
চীনে করোনাভাইরাস ছড়ানোর শুরুতে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন হুবেই প্রদেশের উহানের চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং। এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে চীনের নাগরিকদের মধ্যে এক বিরল প্রতিক্রিয়া দেখা গেল। কারণ, চীনের নাগরিকেরা তাঁর মৃত্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই ক্ষোভের অন্যতম কারণ হলো ওই সতর্কবার্তা দেওয়ার পর পুলিশ লিকে তিরস্কার করেছিল। পুলিশের অভিযোগ ছিল, তিনি গুজব ছড়িয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পর চীনের সরকার-সমর্থিত ট্যাবলয়েডের সম্পাদক হু সি জিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েবুতে লিখেছেন, উহানের উচিত লি ওয়েনলিয়াংয়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া। উহান ও হুবেই প্রদেশের কর্মকর্তাদের উচিত হুবেই ও দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
দেখা যাচ্ছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর গোপন করতে চেয়েছিল উহানের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু লিসহ আরও আটজন এই ভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কর্মকর্তা জেং জুয়াং বলেন, ‘পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, আমাদের উচিত এই আটজনের প্রশংসা করা। কারণ, এটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই তাঁরা ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলেন।’
লির মৃত্যুর খবর দ্রুত ছড়িয়েছে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয়। তাঁর মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ব্যবহারকারীরা। একজন লিখেছেন, ‘চীনের অসংখ্য তরুণ গত রাতের পর আজ বুঝতে পারবেন, আমরা যতটা সুন্দর কল্পনা করি, ততটা সুন্দর নয় এই পৃথিবী।’
লির মৃত্যুর পর ওয়েবুতে দুটি হ্যাশট্যাগ চালু হয়েছে। এর একটি হলো ‘উহান সরকার লির কাছে ক্ষমা চান’। আরেকটি হলো ‘আমরা বাক্স্বাধীনতা চাই’। এই হ্যাশট্যাগ দুটির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে সেখানকার সরকার। তবে এর আগেই লাখো মানুষ এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছে।
এদিকে লির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কারণ, প্রথমে তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পরে আবারও হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করে, তিনি মারা গেছেন।
সিএনএনের বিশ্লেষণ