
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা আবারও শুরু করার ইস্যুতে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে বাগ্যুদ্ধ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা সরাসরি আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে। আর ইরান যুক্তরাষ্ট্রের শর্তগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত জুনে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাত শুরুর আগে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পাঁচ দফা পরমাণুসংক্রান্ত আলোচনা হয়েছিল। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ওই সংঘাত চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোয় হামলা চালিয়েছিল।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু আলোচনা চলাকালে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ। পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলো চায়, ইরান এ ধরনের তৎপরতা বন্ধ করুক। তবে তেহরান এ প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সহকারী দূত মরগ্যান ওর্তাগাস গতকাল নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, তেহরান যদি সরাসরি ও গঠনমূলক সংলাপের জন্য প্রস্তুত থাকে, তবেই কেবল ওয়াশিংটন তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে।
ওর্তাগাস আরও বলেন, যেকোনো ধরনের চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে তাঁরা যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেটি হলো ইরানের ভেতরে কোনো পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চলবে না।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাবানির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ শূন্য রাখার নীতিকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে ন্যায্য আলোচনার পথ নিশ্চিত হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা যেকোনো ন্যায্য ও অর্থবহ আলোচনাকে স্বাগত জানাই। তবে শূন্য সমৃদ্ধকরণ নীতির বিষয়ে জোরাজুরি করার মাধ্যমে তারা এনপিটির (নন–প্রলিফারেশন ট্রিটি) সদস্য হিসেবে আমাদের প্রাপ্য অধিকার লঙ্ঘন করছে এবং তারা ন্যায্য আলোচনার পথে নেই।’
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাতিসংঘ দেশটির ওপর অস্ত্র অবরোধসহ অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে। ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশগুলোর উদ্যোগে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়, যা ‘স্ন্যাপব্যাক’ নামে পরিচিত। রাশিয়া ও চীন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল। তারা অভিযোগ করেছে, ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। পারমাণবিক বোমা বানানো থেকে ইরানকে বিরত রাখার জন্য চুক্তিটি করা হয়েছিল।
তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছা নেই। তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের উদ্দেশ্য একেবারেই শান্তিপূর্ণ।