
রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গতকাল শনিবার রাতভর এ হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এ সময় রাশিয়া থেকে ৫৯৫টি ড্রোন ও ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সেগুলোর মধ্যে ৫৬৮টি ড্রোন ও ৪৩টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে। হামলায় অন্তত চারজন নিহত ও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন।
১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এ হামলা চলেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ছিল কিয়েভ। হামলার সময় প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড নিজেদের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। বিপদের হুমকি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আকাশে অবস্থান করে দেশটির বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। আকাশে রুশ ড্রোন উড়ছিল। এ সময় আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। হামলার শিকার ভবনগুলো থেকে গতকাল রোববার সকালেও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। সকাল সোয়া নয়টা নাগাদ হামলার সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।
এই হামলার কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া। গতকাল দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনের বেসামরিক স্থাপনায় হামলার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মস্কো। যদিও এ সময়ে রুশ হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের প্রাণ গেছে এবং বহু আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মিত্রদের প্রতি জেলেনস্কির আহ্বান
রাশিয়ার এমন বড় পরিসরের হামলার কারণে ২০২৫ সাল জুড়েই ইউক্রেনের সীমিত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ওপর চাপ পড়ছে। শনিবার জেলেনস্কি বলেন, ইসরায়েল থেকে আনা অতিরিক্ত একটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী শরতে আরও দুটি এমন ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ইউক্রেনে পৌঁছাবে বলে আশা করছেন তিনি।
ইউক্রেনের আকাশসীমা রক্ষায় আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছে আরও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা চেয়ে আসছেন জেলেনস্কি ও তাঁর দেশের কর্মকর্তারা। তবে বর্তমানে বিভিন্ন দেশের কাছে সীমিত পরিমাণে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মজুত রয়েছে। আর রাশিয়ার হুমকির মুখে দেশগুলো নিজেদের সুরক্ষার জন্য আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলো ধরে রাখছে।
এ ছাড়া বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামেও পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করছে দেশটির জ্বালানি খাতের আয়। এই আয় বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জি-৭ ও জি-১০-এর পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে।