Thank you for trying Sticky AMP!!

ধ্বংসস্তূপের নিচে মা ও তিন শিশুর ১৮ ঘণ্টা

ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মা ও তিন শিশুকে উদ্ধার করা হয়। তুরস্ক, ৩১ অক্টোবর

তুরস্কে ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১৮ ঘণ্টা আটকে ছিলেন এক মা ও তাঁর তিন শিশু সন্তান। টানা উদ্ধারকাজ চালিয়ে শনিবার তাদের উদ্ধার করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই নারীর চতুর্থ সন্তানকে উদ্ধারে কাজ করছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে।

তুরস্ক ও গ্রিসে শুক্রবার ওই ভূমিকম্প আঘাত হানে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলেছে,  ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। তবে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এএফএডি) বলেছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৬।

ইউএসজিএস বলেছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল গ্রিসের সামোস দ্বীপের কারলোভাসি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে এজিয়ান সাগরে। ইস্তাম্বুল ও এথেন্সেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তুরস্কের উপকূলীয় ইজমির প্রদেশে।

তুরস্ক ও গ্রিসের কর্তৃপক্ষ বলেছে, শুক্রবারের ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৭ জন হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কেই মারা গেছেন ২৫ জন। আর গ্রিসের সামোস দ্বীপে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। সামোসের ওই দুই কিশোর ও কিশোরী দেয়াল চাপা পড়ে মারা গেছে। ভূমিকম্পে তুরস্কের ইজমির প্রদেশে অন্তত ২০টি ভবন ধসে পড়েছে। আশপাশের আরও কয়েকটি প্রদেশেও কিছু ভবন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

তুরস্কের দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে আট শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। শুক্রবারের ওই ভূমিকম্পের পর শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তুরস্কের ইজমির এলাকায় ৫২০টি পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, এ পর্যন্ত ধসে পড়া আটটি ভবনের ধ্বংসস্তূপে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে।

ভূমিকম্পের পরপরই শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। তুরস্কের পরিবেশমন্ত্রী মুরাত কুরুম বলেছেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা যায়, উদ্ধারকর্মীরা একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক মা ও তাঁর শিশু সন্তানকে বের করে আনছেন।

তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ওই নারীর আরও এক শিশু আটকা পড়ে আছে। তাকেও উদ্ধারে কাজ করছিলেন উদ্ধারকর্মীরা।

ইজমিরের এক বাসিন্দা বলেছেন, ভূমিকম্পে তাঁদের ভবনও ধসে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন তাঁর মা-বাবা। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি কোনো খবরই পাচ্ছি না।’

এদিকে ভূমিকম্পের পর টেলিফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কাইরিয়াকস মিৎসোতাকিস। তাঁরা পরস্পরের শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। দুই নেতাই টুইটারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলের ওপর অধিকার নিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে বিবাদ রয়েছে।