
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে আগামীকাল রোববার তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে চলমান আলোচনার মধ্যেই তিনি এ সফরের ঘোষণা দিলেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা–সংক্রান্ত আলাদা প্রস্তাবগুলো এ বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে বলে তিনি আশা করছেন।
তবে রাশিয়ার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়া যে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে, তার চেয়ে জেলেনস্কির পরিকল্পনাটির মৌলিক ভিন্নতা আছে।
বর্তমানে দোনেত্স্ক অঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং পার্শ্ববর্তী লুহানস্কের প্রায় ৯৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে মস্কো। এই দুটি অঞ্চল একসঙ্গে ‘দনবাস’ নামে পরিচিত।
ইউক্রেন শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছে। জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দনবাসের যে অংশ রাশিয়া দখল করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে একটি বেসামরিক ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গঠন করা সম্ভব হতে পারে।
গতকাল শুক্রবার জেলেনস্কি সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু যেন শতভাগ প্রস্তুত থাকে, তা নিশ্চিত করতে তাঁরা কাজ করছেন।
জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমরা একটি দিনও নষ্ট করছি না। অদূর ভবিষ্যতে আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের এক বৈঠকে সম্মত হয়েছি। নতুন বছরের আগে অনেক কিছুই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।’
তবে গতকাল মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এটিকে অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের হাতে কিছু নেই।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তাঁর (জেলেনস্কি) সঙ্গে ভালোভাবে এগোনো যাবে। (ভ্লাদিমির) পুতিনের সঙ্গেও ভালোভাবে সবকিছু হবে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শিগগিরই কথা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প পলিটিকোকে আরও বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামনের দিনগুলোতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
মস্কো বলছে, আলোচনার গতি ধীর হলেও ধারাবাহিক অগ্রগতি হচ্ছে।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে জেলেনস্কি বলেছেন রাশিয়াকেও একইভাবে সেনা সরাতে হবে। তা না হলে ইউক্রেন সেনা সরাবে না।
তবে এ নিয়ে রাশিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
এর মধ্যেই গতকাল রাতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি ছিল রাশিয়ার নতুন এক বিমান হামলা।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বলেছেন, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী হামলা প্রতিহত করছে। তিনি রাজধানীর বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়।