পোপ ফ্রান্সিস
পোপ ফ্রান্সিস

উপভোগ করতেন ট্যাঙ্গো নাচ, ফুটবল, ছিলেন বার বাউন্সার, কীভাবে হলেন পোপ

ফ্রান্সিসের পোপ পদে আরোহণ অনেকগুলো প্রথমের সূচনা করেছিল।

ফ্রান্সিস ছিলেন লাতিন আমেরিকা তথা দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ। ৭৪১ সালে সিরিয়ায় জন্ম নেওয়া গ্রেগরি তৃতীয়ের মৃত্যুর পর ইউরোপের বাইরে থেকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তিনি বিশপ অব রোম হন।

ফ্রান্সিস ছিলেন ক্যাথলিক চার্চের ধর্মীয় গোষ্ঠী যিশু সমাজভুক্ত প্রথম পোপ। ফ্রান্সিসের পূর্বসূরি পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট প্রায় ৬০০ বছরের মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা প্রথম পোপ ছিলেন। আর প্রথমবারের মতো প্রায় এক দশক ধরে ভ্যাটিকান গার্ডেনে পাশাপাশি বসবাস করেছেন দুজন পোপ—পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট ও পোপ ফ্রান্সিস।

অনেক ক্যাথলিক ধারণা করেছিলেন, নতুন পোপ হবেন অপেক্ষাকৃত তরুণ কেউ। কিন্তু আর্জেন্টিনার কার্ডিনাল বারগোগ্লিও যখন ২০১৩ সালে পোপ নির্বাচিত হন, তখন তাঁর বয়স ৭০ পার হয়ে গেছে অনেক আগে। তিনি নিজেকে একজন মধ্যপন্থী প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন: যৌন নীতিমালার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মতাদর্শের মাধ্যমে রক্ষণশীলদের আকৃষ্ট করেন। আবার সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে উদার অবস্থানের মাধ্যমে সংস্কারপন্থীদের মন জয় করেন।

আশা করা হয়েছিল, তাঁর এই ব্যতিক্রমী পটভূমি ভ্যাটিকানকে নতুন প্রাণ দেবে এবং চার্চের পবিত্র উদ্দেশ্যকে পুনরুজ্জীবিত করবে।

তবে ভ্যাটিকানের আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে ফ্রান্সিসের কিছু সংস্কার প্রচেষ্টা বাধার মুখে পড়েছিল এবং ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করা তাঁর পূর্বসূরি তখনো রক্ষণশীলদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন।

ভিন্ন হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ

নির্বাচিত হওয়ার মুহূর্ত থেকেই ফ্রান্সিস স্পষ্ট করে দেন, তিনি পোপ হিসেবে ভিন্নভাবে কাজ করবেন। তিনি তাঁর কার্ডিনালদের আনুষ্ঠানিকভাবে নয়, বরং অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং দাঁড়িয়ে থেকে অভ্যর্থনা জানান—পোপের আসনে বসে নয়।

২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ ফ্রান্সিস সাদামাটা সাদা পোশাকে সেন্ট পিটার্স মহাগির্জার বারান্দায় এসে দাঁড়ান। তাঁর আসল নাম ছিল হোর্হে মারিও বারগোগ্লিও। পোপ হওয়ার পর সেন্ট ফ্রান্সিস অব আসিসির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি ফ্রান্সিস নাম গ্রহণ করেন। সেন্ট ফ্রান্সিস অব আসিসি ছিলেন ত্রয়োদশ শতকের একজন ধর্ম প্রচারক ও পশুপ্রেমী।

পোপ ফ্রান্সিস জাঁকজমক আর আড়ম্বরের চেয়ে বিনয়কে প্রাধান্য দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি পোপের জন্য নির্ধারিত লিমুজিন গাড়ি ব্যবহারের চেয়ে অন্য কার্ডিনালদের সঙ্গে বাসে করে বাড়ি ফিরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ পছন্দ করতেন।

নতুন পোপ ১২০ কোটি ক্যাথলিক অনুসারীর জন্য একটি নৈতিক বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আহ, আমি গরিবদের জন্য একটি গরিব চার্চ চাই।’

ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হিসেবে তাঁর শেষ প্রকাশ্য কার্যক্রম ছিল ইস্টার সানডেতে সেন্ট পিটার্সের বারান্দায় উপস্থিত হয়ে হাজারো খ্রিষ্টধর্ম অনুসারীর উদ্দেশে হাত নাড়া। হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় ভোগার কয়েক সপ্তাহ পর তিনি এই কাজ করেছিলেন।

হোর্হে মারিও বারগোগ্লিও ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তাঁর মা–বাবা ফ্যাসিবাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে ইতালি ছেড়ে আর্জেন্টিনায় এসেছিলেন।

তরুণ বয়সে তিনি ট্যাঙ্গো নাচ উপভোগ করতেন এবং স্থানীয় ফুটবল ক্লাব সান লরেঞ্জোর একজন সমর্থক ছিলেন।

একবার গুরুতর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি বেঁচে ফেরেন। তবে এ কারণে তাঁর ফুসফুসের একটি অংশ কেটে ফেলতে হয়েছিল। ফলে সারা জীবনই তিনি সংক্রমণের ঝুঁকিতে ছিলেন।

বৃদ্ধ বয়সে পোপ ফ্রান্সিস ডান হাঁটুতে ব্যথায় ভুগতেন। আর এটিকে তিনি ‘শারীরিক অপমান’ হিসেবে বর্ণনা করতেন।

তরুণ বারগোগ্লিও নাইটক্লাবের বাউন্সার ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। পরে তিনি কেমিস্ট হিসেবে পড়াশোনা শেষ করেন।

একটি স্থানীয় কারখানায় বারগোগ্লিও এস্তের বালেস্ত্রিনোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, যিনি আর্জেন্টিনার সামরিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতেন।

পরে তিনি যিশু সমাজভুক্ত হন। দর্শনে পড়েন এবং সাহিত্য ও মনোবিজ্ঞান পড়ান। এক দশকের মধ্যে তিনি যাজক নিযুক্ত হন এবং দ্রুত উন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে আর্জেন্টিনার প্রাদেশিক প্রধান (প্রভিন্সিয়াল সুপিরিয়র) নিযুক্ত হন।

আছে অভিযোগও

অনেকেই মনে করেন, আর্জেন্টিনার বর্বর সামরিক শাসকদের বিরোধিতা করতে বারগোগ্লিও যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ‘ডার্টি ওয়ার’ নামে পরিচিত সময়ে যখন হাজার হাজার মানুষ নির্যাতনের শিকার হন, নিখোঁজ হন বা নিহত হন—তখন দুই যাজককে সামরিক বাহিনী অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বারগোগ্লিওর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।

ওই দুই যাজককে নির্যাতন করা হলেও পরে তাঁদের জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাঁরা তখন মাদকাচ্ছন্ন ও আধা-বস্ত্রহীন অবস্থায় ছিলেন।

বারগোগ্লিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ওই দুই যাজকের দরিদ্র পাড়ায় কাজ করতে চার্চের অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিলেন বলে তিনি কর্তৃপক্ষকে জানাননি। যদি তা সত্য হয়, তাহলে সেটি তাঁদের শাসকশ্রেণির কাছে উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। তবে এই অভিযোগ তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, তিনি নীরবে তাঁদের মুক্তির জন্য কাজ করেছিলেন।

২০১৪ সালে শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে পোপ ফ্রান্সিস তৎকালীন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস (বাঁয়ে) এবং তাঁর ফিলিস্তিনি প্রতিপক্ষ মাহমুদ আব্বাসকে একত্রিত করেছিলেন

বারগোগ্লিও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে কেন মুখ খোলেননি, জানতে চাইলে তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘এটা খুব কঠিন ছিল। সত্যি বলতে, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর। এমন এক বিশৃঙ্খলার মধ্যে তিনি পড়েছিলেন, যা সবচেয়ে অভিজ্ঞ নেতাকেও কাবু করে দিত। তবে নিশ্চিতভাবেই তিনি অনেককে দেশ ছেড়ে পালাতে সহায়তা করেছিলেন।

