে ভালোবাসি, যেমন ভালোবাসি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর অটুট সম্পর্ককে। তাঁর কাছ থেকেই আমাদের মূল্যবোধ, সংস্কৃতি আর উদ্ভাবনের স্পৃহা প্রবাহিত হয়েছে।’
১৯৯৮ সালে স্টিভ জবস নিজে কুককে অ্যাপলে যোগ দিতে রাজি করান। সে সময় অ্যাপলের অবস্থা ছিল নাজুক। প্রযুক্তিবাজারে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। এমনকি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ডেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ডেল পর্যন্ত মন্তব্য করেছিলেন, ‘অ্যাপল বন্ধ করে দেওয়া উচিত’। কিন্তু স্টিভ জবসের দূরদৃষ্টি ও দৃঢ় নেতৃত্ব সেই পরিস্থিতি বদলে দেয়। তাঁর সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী চিন্তা ও দৃঢ় বিশ্বাসের ফলে অ্যাপল ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় এবং প্রযুক্তি জগতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করে।
জবসের মৃত্যুর পর টিম কুক জবসের দেখানো পথেই অ্যাপলকে এগিয়ে নিচ্ছেন। টিম কুক ভিন্ন নেতৃত্বশৈলীতে অ্যাপলকে আরও পরিণত করলেও জবসের দেখানো সেই আলোকিত পথ অ্যাপলের বিভিন্ন পরিকল্পনায় আজও দেখা যায়। এ বিষয়ে টিম কুক জানান, স্টিভ জবস এমন এক আলোকিত পথ দেখিয়ে গেছেন, যা এখনো উদ্ভাবনের দিকনির্দেশনা দেয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া