Thank you for trying Sticky AMP!!

মস্কোর উপকণ্ঠের ক্রোকাস সিটি হলে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২৪ মার্চ, ২০২৪ মস্কো

রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি ঠিকমতো কাজ করছে না

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধীদের ধরার ক্ষেত্রে নির্দয়ভাবে কার্যকর রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী মস্কোর উপকণ্ঠে হাজারো মানুষের ওপর নির্বিচার গুলি ঠেকাতে পারেনি। এতে রুশ গোয়েন্দাদের অগ্রাধিকার, তাদের শক্তিমত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির উত্তরসূরি হিসেবে এখন রাশিয়ায় কাজ করে ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)। তারা মূলত রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেনের পক্ষে নাশকতাকারীদের ধরা, ক্রেমলিনবিরোধী তৎপরতা দমন এবং শত্রুদেশগুলোর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপন তৎপরতা বানচালে ব্যস্ত থাকে।

Also Read: মস্কোয় হামলা: চার সন্দেহভাজনকে যেভাবে আদালতে হাজির করা হলো

সেটাই মস্কোয় হামলার দায় স্বীকার করা আইএস–কেপির মতো জঙ্গিগোষ্ঠীসহ অন্যান্য নিরাপত্তা হুমকি রুশ গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও পশ্চিমা নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ড্যানিয়েল হফম্যান বলেছেন, ‘আপনি একসঙ্গে সবকিছু করতে পারবেন না।’ মস্কোয় সিআইএর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা হফম্যান বলেন, ‘আপনি স্থানীয়দের ওপর চাপ বৃদ্ধি করেন এবং কখনো কখনো সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে আপনার যে তথ্য দরকার, তা আপনি না–ও পেতে পারেন। সে কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছে। সম্ভবত তারা ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাজনৈতিক বিরোধীদের সামলানো নিয়ে অতিরিক্ত ব্যস্ত। এতেই বিষয়টি তাদের কাছ থেকে ফসকে গেছে।’

Also Read: মস্কোয় হামলার জবাব কীভাবে দেবেন পুতিন

এফএসবি বলেছে, ক্রোকাস কনসার্ট হলে শুক্রবারের হামলা অনেক সতর্ক পরিকল্পনা করে করা হয়েছে এবং বন্দুকধারীরা খুব সাবধানতার সঙ্গে তাদের অস্ত্র লুকিয়েছে।

ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার বলেছেন, ইসলামপন্থী উগ্রবাদীরাই হামলা চালিয়েছে। তবে কে এ হামলার নির্দেশে দিয়েছে, তা বের করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এ ক্ষেত্রে ইউক্রেন নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

হামলায় কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছে ইউক্রেন।

Also Read: আমাদের যোদ্ধারা মস্কোয় হামলা চালিয়ে ফিরে এসেছে: আইএস

এ হামলার মধ্য দিয়ে রাশিয়ার গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার প্রমাণ হয়েছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমাদের বিশ্ব দেখিয়েছে, কোনো শহর, কোনো দেশ সন্ত্রাসবাদের হুমকি থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ নয়।’ রাশিয়াকে রক্ষায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে তৈরি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন মানুষজন। শনিবার মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে

তবে এরপরও রাশিয়ার জনগণের প্রতি দেশে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের দীর্ঘদিনের যে অঙ্গীকার, তা শুক্রবারের এ হামলার মধ্য দিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। ওই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৩৯ জনের মৃত্যু এবং ১৮০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এ হামলা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর অনেক বাসিন্দাকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

চলতি মাসেই আরও ছয় বছরের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া সাবেক কেজিবি কর্মকর্তা পুতিন অবশ্য এর আগেও এ ধরনের সংকট সামলে এসেছেন। রাশিয়ায় তাঁর ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কোনো হুমকিও এখন নেই।

Also Read: মস্কোয় হামলার নতুন ভিডিও প্রকাশ করল আইএস

পুতিনের এত দিনের আচরণ এবং শনিবারের বিবৃতির আলোকে বলা যায়, এ ঘটনায় তাঁর প্রতিক্রিয়া হবে ব্যাপক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে।

এ হামলায় এখন পর্যন্ত আটক ১১ জনের মধ্যে ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের আদালতেও হাজির করা হয়েছে। সেখানে একজনের এক কান কাটা দেখা গেছে। আরেকজনকে আদালতে হাজির করা হয় হুইলচেয়ারে। এ হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য রাশিয়ায় আবার মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন বেশ কয়েক আইনপ্রণেতা।

Also Read: আইএস–আতঙ্ক কি ফিরে আসছে

Also Read: মস্কোয় হামলার আসল পরিকল্পনাকারী কারা