Thank you for trying Sticky AMP!!

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় শত শত ভবনধস হয়েছে। আর এসব ভবনের নিচে আটকা পড়ে আছে মানুষ

তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প কেন এত ভয়াবহ

তুরস্ক-সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহত মানুষের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এই মাত্রার কোনো ভূমিকম্পকে সরকারিভাবে ‘গুরুতর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। ভূমিকম্পের ভয়াবহতার ক্ষেত্রে ফল্ট লাইনের বড় ভূমিকার কথা বলা হচ্ছে।

কোনো স্থানে ভূকম্পনের জন্য ফল্ট লাইনের বড় ভূমিকা রয়েছে। ভূত্বকের উপরিভাগের বিশাল খণ্ডকে টেকটোনিক ফল্ট বলা হয়। আর দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝে থাকা ফাটলকে ফল্ট লাইন বলা হয়। ভূমিকম্প সাধারণত এই ফল্ট লাইনের আশপাশে হয়ে থাকে।

গতকালের ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার ফল্ট লাইন ভেঙে গেছে। এ কারণেই সৃষ্ট ভূমিকম্পটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আর এই ফল্টের কাছাকাছি থাকা ভবনগুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশনের প্রধান অধ্যাপক জোয়ানা ফউর ওয়াকার বলেন, ‘এ রকম প্রাণঘাতী ভূমিকম্প গত ১০ বছরে দুটি ও তার আগের ১০ বছরে চারটি হয়েছে।’

Also Read: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে যা জানা গেল

ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে

তবে শুধু কম্পনের কারণেই এই ক্ষয়ক্ষতি হয় না। দেশটিতে থাকা ভবনগুলো কতটা দৃঢ়, সে ব্যাপারটিও প্রভাব ফেলেছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে ভোরে, তখন প্রায় সব মানুষই বাসায় এবং ঘুমে। এ কারণে ভবনধসে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, গাজিয়ানতেপ এলাকাটির বেশির ভাগ ভবনই শুধু ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা খুবই ভঙ্গুর। এই নাজুক ভবন সেখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের ভূমিকম্পের আঘাতে আরও ভঙ্গুর করে দিয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের আগ্নেয়গিরি এবং ঝুঁকি যোগাযোগ বিভাগের কারমেন সোলানা বলেন, দক্ষিণ তুরস্ক এবং বিশেষ করে সিরিয়ায় অবকাঠামোগুলো বেশির ভাগই ধসে গেছে। এ কারণে আটকে পড়াদের জীবন বাঁচানো এখন অনেকটাই নির্ভর করছে তাঁদের প্রতিক্রিয়া ও উদ্ধারকাজের ওপর। জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৪৮ ঘণ্টা পর বেঁচে যাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক কমে যায়।’

Also Read: ৮৪ বছর পর তুরস্কে আবার এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প

ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ইদলিব, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপ থেকে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করছেন উদ্ধারকর্মীরা। আলেপ্পো, সিরিয়া
হাসপাতালে শিশুসহ আহত মানুষদের চিকিৎসা চলছে। ইদলিব, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপের নিচে এক ব্যক্তির পা দেখা যাচ্ছে। আলেপ্পো, সিরিয়া
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহতদের ভিড়। ইদলিব, সিরিয়া
চিকিৎসাসেবার অপেক্ষায় এক শিশু। আলেপ্পো, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। জান্ডারিস, সিরিয়া
ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি ভবন। মালত্য, তুরস্ক
ভূমিকম্পে একটি আটতলা ভবন ধসে পড়েছে। সিরিয়া
ভূমিকম্পে আটতলা একটি ভবন ধসে পড়েছে। ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে। হামা, সিরিয়া
আহত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজাজ, সিরিয়া
হতাহত হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হচ্ছে। জান্ডারিস, সিরিয়া

যে এলাকায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি, সেখানে ২০০ বছরেরও বেশি সময় আগে থেকে ভয়াবহ কোনো ভূমিকম্প হয়নি। কোনো সতর্ক সংকেতও ছিল না। এ কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্প মোকাবিলা ও উদ্ধার অভিযানে ঘাটতি থেকে যাবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। অনেকে এখনো নিখোঁজ। এসব মানুষের বেশির ভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।

Also Read: ভূমিকম্পে তুরস্ক–সিরিয়ায় মৃত্যু ৩৮০০ ছাড়িয়েছে

তুরস্কের আদানা শহরে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে

প্রায় ৮৪ বছর পর গতকাল সোমবার তুরস্কে আবারও ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর আগে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ওই সময় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।

গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে এ ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। এরপর আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

তুরস্কের সরকারি হিসাব বলছে, ভূমিকম্পে তুরস্কে আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৮৩ জন। দেশটিতে ভূমিকম্পের সময় ও তার পরে ৪ হাজার ৭৪৮টি ভবন ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় তুরস্কে দুর্যোগকালীন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

Also Read: তুরস্কে ভূমিকম্পে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিখোঁজ

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা। ইদলিব, সিরিয়া
মৃত এক শিশুকে নিয়ে আসছেন এক ব্যক্তি। জান্দারিস, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপে স্বজনদের খোঁজে মানুষ। ইদলিব, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া এক শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন উদ্ধারকর্মীরা। জান্দারিস, সিরিয়া
শিশুসন্তানের মৃত্যুতে কাঁদছেন এক ব্যক্তি। জান্দারিস, সিরিয়া
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া একটি বাইসাইকেল। সানলিউফরা, তুরস্ক
উদ্ধার করে এক শিশুকে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। দিয়ারবাকির, তুরস্ক
ধ্বংসস্তূপ থেকে এক শিশুকে বের করা আনা হচ্ছে। জান্দারিস, সিরিয়া
ধ্বংসস্তূপ থেকে এক শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। জান্দারিস, সিরিয়া
চলছে উদ্ধারকাজ। পাশেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন এক ব্যক্তি। দিয়ারবাকির, তুরস্ক
উদ্ধারের পর এক শিশুকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আসছেন এক উদ্ধারকর্মী। ইদলিব, সিরিয়া