পরমাণু শক্তিধর দেশ কারা, কার কাছে কত অস্ত্র আছে

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে একবার হামলা চালানো হলে তাতে প্রায় ৫ লাখ ৮৩ হাজার ১৬০ জন মানুষ প্রাণ হারাবেন। একটি মাত্র পারমাণবিক অস্ত্র কতটা ধ্বংসাত্মক হতে পারে, তা উল্লেখ করতে গিয়ে আনুমানিক এই হিসাব দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস (আইসিএএন)।

ফেডারেশন অব অ্যাটোমিক সায়েন্টিস্ট-এর ‘স্ট্যাটাস অব দ্য ওয়ার্ল্ডস নিউক্লিয়ার ফোর্সেস-২০২৫’–এর হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের কাছে আনুমানিক ১২ হাজার ৩৩১টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। যদিও এই সংখ্যা স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর অস্ত্রভান্ডারে থাকা পারমাণবিক ওয়ারহেডের তুলনায় (প্রায় ৭০ হাজার) উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কম।

তবে বর্তমান অস্ত্রগুলো আরও বেশি শক্তিশালী এবং আগামী এক দশকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার আরও বড় করবে বলে আভাস দিয়েছে আইসিএএন। কোন দেশের হাতে কী পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র আছে তা দেখে নেওয়া যাক।

রাশিয়া

বিজয় দিবসে রাশিয়ার রেড স্কয়ারে সামরিক মহড়ায় পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনের সক্ষম একটি ইয়ারস আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে রাশিয়ার কাছে। দেশটির হাতে আনুমানিক ৫ হাজার ৮৮৯টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। রাশিয়ার কাছে ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও বিমানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ বা ছোড়ার যোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।

২০২২ সালে রাশিয়া তাদের পারমাণবিক বহর তৈরি করা ও সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ৯৬০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৪৯ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে বর্তমান কাজাখস্তানের সেমিপালাতিনস্ক পরীক্ষাকেন্দ্র এবং বর্তমান রাশিয়া ও ইউক্রেনজুড়ে ৭১৫টি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল।

রাশিয়া এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

টিপিএনডব্লিউ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এই চুক্তিতে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার, উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং হুমকির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। চুক্তিটি ২০১৭ সালে জাতিসংঘে গৃহীত হয় এবং ২০২১ সাল থেকে কার্যকর হয়। এই চুক্তির লক্ষ্য বিশ্বকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করা।

যুক্তরাষ্ট্র

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ বাহিনীর একটি ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে

রাশিয়ার পর পরমাণু অস্ত্রধারী দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে এই দেশটির হাতে আনুমানিক ৫ হাজার ২৪৪টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও বিমানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ বা ছোড়ার যোগ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের হাতে পারমাণবিক ওয়ারহেড সংযুক্ত প্রায় ৪০০টি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র-আইসিবিএম আছে। মন্টানা, নর্থ ডাকোটা ও ওয়াইয়োমিং অঙ্গরাজ্যের ভূগর্ভস্থ সাইলোগুলোতে ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাখা আছে।

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ৪ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে মোট ১ হাজার ৩০টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে। অধিকাংশ পরীক্ষা পরিচালিত হয়েছে নেভাদা ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে। এ ছাড়া আলাস্কা, কলোরাডো, মিসিসিপি, নিউ মেক্সিকো এবং আটলান্টিক মহাসাগরেও কিছু পরীক্ষা চালানো হয়েছে।

রাশিয়ার মতো যুক্তরাষ্ট্রও এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

চীন

জাতীয় দিবসে বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে সামরিক মহড়ার সময় একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়

চীনের হাতে আনুমানিক ৪১০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও বিমানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ বা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়া যায়। ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চীন ৪৫টি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

২০২২ সালে চীন পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ১ হাজার ১৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

চীন এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

ফ্রান্স

ফরাসি নৌবাহিনীর পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম আক্রমণ সাবমেরিন

ফ্রান্সের কাছে আনুমানিক ২৯০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা তারা সাবমেরিন থেকে বা বিমান থেকে উৎক্ষেপণ বা ছুড়তে পারে।

১৯৬০ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে ফ্রান্স আলজেরিয়া ও ফরাসি পলিনেশিয়ায় মোট ২১০টি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

২০২২ সালে ফ্রান্স পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ৫৬০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

