
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় একটি ক্যাথলিক স্কুল থেকে বন্দুকধারীরা দুই শতাধিক মানুষকে অপহরণ করেছে। চলতি সপ্তাহে এটি নাইজেরিয়ার স্কুলে দ্বিতীয় গণ-অপহরণের ঘটনা।
গতকাল শুক্রবার নাইজার রাজ্যের পাপিরি এলাকার সেন্ট মেরিজ স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে নাইজার রাজ্যের কর্তৃপক্ষ আগেই সেখানকার সব আবাসিক স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল।
নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করা সংগঠন খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন অব নাইজেরিয়া বলেছে, গতকাল ভোরে হামলা চালিয়ে ২১৫ শিক্ষার্থী ও ১২ জন কর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে বন্দুকধারীরা।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নাইজেরিয়ায় নতুন করে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার ঘটনা বেড়েছে। গত সোমবার কেব্বি রাজ্যের একটি আবাসিক স্কুল থেকে ২০ জনের বেশি ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনা ঘটে। ছাত্রীদের সবাই মুসলিম বলে বিবিসিকে জানানো হয়েছে।
দক্ষিণের কোয়ারা রাজ্যের একটি গির্জাতেও হামলা হয়েছে। ওই গির্জায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালে হামলা চালিয়ে ২ জনকে হত্যা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়। অনলাইনে ধর্মীয় অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার চলছিল।
এদিকে বন্দুকধারীর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া নিরাপত্তা সংকট মোকাবিলায় নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু তাঁর বিদেশ সফর স্থগিত করেছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় সপ্তাহান্তে জি–২০ সম্মেলনও রয়েছে।
পুলিশ বলেছে, শুক্রবার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটা) দিকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা সেন্ট মেরিজ স্কুলে হামলা চালিয়ে হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে। সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে ‘ডাকাত’ হিসেবে পরিচিত।
ঘটনার পর পুরো এলাকায় ভয় ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবারগুলো উদ্বেগের সঙ্গে সন্তানদের খোঁজ পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ডমিনিক আদামু বিবিসিকে বলেন, ‘সবাই ভেঙে পড়েছেন…ঘটনাটা সবাইকে পুরোপুরি অবাক করে দিয়েছে।’
আদামু নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘মানুষ আমাদের দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ করছে।’
আদামুর মেয়েরাও সেন্ট মেরিজ স্কুলের শিক্ষার্থী। তবে তারা অপহরণের শিকার হয়নি।
এক অসহায় নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিবিসিকে বলেন, তাঁর ৬ ও ১৩ বছরের দুই ভাতিজিকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু চাই, তারা বাড়ি ফিরে আসুক।’
নাইজার রাজ্যের কর্তৃপক্ষ বলছে, গোয়েন্দা সূত্রে হামলার ঝুঁকির কথা জানতে পারার পর সরকারিভাবে স্কুলগুলোর সব বোর্ডিং সুবিধা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেন্ট মেরিজ স্কুলটি সে নির্দেশ অমান্য করেছিল।
অভিযোগের বিষয়ে এখনো স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।