বারগোগ্লিও যিশু সমাজের সতীর্থদের সঙ্গেও মতবিরোধে জড়িয়েছিলেন—যাঁরা বিশ্বাস করতেন, বারগোগ্লিও মুক্তির ধর্মতত্ত্বে (লিবারেশন থিওলজি) তেমন আগ্রহ দেখাননি। এটি ছিল খ্রিষ্টীয় চিন্তা ও মার্ক্সবাদী সমাজতত্ত্বের সমন্বয়, যা সামাজিক অবিচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করত। তার পরিবর্তে বারগোগ্লিও বেছে নেন কোমল ও তত্ত্বনির্ভর যাজকীয় সহায়তার পথ।

কখনো কখনো এই সম্পর্ক প্রায় বিচ্ছেদের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। ২০০৫ সালে যখন তিনি প্রথম পোপ হওয়ার চেষ্টা চালান, তখন অনেক যিশুসমাজের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলেন।

রক্ষণশীল মনোভাবের ধারক

চার্চের অনেক মতবাদের মধ্যে পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন একেবারে রক্ষণশীল।

তাঁর সহপাঠী ও সেমিনারিতে একসঙ্গে থাকা মনসিনিয়র ওসভালদো মুস্তোর ভাষ্যমতে, ‘নরহত্যা, মৃত্যুদণ্ড, গর্ভপাত, জীবনধারার অধিকার, মানবাধিকার এবং যাজকদের বিবাহবিহীন থাকার ব্যাপারে তিনি পোপ দ্বিতীয় জন পলের মতোই আপসহীন ছিলেন।’

পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন, চার্চে সব ধরনের যৌন পরিচয়ের মানুষদের স্বাগত জানানো উচিত। তবে সমকামী দম্পতিদের শিশু দত্তক নেওয়াকে তিনি শিশুদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে বিবেচনা করতেন।

এই পোপ সমকামী দম্পতিদের আইনি স্বীকৃতির পক্ষে নরম মনোভাব প্রকাশ করলেও তা ‘বিয়ে’ নামে স্বীকৃতি দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। তাঁর মতে, ‘এটি ঈশ্বরের পরিকল্পনাকে ধ্বংস করার চেষ্টা।’

২০১৩ সালে পোপ নির্বাচিত হওয়ার পরপরই ফ্রান্সিস রোমে এক গর্ভপাতবিরোধী মিছিলে অংশ নেন এবং গর্ভধারণের মুহূর্ত থেকেই অনাগত শিশুর অধিকার রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেন।

পোপ ফ্রান্সিস স্ত্রীরোগ চিকিৎসকদের বিবেকের কথা বিবেচনায় রেখে কাজ করার আহ্বান জানান এবং যখন আয়ারল্যান্ডে গর্ভপাত নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, তখন তিনি দেশটির জনগণকে ‘দুর্বলদের রক্ষা করার’ অনুরোধ জানান।

তিনি নারীদের যাজক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিরোধিতা করেন। উল্লেখ্য, পোপ দ্বিতীয় জন পল এই বিষয়ে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।

২০১৫ সালে ফিলিপাইনে এক অনুষ্ঠানে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ ‘সন্তানহীনতার মাধ্যমে পরিবার ধ্বংস করে দেয়।’ তাঁর দৃষ্টিতে, কেবল সন্তান না থাকাই ক্ষতিকর নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্তই সবচেয়ে বড় ক্ষতি।

শিশু নির্যাতন মোকাবিলা

ফ্রান্সিস পোপ থাকাকালে দুই দিক থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসেছে। একদিকে কেউ তাঁকে শিশু নির্যাতন মোকাবিলায় ব্যর্থ বলে অভিযুক্ত করেছে, অন্যদিকে রক্ষণশীল সমালোচকেরা মনে করতেন, তিনি ধর্মকে দুর্বল করে দিচ্ছেন। বিশেষ করে, তালাকপ্রাপ্ত এবং আবার বিবাহিত ক্যাথলিকদের কমিউনিয়নের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁদের চোখে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

