
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ নিমরোজের রাজধানী জারাঞ্জ দখলের পাশাপাশি আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। দেশটির সীমান্ত এলাকাগুলো দখলে নিয়েছে তালেবানরা। পাশাপাশি আরও দুটি প্রাদেশিক রাজধানীর কাছাকাছি চলে এসেছে। দেশটির জওজান প্রদেশে তালেবানের সঙ্গে লড়াইয়ে ১০ সরকারি সেনা ও আবদুল রশিদ দস্তুম গ্রুপের একজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
জজওয়ানের ডেপুটি গভর্নর আবদুল কাদের মালিয়া বলেন, চলতি সপ্তাহে তালেবান জজওয়ান প্রদেশের রাজধানী সেবেরঘানে সহিংস হামলা চালায়। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে সরকারপন্থী মিলিশিয়া ফোর্সের কমান্ডার নিহত হন।
জজওয়ানের আরেক প্রাদেশিক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রদেশটির ১০টি জেলার মধ্যে ৯টি জেলা এখন তালেবানের দখলে। তারা এখন সেবেরঘানের দখল নিতে লড়াই করছে।
দেশটির দক্ষিণে হেলমান্দ প্রদেশে বেসামরিক লোকজনের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির কারণে সেখানে মানবিক সংকট দেখা গেছে। হেলমান্দের রাজধানী লস্করগাহ দখলে সপ্তাহব্যাপী লড়াইয়ে অনেক দোকান ও বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে লড়াই চলতে থাকায় অনেক মানুষ আটকা পড়েছে। লাখো মানুষের নিরাপত্তায় গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
কাবুলে একজন পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, লস্করগাহে সহিংসতা বেড়েছে এবং তা মূল্যায়ন করার কোনো উপায় নেই। দুই পক্ষই তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সাহায্য সংস্থার পক্ষ থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের কোনো পথ নেই।
লস্করগাহে মানবিক সাহায্য সংস্থা অ্যাকশন অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গারের অফিসে গত বৃহস্পতিবার বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মাইক বঙ্ক বলেন, ‘দুই পক্ষের লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে গেছে বেসামরিক লোকজন। তারা অনেকেই বাড়িছাড়া এবং লড়াইয়ের প্রথম শিকার হয়।’
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আফগান সরকারের মিডিয়া ইনফরমেশন সেন্টারের প্রধান দাওয়া খান মেনাপালকে শুক্রবার তালেবানরা রাজধানীর একটি মসজিদে গুলি করে হত্যা করেছে।
এর আগে গত বুধবার তালেবানের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়, তাদের ওপর বোমা হামলার প্রতিশোধ নিতে সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিরওয়াইস স্টানিকজাই বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্বর সন্ত্রাসীরা আবারও কাপুরুষোচিত কাজ করেছে এবং একজন দেশপ্রেমিক আফগানকে হত্যা করেছে।’
এই হামলার দায় স্বীকার করেছে তালেবান। এ গোষ্ঠীর মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, তালেবানরা বিশেষ আক্রমণ চালিয়ে আফগান সরকারের ওই কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে।