অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে রাত নেমে এসেছে। শহরের ব্যস্ত সড়কে ছুটছে নানা যানবাহন। এক বাসচালক হঠাৎ সড়কে একটি ছোট্ট কোয়ালা দেখতে পান। সেটির চারপাশে ছুটে ছুটে যাচ্ছে গাড়ি। বাসচালক ভয় পেয়ে যান। ছোট্ট প্রাণীটি কোনো গাড়ির নিচে না পড়ে যায়। তিনি বাস থামিয়ে তড়িঘড়ি করে নেমে আসেন। কোয়ালাটিকে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে বাসের ভেতর বসিয়ে দেন।
রাত তখন বেশ গভীর, তাই বাসে কোনো যাত্রী ছিল না। প্রাণীটিকে বাসে বসিয়ে তিনি প্রাণী উদ্ধার দলকে খবর দেন। তারা না আসা পর্যন্ত তিনি বাসের একমাত্র যাত্রীকে নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।
কোয়ালা রেসকিউ ব্রিসবেন সাউথ পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে একটি পোস্ট দেয়। তারা পোস্টে বলে, ব্রিসবেন সিটি গ্লাইডার বাসের চালক ক্যাম্প হিলের ওয়াইলস স্ট্রিটে কোয়ালাটি দেখেন এবং প্রাণীটিকে রক্ষা করার জন্য বাস থেকে নামেন।
কোয়ালাটি একটি ধাতব লাইট পোলে চড়ার চেষ্টা করছিল। সেটি পোল থেকে পড়ে যায়, নাকি গাড়ির নিচে চলে আসে, এই আশঙ্কা থেকে বাসচালক নেমে এসে নিজের জ্যাকেট খুলে কোয়ালাটির মাথা ঢেকে দেন। তারপর সেটিকে বাসের ভেতর নিয়ে আসেন।
এ ঘটনা জানানোর পাশাপাশি পোস্টে একটি সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়। বলা হয়, ‘যদি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হন, তবে কোয়ালা ধরতে যাবেন না। এদের নখ অত্যন্ত ধারালো ও বিপজ্জনক, কামড়ও দিতে পারে। ছোট্ট প্রাণীটিকে জোর করে ধরার চেষ্টা করলে সেটিরও ক্ষতি হতে পারে।’
আহত কোনো কোয়ালা পেলে কীভাবে উদ্ধার করবেন, সে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো আহত কোয়ালা দেখতে পান, সেটিকে হাতে দিয়ে না ধরেই আটকানো সম্ভব। সাহায্য পৌঁছানো পর্যন্ত দয়া করে এটাই করুন; বন্য প্রাণীর জন্য অন্ধকার জায়গা ভালো। আমরা সাধারণত তোয়ালে ঢাকা লন্ড্রি বাস্কেট ব্যবহার করতে পরামর্শ দিই, কিন্তু প্রয়োজনে বাসও চলে!’
প্রাণীটিকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে, নাম রাখা হয়েছে পেরি। সেটিকে পরে সেভেন হিলস বুশল্যান্ড রিজার্ভে ছেড়ে দেওয়া হয়।