রক্ষণশীলদের একটি বড় অংশ শিশু নির্যাতনের বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত করে বহুদিন ধরেই পোপের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আসছিল।

২০১৮ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে পোপের সাবেক প্রতিনিধি আর্চবিশপ কার্লো মারিয়া ভিগানো ১১ পৃষ্ঠার একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেন—যেটিকে একধরনের যুদ্ধ ঘোষণা বলেই মনে করা হয়। এতে তিনি সাবেক কার্ডিনাল টমাস ম্যাকারিকের আচরণ সম্পর্কে ভ্যাটিকানকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল বলে দাবি করেন।

অভিযোগ ছিল, ম্যাকারিক একজন ধারাবাহিক যৌন নির্যাতনকারী, যিনি প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু উভয়ের ওপর নির্যাতন করেছেন। পোপ ফ্রান্সিস তা জানার পরও তাঁকে ‘বিশ্বস্ত উপদেষ্টা’ বানিয়েছিলেন। ভিগানোর মতে, সমাধান একটাই: পোপ ফ্রান্সিসের পদত্যাগ করা।

এই বিতর্ক ক্যাথলিক চার্চকে এক বড় সংকটে ফেলে দেয়। শেষমেশ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভ্যাটিকানের তদন্তের পর ম্যাকারিককে যাজক পদ থেকে অপসারণ করা হয়।

২০১৫ সালে হাভানা সফরের সময় পোপ ফ্রান্সিস দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে দেখা করেন

কোভিড ও শান্তির বার্তা

কোভিড মহামারির সময় পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানে তাঁর সাপ্তাহিক জনসমাগম বাতিল করেন, যেন ভাইরাস ছড়াতে না পারে। ২০২২ সালে তিনি এক শতাব্দীর বেশি সময় পর কোনো জীবিত পোপ হিসেবে নিজের পূর্বসূরি পোপ বেনেডিক্টের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

তত দিনে ফ্রান্সিস নিজেও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিলেন। তবু তিনি শান্তি প্রচার এবং ধর্মীয় সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প থেকে সরে আসেননি।

২০২৩ সালে পোপ দক্ষিণ সুদানে সফরে যান এবং দেশটির নেতাদের কাছে শান্তির আবেদন জানান।

তিনি ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘অযৌক্তিক ও নিষ্ঠুর’ বলে আখ্যা দেন। যদিও রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন দেওয়ার মতো বক্তব্য দিয়ে তিনি অনেক ইউক্রেনীয়কে হতাশ করেন।

এক বছর পর তিনি ইন্দোনেশিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, সিঙ্গাপুরসহ চার দেশে এক ব্যতিক্রমধর্মী সফরে বের হন।

শেষ দিনগুলো ও উত্তরাধিকার

শেষ দিকে, পোপ ফান্সিসের স্বাস্থ্য আরও খারাপ হতে থাকে। ২০২৫ সালের মার্চে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

সেন্ট পিটার্সের সিংহাসনে বসেই পোপ ফ্রান্সিস চার্চে পরিবর্তন আনার সংকল্প করেছিলেন।

কেউ কেউ হয়তো আরও উদারপন্থী কোনো নেতাকে চাইতেন। তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সমালোচনা ছিল, যৌন নির্যাতন মোকাবিলায় তিনি যথেষ্ট কঠোর নন।

তবু তিনিই পরিবর্তন এনেছেন।

তিনি ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে ১৪০ জনের বেশি কার্ডিনাল নিয়োগ দিয়েছেন, যার ফলে তাঁর উত্তরসূরির জন্য তিনি আরও একটি বৈশ্বিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চার্চ রেখে গেছেন।

উদাহরণ স্থাপনের জন্য পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকানের ঐতিহ্যবাহী অ্যাপস্টলিক প্রাসাদে বসবাস না করে পাশে থাকা অতিথি ভবনে থাকতেন। তিনি মনে করতেন বিলাসিতা আত্মপ্রদর্শনের নামান্তর।