Thank you for trying Sticky AMP!!

মিয়ানমারে জান্তা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে: এইচআরডব্লিউ

সেনাশাসন তুলে নেওয়া ও অং সান সু চিসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে ছয় মাস ধরে মিয়ানমারের রাজপথে বিক্ষোভ চলছে

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ছয় মাস হতে চলেছে। দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। ছয় মাস পূর্তির প্রাক্কালে জান্তার বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আর বিগত দিনগুলোয় বিক্ষোভ দমনের নামে নিজ দেশের জনগণের ওপর হত্যা, নির্যাতন চালানোয় জান্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ তুলেছে অধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

স্থানীয় সময় আজ শনিবার মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের রাজপথে মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা লাল ও সবুজ রঙের পতাকা নিয়ে জান্তাবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে জান্তার সঙ্গে যেকোনো আলোচনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তাঁদের দাবি, শর্তমুক্ত ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হতে হবে জান্তা সরকারকে।

এদিকে নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আজ শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষদের ওপর সশস্ত্র দমন–পীড়ন চালিয়েছে জান্তা। আটক বিরোধীপক্ষের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। অনেককে হত্যা করা হয়েছে, যা মানবতাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সংগঠনটির এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, নিজ দেশের জনগণের ওপর চালানো দমন–পীড়ন, নির্যাতন ও হত্যার মাধ্যমে মিয়ানমারের জান্তা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে।

Also Read: জান্তাবিরোধীরা বিল দেওয়া বন্ধ করায় মিয়ানমারে বিদ্যুৎ–সংকট

তবে অধিকার সংগঠনটির এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে রক্তপাতহীন সেনা অভ্যুত্থান হয়। আটক করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির প্রভাবশালী রাজনীতিকদের। তাঁদের নামে করা হয় একাধিক মামলা। বাতিল করা হয় গত নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল। ওই নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পেয়েছিল। ভোটের ফল প্রত্যাখান করে অভ্যুত্থান ঘটায় জান্তা।

Also Read: মিয়ানমারে চিকিৎসকদের পিছু নিয়েছে জান্তা, বাড়ছে করোনার সংক্রমণ

অভ্যুত্থানের পরপরই রাজপথে বিক্ষোভে নামেন মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি দুটো— সেনাশাসন তুলে নেওয়া ও সু চিসহ রাজবন্দীদের মুক্তি। জান্তার দমন–পীড়নে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৯৩৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। আটক করা হয়েছে শিল্পী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ প্রায় সাত হাজার মানুষকে।

ছায়া সরকার গঠন করে গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত রাজনীতিকেরা। সব মিলিয়ে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকির মুখে রয়েছে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে জান্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তি নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ান। পাঁচ দফার ভিত্তিতে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে জোটের সদস্যরা।