ফ্রান্স এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

যুক্তরাজ্য

স্কটল্যান্ডে রয়্যাল নেভির একটি পারমাণবিক সাবমেরিন

যুক্তরাজ্যের কাছে আনুমানিক ২২৫টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যেগুলো স্কটল্যান্ড উপকূলে অবস্থিত নৌঘাঁটি থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়।

২০২১ সালে যুক্তরাজ্য তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, কয়েক দশকের মধ্যে যা ছিল প্রথমবার। অথচ পূর্ববর্তী পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১৮০–তে নামিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে দেশটি এখনো ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের (ওয়ারহেডে) সংখ্যা ২৬০টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে।

২০২২ সালে যুক্তরাজ্য পারমাণবিক অস্ত্রের বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ৬৮০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

ওপরের চার পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মতো যুক্তরাজ্যও এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

পাকিস্তান

জাতীয় দিবসে রাজধানী ইসলামাবাদে সামরিক মহড়ার সময় একটি দীর্ঘ পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করে পাকিস্তান

পাকিস্তানের কাছে আনুমানিক ১৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ বা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়া যায়। পাশাপাশি সাবমেরিন থেকে পারমাণবিক অস্ত্র উৎক্ষেপণের সক্ষমতার উন্নয়নেও কাজ করছে দেশটি। ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান দুবার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়।

২০২২ সালে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

পাকিস্তান এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

ভারত

ভারতের ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে

ভারতের কাছে আনুমানিক ১৬৪টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা তারা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে এবং সম্ভবত বিমান থেকে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম। পাশাপাশি, সাবমেরিন থেকেও এসব অস্ত্র উৎক্ষেপণের সক্ষমতা ভারতের থাকতে পারে। ভারত ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে মোট তিনবার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে।

২০২২ সালে ভারত পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ২৭০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

প্রতিবেশী প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের মতো ভারতও এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

ইসরায়েল

ইসরায়েলের নেভেগ মরুভূমিতে একটি পারমাণবিক চুল্লি

ইসরায়েলের কাছে আনুমানিক ৯০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও দেশটি তাদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কথা কখনো নিশ্চিত করেনি, আবার তা অস্বীকারও করেনি। এ কারণে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য অজানা। ধারণা করা হয়, ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন ও বিমান থেকে পারমাণবিক অস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম।

আরও ধারণা করা হয়, ১৯৭৯ সালে ইসরায়েল দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মিলে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ও অ্যান্টার্কটিকার মধ্যবর্তী মহাসাগরে একটি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। দেশটি ২০২২ সালে পারমাণবিক অস্ত্র বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ১২০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে বলেও ধারণা করা হয়।

ইসরায়েল এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

উত্তর কোরিয়া

২০২৩ সালের ১৩ জুলাই অজ্ঞাত একটি স্থান থেকে হোয়াসং–১৮ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে

উত্তর কোরিয়ার কাছে আনুমানিক ৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে। দেশটি ২০০৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ছয়টি পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে এবং একবিংশ শতকে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো একমাত্র দেশ।

২০২৩ সালে উত্তর কোরিয়ার আইনসভা দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতা অর্জনের নীতিকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে ভোট দেয়। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উন বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তি গঠনের নীতিকে রাষ্ট্রের মূল আইনের অংশ হিসেবে স্থায়ী করা হয়েছে, যেটি কেউই কোনো কিছু দিয়ে অমান্য করতে পারবে না।

২০২২ সালে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক শক্তি বহর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে আনুমানিক ৫৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে।

উত্তর কোরিয়া এখনো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষর করেনি বা অনুমোদন দেয়নি।

যেসব দেশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন আছে

বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে। যেমন ইতালিতে ৩৫টি, তুরস্কে ২০টি এবং বেলজিয়াম, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে ১৫টি করে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা আছে। এগুলোর সবই যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপন করা।

যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছে, এসব অস্ত্রের কার্যক্রমগত নিয়ন্ত্রণ তারা নিজেদের হাতে রেখেছে। ২০২৩ সালে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ঘোষণা করেন, তাঁর দেশে রাশিয়া স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপন করেছে।

তথ্যসূত্র: আইসিএএনের ওয়েবসাইট থেকে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের দিক নিয়ে জনমত গড়ে তোলা ও চুক্তির মাধ্যমে এর ব্যবহার বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় সংস্থাটি ২০১৭ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায়।