
আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। বিশেষত হিন্দুকুশ পর্বতমালায় প্রায়ই বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ অঞ্চলে ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল হওয়ায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশি।
পাকিস্তান সীমান্তসংলগ্ন আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ কুনারে স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৬। সরকারি হিসাবমতে, ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৬২২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার মানুষ।
এর আগে গত প্রায় সাড়ে তিন দশকে বেশ কয়েকবার আফগানিস্তানে ভয়াবহ কিছু ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। জেনে নেওয়া যাক সেসব ভূমিকম্পের খুঁটিনাটি।
২০২৩
ওই বছর আফগানিস্তানের হেরাত অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ তীব্রতার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ঘটনায় ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন ৯ হাজারের বেশি। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটি ছিল দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প।
একই বছর উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের কম জনবসতি অঞ্চল বাদাখশানে ৬ দশমিক ৫ তীব্রতার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ঘটনায় আফগানিস্তান ও সীমান্তবর্তী পাকিস্তানে অন্তত ১৩ জন নিহত হন।
২০২২
ওই বছরের জুনে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের দুর্গম পার্বত্য এলাকা পাকতিকায় ৬ দশমিক ১ তীব্রতার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ঘটনায় ১ হাজার ৩৬ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি ছিল যে আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করতে হয়েছিল।
এই ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে সেপ্টেম্বরে কুনার অঞ্চলে আবার ভূমিকম্প হয়। নিহত হন অন্তত ৮ জন। তবে এতে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ছিল কম।
২০১৫
আফগানিস্তানে সবচেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পগুলোর একটি আঘাত হেনেছিল ২০১৫ সালে। হিন্দুকুশে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৫। এ ঘটনায় আফগানিস্তান এবং প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ভারতে মোট ৩৯৯ জন নিহত হন।
২০০২
ওই বছরের মার্চে হিন্দুকুশে দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ঘটনায় প্রায় ১ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
১৯৯৮
আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুর্গম অঞ্চল টাখারে এক ভূমিকম্পে অন্তত ২ হাজার ৩০০ জন মারা যান। কোনো কোনো হিসাবে এই সংখ্যা ৪ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিন মাস পর একই অঞ্চলে ৬ দশমিক ৬ তীব্রতার আরেকটি ভূমিকম্পে ৪ হাজার ৭০০ জন নিহত হন।
১৯৯৭
আফগানিস্তান-ইরান সীমান্তে ৭ দশমিক ২ তীব্রতার একটি ভূমিকম্পে দুই দেশে দেড় হাজারের বেশি মারা যান। এ ঘটনায় ১০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়।
১৯৯১
হিন্দুকুশে এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়নে মোট ৮৪৮ জনের মৃত্যু হয়।