ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি

ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আশা ছাড়তে প্রস্তুত ইউক্রেন: জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে তাঁর দেশ ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বার্লিনে গতকাল রোববার মার্কিন দূত এবং ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।

এমন এক সময় এই বৈঠক হলো, যখন একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছতে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার ইউক্রেন ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিতে গতকাল বার্লিনে পৌঁছান।

বৈঠকের আগে জেলেনস্কি বলেন, ন্যাটো সদস্যপদের দাবি থেকে সরে আসা কিয়েভের পক্ষ থেকে একটি ছাড়। ভবিষ্যতে রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে ন্যাটো সদস্যপদকেই এত দিন সবচেয়ে শক্তিশালী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। এর বদলে এখন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় অংশীদার ও অন্যান্য মিত্র দেশ চাইলে ইউক্রেনকে আইনগতভাবে বাধ্যবাধকতামূলক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে।

জেলেনস্কি একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শুরু থেকেই ইউক্রেনের ইচ্ছা ছিল ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার। এটিই প্রকৃত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু অংশীদার এটিকে সমর্থন করেনি।

ইউক্রেন যদি ন্যাটোর সদস্যপদ না পায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান ও অন্যান্য দেশকে পৃথকভাবে ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এই নিশ্চয়তাই ভবিষ্যতে রাশিয়ার যেকোনো ধরনের হামলা ঠেকাতে সহায়তা করবে।

এই প্রস্তাবকে জেলেনস্কি ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি ‘আপস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এসব নিরাপত্তার নিশ্চয়তা অবশ্যই আইনি বাধ্যবাধকতাসম্পন্ন হতে হবে।

জেলেনস্কির এই ইঙ্গিত ইউক্রেনের জন্য একটি বড় নীতিগত পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটি ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তবে মস্কো ন্যাটোর সম্প্রসারণকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে।

গতকালের বৈঠক শেষে স্টিভ উইটকফ বলেছেন, ‘আলোচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে।’

জেলেনস্কির উপদেষ্টা দিমিত্রো লিটভিন জানান, আলোচনা শেষ হলে আজ সোমবার প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে কথা বলবেন। খসড়া নথিগুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।

লিটভিন হোয়াটসঅ্যাপে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। সোমবার আবার আলোচনায় বসতে সবাই সম্মত হয়েছে।’