
চীনের সামরিক বাহিনী দেশটির সর্বশেষ নির্মিত তিনটি সংরক্ষণকেন্দ্রে ১০০-এর বেশি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মজুত রেখেছে বলে সন্দেহ করছে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। এক খসড়া প্রতিবেদনে এমনটা উল্লেখ করেছে তারা। পেন্টাগন মনে করে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেওয়ার কোনো ইচ্ছাই চীনের নেই।
বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপর আলোকপাত করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর।
শিকাগোভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সায়েন্টিস্টস বলেছে, চীন অন্য যেকোনো পরমাণু শক্তিধর দেশের তুলনায় সবচেয়ে দ্রুত তার অস্ত্রভান্ডারের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ করছে।
তবে বেইজিংয়ের দাবি, চীনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এসব প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।
গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণসংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা নিয়ে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
তবে রয়টার্স পেন্টাগনের যে খসড়া প্রতিবেদনটি দেখেছে, সেখানে বলা হয়েছে, বেইজিং এ ধরনের পদক্ষেপ বা বড় পরিসরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
পেন্টাগনের খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন সম্ভবত মঙ্গোলিয়া সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণকেন্দ্রগুলোতে ১০০টির বেশি সলিড-ফুয়েল ডিএফ-৩১ আইসিবিএম স্থাপন করেছে। আগেই পেন্টাগন এসব কেন্দ্রের অস্তিত্বের কথা প্রকাশ করেছিল। তবে পেন্টাগনের প্রতিবেদনে ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস বলেছে, চীন প্রতিরক্ষামূলকভাবে পারমাণবিক কৌশল বজায় রেখেছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যূনতম যে পারমাণবিক শক্তি দরকার, তা বজায় রাখছে এবং পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি মেনে চলছে।
খসড়া প্রতিবেদনে নতুন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য উল্লেখ করা হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, কংগ্রেসে পাঠানোর আগে প্রতিবেদনে পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চীনের পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যা ৬০০-এর নিচে ছিল। এতে বোঝা গিয়েছিল, পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় উৎপাদনের গতি ধীর ছিল। তবে চীনের পারমাণবিক বিস্তার চলমান আছে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যা এক হাজারে পৌঁছাতে পারে।
চীনের দাবি, তারা আত্মরক্ষার কৌশল অনুসরণ করে এবং কাউকে আগে আঘাত না করার নীতি মেনে চলে।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনে চীনের সামরিক প্রস্তুতির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, চীন আশা করছে, তারা ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এবং জিততে সক্ষম হবে।